এ বছর এমন কী হল? IEDCR, জবাব চাই

১লা এপ্রিল, ২০২০:
ডা. রাজীবুল বারী
সহকারী অধ্যাপক, রেডিওলজি
পিএইচডি গবেষক, টোকিও ইউনিভার্সিটি

কোভিড-১৯ বাংলাদেশে কী পরিমাণ ছড়িয়েছে সেটি ধারণা করা এই মুহূর্তে কিছুটা কষ্টসাধ্য। তবে যেহেতু এটি শ্বাসযন্ত্রের প্রদাহ সম্পর্কিত একটি রোগ, সেহেতু বিগত বছরের পরিসংখ্যানের সাথে তুলনা করলে কিছুটা ধারণা হয়ত পাওয়া সম্ভব। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে প্রাপ্ত এসম্পর্কিত তথ্যাবলী থেকে ২০১৯ ও ২০২০ সালের এ আর আই (ARI = Acute Respiratory Infection) রোগীর সংখ্যা পর্যালোচনা করা যাক।

২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ARI রোগীর সংখ্যা ছিল ২৬,৬৪১ জন, যা ২০১৯ সালে ছিল ৭,৫২০ জন। অর্থাৎ ৩.৫ গুণ।

২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে ARI রোগীর সংখ্যা ছিল ২৪,৯৫০ জন, যা ২০১৯ সালে ছিল ৪,৪৬০ জন। অর্থাৎ এবছর প্রায় ৫.৬ গুণ বেশী।

একইভাবে, ২০২০ সালের মার্চ মাসে এসম্পর্কিত রোগীর সংখ্যা ছিল ১১৯৩০ জন, যা ২০১৯ সালে ছিল মাত্র ৮২০ জন। অর্থাৎ এবছর প্রায় ১৪.৫ গুণ।

অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধির হার যথাক্রমে, ৩.৫, ৫.৬ ও ১৪.৫ গুণ। শতকরা হিসাবে জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারিতে বৃদ্ধি ১৬০% এবং ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চে বৃদ্ধি ২৫৯% (জানুয়ারির তুলনায় ৪১৪%)।

তাহলে, গত বছরের সাথে এবছরের শ্বাসকষ্টের প্রদাহ সম্পর্কিত রোগীর এই তুলনামূলক চিত্র দেখলে বোঝা যাচ্ছে সংখ্যাটা কী পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে এই বৃদ্ধির কী কারণ হতে পারে? সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের আবহাওয়ার বড় কোন পরিবর্তন এসেছে কিনা? ইতোপূর্বে দেশে বড় কোন মহামারী হয়েছিলো কিনা? স্বাস্থ্য সেক্টরে শ্বাসযন্ত্রের রোগীর চিকিৎসা আগের চেয়ে অবনতি হয়েছে কিনা? যদি না হয়, তাহলে এত রোগী কেন বাড়লো? সাম্প্রতিক সময়ে IEDCR এর হটলাইনে অসংখ্য ফোনকল আসলেও কেন “পর্যাপ্ত কমিউনিটি ট্রান্সমিশন হয় নি” বলা হচ্ছে? IEDCR বাংলাদেশের রোগতত্ব ও এপিডেমিওলজি নিয়ে কাজ করা সর্বোচ্চ পর্যায়ের গবেষণা প্রতিষ্ঠান। এই রোগীগুলো যদি করোনা অর্থাৎ COVID-19 নাও হয়, তবুও এপিডেমিওলজিকাল ইস্যু নিয়ে গবেষণা করা ও দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত এই সংস্থা কি সেগুলো নজরে নেবে না? তারা তো শুধু করোনা-কেয়ার সেন্টার নয়। উন্নত বিশ্বে সর্বাধুনিক চিকিৎসা আর সুশিক্ষিত জনগণে সজাগ থাকার পরেও যেখানে শত শত রোগী মারা যাচ্ছে, হাজার হাজার রোগী নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে, সেখানে বাংলাদেশে কোন রকম প্রস্তুতি ডিসেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত নেয়া হয়েছে বলে আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় নি। এমনকি তারা শুরু থেকে বলেছেন, “আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুত।“

বর্তমানে করোনা চিকিৎসার অবস্থা যে কী সেই বিশদ আলোচনায় যাবো না। শুধু জানতে চাই, গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই রোগী বৃদ্ধির যথার্থ কারণ কী? গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি দেশের এই জরুরি সময়ে তাদের যথার্থ ভূমিকা পালন করতে পেরেছেন কিনা সেই বিচারের সময় হয়ত এখনো আসে নি। তবে, জনগণের জীবন রক্ষার্থে তাদের দায়িত্বশীল আচরণ এখন বাধ্যতামূলক পর্যায়ে পড়ে।

তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো

Platform

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯ প্রতিরোধঃ ডায়াবেটিস রোগীর করণীয়

Wed Apr 1 , 2020
১ এপ্রিল ২০২০: কোভিড-১৯ সংক্রমণ প্রতিরোধে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুরত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের এন্ড্রোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক, ডা. মোঃ সাইফুদ্দিন। ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের করণীয়ঃ – নিয়মিত প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধ নেওয়া। – নিয়মিত ব্লাড গ্লুকোজ পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধের ডোজ (Dose) ঠিক করে নেওয়া। – বাড়িতে এক […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo