লাইফ ইন লকডাউন, ডে টু হান্ড্রেড ফোর

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৬ ডিসেম্বর ২০২০, রবিবার

ডা. শুভদীপ চন্দ

ঐশ্বর্য শুধু থাকলেই হয় না, একে দেখানোতেই যত সব তৃপ্তি। চেহারা তো এক ধরনের ঐশ্বর্যই। তাই কোনো বিরাম নেই ছবি তোলায়। বলেছিলাম রাজেশ্বরীর কথা। লক্ষ্মীপূজা উপলক্ষে ছোট মেয়েটা শাড়ি পড়েছে। সাথে এক দুই অলঙ্কার। তার মায়ের হবে, বাবার তরফ থেকে পেয়েছে ‘সময়’। বিকেলের সোনা রোদ আকাশ থেকে ঈশ্বর দিয়েছেন। দেখে মনে হচ্ছিলো বাগানের ফুলগুলো থেকে লাবণ্য চুরি করে তার গালে মুখে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। আর শাড়ি, আগেও দেখেছি কিভাবে যেন পরিচিতকে অপরিচিত করে দেয়।

ছবিঃ প্রতীকী

এদিকে সঞ্চয়ের নেশা যেন আকাশকে পেয়ে বসেছে। মেঘের পরে মেঘ। শুনেছি ঢাকার দিকে বৃষ্টি হচ্ছে। এদিকে ছিটেফোঁটাও বৃষ্টি নেই। হালকা ঠান্ডা বাতাস। আলোচ্ছটা বিকীর্ণ না হলে আলোর আর কী আলাদা প্রকাশ? নীল আকাশে কিছু কিছু মেঘের জন্য প্রয়োজন। খুব সুন্দর ছিল আজ বিকেলের আকাশ। এদিকে কত গল্প জমে। লিখে শেষ হবে না। এক পঁচিশ ছাব্বিশ বছরের লোক এসেছে স্ত্রীর উপর রাগ করে দেয়ালে ঘুষি দিয়ে। এক্সরে বলছে ফ্রাকচার। সাথে আসা বউ ছলছল চোখে মাথা নিচু করে আছে। আমি বুঝি রাগ বা অভিমানের শুধু মানসিক রূপ থাকলেই হয় না, এক বাহ্যিক রূপও থাকা চাই। বলি রাগকে নিয়ন্ত্রণ করা শিখুন। যদিও জানি উনার রাগের চেয়ে অভিমান কাজ করেছে বেশি। এক সত্তর বছরের বুড়োর ইকো দেখে বললাম ‘চাচার যে হার্ট, আবার বিয়ে করতে পারবেন!’ পাশে দাঁড়ানো চাচী হাসি ঢাকতে মুখে আঁচল চাপা দিলো। বিস্মৃত অতীতের কোনো এক স্মৃতি মনে পড়ায় তারা উভয়েই লজ্জিত। মানুষের মুখ হাসে কম, চোখ হাসে বেশি। অথচ আমরা অন্যের মুখের দিকে চোখ কান পেতে থাকি।

ফ্রান্স ইস্যুতে পুরো দেশ দুই শিবিরে বিভক্ত। সবাই শুধু নিজের মত ব্যক্ত করছে, চাচ্ছে অন্যকে প্রভাবিত করতেও। এক যুগের পাগলামি আরেক যুগের স্থির ধীর জ্ঞান দিয়ে বিচার হয়। আড়াই হাজার বছর আগে যখন সক্রেটিসের মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল পাঁচশো সদস্যের এক জুরি বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। সেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে তাঁর মৃত্যুদণ্ড হয়। অথচ আজকের পৃথিবী এখন খুঁজে বেড়ায় কেন মরতে হয়েছিল এথেন্সের শ্রেষ্ঠ ব্যক্তিটিকে। কি ভুল কি শুদ্ধ এটি বর্তমান ঠিক করে দেয় না, ভবিষ্যৎ ঠিক করে। চিৎকার করি না। তবে আমি ভোট মত প্রকাশের পক্ষে দিচ্ছি। হোটেলে খেতে বসলাম, পাশেই এক পরিবার খাচ্ছিলো। ছোট ছেলেটা বলল ‘রুই মাছ খাব না, ভাল লাগে না।’ মাখিয়ে ফেলেছে এ তো আর বদলানো যাবে না। মা চেষ্টা করছে ছেলেকে বুঝাতে। বাপ বলছে ‘ধুর, একটু বেশি টাকা খরচ হলেও খাসী অর্ডার করলে হতো। ছেলেগুলো খেতে পারতো।’ এই যে অপরাধবোধ এ ছাড়া বিচারকের আসনে বসা চলে না। ভাগ্য ভালো আমরা সমাজকে বড় পরিবার বললেও পরিবারটি সমাজ নয়। নয়তো বাঁচা যেত না। স্তব্ধ হয়ে যেতে হয় কিছু খবরে। ঢাবির এক ছাত্র প্রেমের সম্পর্ক বিনষ্ট হওয়া মাত্রই ছবি ফাঁস করে দিয়েছে। সততা অন্তরে থাকুক বা না থাকুক, সততার ঠাঁট যে বজায় রাখতে জানে না তার অন্য আদালতে বিচার করা উচিত। সে ধর্ম সংক্রান্ত হোক বা প্রেম সংক্রান্ত। যেখানে শাস্তি আরও কঠিন কঠোর হবে।

কুমিল্লার ঘটনা দেখে একাউন্ট ডিএক্টিভেট করে দিব কিনা ভাবছি। কবে কোথায় লাইক পড়ে! চেষ্টা করি সবার মন যুগিয়ে চলতে। কিন্তু মনিবের মনে কী আর ভৃত্যের হাত থাকে? ‘আমরা সংখ্যালঘু’ এটাই পরিচয়। কখনো কখনো খুব ইচ্ছে হয় বিদেশ চলে যাই। সেখানেও সংখ্যালঘু, তবে অন্যের দেশে।

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার ২০১৯ এর শ্রেষ্ঠ গায়িকা নির্বাচিত হলেন মেডিকেল শিক্ষার্থী ঐশী

Sun Dec 6 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৬ ডিসেম্বর ২০২০, রবিবার  গত ৩ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) তথ্য মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে দেশের চলচ্চিত্র শিল্পে গৌরবোজ্জ্বল ও অসাধারণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে বিশিষ্ট শিল্পী, কলা- কুশলী, প্রতিষ্ঠান ও চলচ্চিত্রকে “জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০১৯” প্রদানের ঘোষণা করা হয়। এবারের “জাতীয় চলচ্চিত্র পুরষ্কার ২০১৯” এর “শ্রেষ্ঠ গায়িকা” নির্বাচিত হয়েছে মেডিকেল শিক্ষার্থী […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo