এবার ভেঙ্গে পড়ল ছাত্রী নিবাসের ছাদের একাংশ, ঘটতে পারে বড় কোন দূর্ঘটনা

এক কন্যা,বাবা মার অনেক আদরের।তাও যখন সেই কন্যা তাদের স্বপ্নপূরণের পথে এক ধাপ এগিয়ে সাদা এপ্রন গায়ে চড়িয়ে হেটে চলে,তখন দুই জোড়া চোখ মুগ্ধ হয়ে ডাক্তার কন্যার স্বপ্ন বুনে।
আর সেই কন্যাদের জীবন যখন ঝুকির মুখে,তখন ঐ স্বাপ্নিক মানুষগুলা সন্তান হারাবার আতংকে ভাষা হারিয়ে ফেলে!
আজ শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজের পুরাতন হোস্টেল এর ৪৫০ ছাত্রী জীবন নিয়ে এমনই ঝুকির মুখে।কেউ বুঝতে পারছে না,আগামীকালের সূর্য দেখা হবে কিনা।প্রতিটা মুহুর্ত ভয়ানক আতংকে দিনাতিপাত করতে হচ্ছে। এতটা ভয়াবহ যে রুম,বারান্দা,বাথরুম কোথাও নিরাপদ নয়। কোথাও দেয়াল খসে পড়ছে তো কোথাও বাথরুম এর sewarage pipe ভেঙে পড়ছে।আবার কখনো দরজার উপর থেকে ইট খসে পড়ছে।
কে কখন ক্ষতিগ্রস্ত হবে তা কেউই বলতে পারছেনা।কেউই হোস্টেল এ থাকতে চাচ্ছেনা।মৃত্যুভয় ত সবারি আছে। আর এ মৃত্যুভয়ের প্রধান বিভীষিকাময় কারণ নতুন হোস্টেল তৈরির উদ্যোগ।
১৬০ টি আসনের ব্যবস্থা বিশিষ্ট এ ভবন এ ২৫০ টি পিলার গাথা প্রয়োজন।ইতোমধ্যে ১৪০ টা হয়েছে।যার অসাধারণ ফলাফল নিচের ছবিগুলো।
আরো ১১০ বাকি।ভোর থেকে শুরু করে রাত পর্যন্ত অনবরত পাইলিং এরর কাজ চলে।ফলে পুরাতন ছাত্রীহল এর ভিত নড়ে গেছে।এমনেই ৫০ বছর আগের দুর্বল ভবন,তার উপর যদি টানা ভুমিকম্পের ন্যায় কাপুনি হয়,তবে কি এর অস্তিত্ব থাকে????
মাত্র ১৬০ টা সিটের জন্যে জেনেশুনে ৪৫০ ছাত্রীর জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মানে কি???যে কোন সময় যে কোন বোন আহত হতে পারে।
আজ ভোর ৪.৩০ টায় তেমনি এক বাথরুমের উপরের সব পাইপ বিকট শব্দে ভেঙে পড়েছে।আজ যদি ওখানে কেউ থাকত,তবে হয়ত কতৃপক্ষের কিছুই হতনা,শুধু এক সন্তানহারা পিতামাতার আহাজারিতে আমরা স্তব্ধ হয়ে যেতাম।ভাষাহীন হতাম।
আজ তাই সমাধানের আশায় সবাই গিয়েছিলাম আমদের পিতৃমাতৃ তুল্য শিক্ষকদের কাছে।টানা ৩ ঘন্টা দাড়িয়ে যা পাওয়া গেল তা সাময়িক।যেহেতু ফাইনাল প্রফের জন্যে কিছু আপুরা হোস্টেল শিফট করতে পারবেনা, তাই ১ মাস কাজ বন্ধ রাখতে বলা হল।তাতে লাভ কি?
১ মাস মৃত্যুভয় ত আর থামবেনা।
তার চেয়েও বড় ব্যাপার,শ্রমিকরা অনেকে বলেই দিয়েছে পুরাতন এই হোস্টেলের ভিত্তি নেই বললেই চলে।সামান্য ১.২ রিখটার মাত্রার স্কেলেও এই পুরাতন ভবন ধ্বসে পড়বে।এমতাবস্থায় কাজ পরবর্তী তে শুরু করাটা কি কোন বিবেকসম্পন্ন সিদ্ধান্ত?????
আর ভিত্তি এত দুর্বল জেনেও কেন নতুন বিল্ডিং তোলা হচ্ছে???
কেন ৪৫০ জন ছাত্রী কে মারার ব্যবস্থা করা হচ্ছে????
কেন স্যারদের মাথা ব্যথা নেই?????
ডাক্তার দের জীবনের ই যদি বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা না থাকে,তবে বাকি সাধারণ ত খেলার পুতুল!আজব এ বিশ্ব,আজব ব্যবস্থা!
আমরা সত্যিই চাইনা এমন নির্ঘুম ভয়ার্ত রাত,চাইনা বিকট শব্দে ভেঙে পড়ার ভয়,চাইনা কোন ক্ষয়ক্ষতি।
শুধু চাই নিরাপদ বাসস্থান, নিশ্চিন্তের দিনাতিপাত,এপ্রন গায়ে দেওয়া নিশ্চিন্ত ভোরের ক্লাস,নিরাপদে ডাক্তার হওয়ার আশ্বাস!
চাইনা অবহেলার ফলে আরেকটা রানা প্লাজার পুনরাবৃত্তি হোক,
চাইনা ৪৫০ ছাত্রীর পিতামাতার বুকচেরা আর্তনাদ আর অভিশাপে ভারী/নিস্তব্ধ হোক শেরে বাংলার আকাশ!!!!
10955340_719488378165122_4424695170645651115_n

লেখকঃ
Ritipurna Haimantika Dasgupta
ছবি
Nusrat Jahan Mousumee

ডক্টরস ডেস্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

শোন ডাক্তার, তুমি ছাড়া আমার বড় কোন শত্রু নাই... ডাঃ সাকলায়েনের নিয়মিত কলাম

Sun Feb 8 , 2015
০১। ক। রোগী আমার কোন প্রেসক্রিপশন নিয়ে তোমার কাছে গেলে তুমি কি আমার চিকিৎসার বদনাম কর? খ। নাকি, বলে দাও… দেখুন, ঐ ডাক্তার তো ঠিক চিকিৎসাই দিয়েছিলেন…কাজ যে কেন হল না… আচ্ছা, আমি দু একটা ঔষধ চেঞ্জ করে দিচ্ছি… দেখা যাক কাজ হয় কিনা… ০২। ক। রোগীরা যখন আমার প্রেসক্রিপশন […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo