লাইফ ইন লকডাউন, ডে হান্ড্রেড নাইনটি ওয়ান

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৭ অক্টোবর ২০২০, শনিবার ডা.শুভদীপ চন্দ

চুরি করে পাওয়া ফল সে কাঁচা আম হোক বা প্রেমপত্র একটু বেশিই মিষ্টি। সে মিষ্টি স্বাদের জন্য কত ঝগড়া বিবাদ তুলকালাম হিসেব নেই।
ইমার্জেন্সিতে এক মহিলা আসলো স্বামী প্রবাসী। তাকে তার দেবররা মেরেছে। কিল ঘুষি চুলে টান। তিনি কাঁদছেন, তার চৌদ্দমাস বয়সী বাচ্চা কাঁদছে আরো বেশি। মাকে সামলাবো না বাচ্চা সামলাবো! বললো একটু ”কড়া” করে লিখে দিতে। কড়া না পেলে ইনজুরি নোট কড়া লিখবো কী করে। এটা পাবলিক বুঝে না। আমরা অনেক সময় বিরক্ত হই পারিবারিক নির্যাতন, বধূ নির্যাতন, শিশু নির্যাতনে। কিন্তু কিছু করার নেই।

ছবিঃ প্রতীকি

অল্প এক দুইজনে সব সমস্যা। আসলে যখন মানুষ বুঝতে পারে মহাবিশ্বের কেন্দ্রে, সে তখন থেকে স্বেচ্ছাচারী হয়ে উঠে। সমাজ, পরকাল, ভাল সার্টিফিকেট তার কাছে মূল্যহীন হয়ে যায়। আগে ভাবা হতো মহাবিশ্বের কেন্দ্রে পৃথিবী স্থির। সূর্য সহ সব গ্রহ নক্ষত্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। কোপার্নিকাস প্রথম বললেন পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রে নয়, পৃথিবী স্থিরও নয়। ১৫৪৩ সালে তার এ বই যেদিন প্রকাশিত হয় সেদিন তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। পৃথিবী হারায় বিশেষ গ্রহের মর্যাদা। মহাবিশ্ব হারায় কেন্দ্র সম্পর্কিত ধারণা। ফলশ্রুতিতে অনেক মানুষ তার দখল নিয়ে নেয়। ভাবতে থাকে তাকে কেন্দ্র করেই বিশ্বজগৎ ঘুরছে। এখানে সবাই তার ইচ্ছেকে কুর্নিশ করবে।

বিয়ের পর প্রেম করলে ‘পরকীয়া’, বিয়ের আগে প্রেম করলে ‘এফেয়ার’! এর জন্য পরকীয়া তত্ত্বই আমার কাছে স্পষ্ট নয়। বিয়ে এক জিনিস প্রেম অন্য জিনিস। পরকীয়া এফেয়ার সব সত্য, বিয়ে- টাই বরং মিথ্যা। চুরি করে এসেছে। চুরির আগে এসেছে অভাববোধ। এখন এ অভাব সৃষ্টি হলো কিভাবে? আশা ও প্রাপ্তির বৈষম্য থেকে। অর্থাৎ আশা হচ্ছে সকল নষ্টের মূল। কিন্তু আশা নেই তো জীবনও নেই। যাইহোক এখন রোগী অনেক বেড়েছে। মানুষের হাসপাতাল ভীতি অনেকটা কেটে গেছে। নতুন জরিপ বলছে ঢাকার ৪৫% মানুষ করোনা পজিটিভ। এতো অল্প লোকে স্টাডি হয় না। এরকম ভয়ঙ্কর তথ্যের এক স্টাডি এতো অল্পলোকের ডাটা দিয়ে করে কিভাবে প্রকাশ করলো বুঝলাম না। ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো করোনা পজিটিভ হয়েছেন। করোনা ধনী- দরিদ্র, ফিট- আনফিট বৈষম্য ঘুচিয়ে দিয়েছে। ভারতে নতুন কেস কমছে। ভারতের ৪৭% মৃত্যু ৬০ বছরের নিচে। দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র ভারতের ডাটাগুলো বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। আইএমএফ ভবিষ্যদ্বানী অনুযায়ী কোভিডের জন্য বাংলাদেশের পার কেপিটা জিডিপি ভারতের চেয়ে বেশি হবে। কোভিড ইমিউনিটি পাঁচ থেকে সাত মাস সাপোর্ট দেয়- নতুন স্টাডি বলছে। আরও দুইটি ভ্যাক্সিন তৃতীয় স্টেজে ব্যর্থ হয়েছে। শুরুতে যত সহজ ভাবা হচ্ছিলো তত সহজ নয় ভ্যাক্সিন আবিষ্কার। যদিও আজ রাশিয়া তাদের দ্বিতীয় ভ্যাক্সিনের অনুমোদন দিয়ে দিয়েছে।

আজ এক মণ্ডপের সামনে দাঁড়িয়ে পূজার প্রস্তুতি দেখছিলাম। আর এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো। হিন্দু, বৌদ্ধ ধর্ম ও আব্রাহামিক ধর্ম গুলোর মাঝে সূক্ষ্ম পার্থক্য আছে। একদিকে আছে চক্রাকার বৃত্ত। বিশ্বাস করে ঋতুর মতো জীবন চক্রাকার। জীবন মৃত্যু চক্রাকার। ভাল ও মন্দে বিভক্ত পৃথিবী। এখানে সব গল্প কোনো বৃহৎ কাহিনীর অংশবিশেষ। ঈশ্বর লীন হয়ে যান সৃষ্টিতে। অন্যদিকে আব্রাহামিক ধর্ম গুলো সরল রৈখিক। একটি শুরু আছে সাথে ‘শেষ বিচার’ আছে। পাপ ও পুণ্যে বিভক্ত পৃথিবী। স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝে সম্মানজনক দূরত্ব থাকে। পাশাপাশি এতো ভিন্নতা নিয়েও থাকা চলে যদি আলো থাকে। আমরা অন্ধকারকে ভয় পাই। কারণ আলোতে যা দেখা যায় শুধু তাই থাকে। অন্ধকারে যা দেখা যায় সে থাকে যা দেখা যায় না সেও থাকে। ভিন্নতা কে অজ্ঞানতা দিয়ে ঢেকে দেয়াই ভুল কাজ। চোখের সামনে রেখে দেয়াই উত্তম। ঘৃণা ভিন্নতা থেকে আসে না। আসে অন্ধকার থেকে। পূজা চলে আসছে। শপিং করা শুরুই হয় নি। কাউকে ধরে টরে শুরু করতে হবে। এটি এক বড় পেইন। যাও, দেখো, চয়েজ করো, দাম করো তারপর অপেক্ষা করো- যার জন্য কেনা তার পছন্দ হলো কিনা। এ বড় পেইন!

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

লাইফ ইন লকডাউন, ডে হান্ড্রেড নাইন্টি থ্রি

Sat Oct 17 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৭ অক্টোবর ২০২০, শনিবার      ডা. শুভদীপ চন্দ আমাদের পুরো হাসপাতাল জুড়ে কানাঘুষা চলছে নতুন স্যার নাকি বদলি হয়ে যাচ্ছেন। রটনা যদি সত্যি হয় আমরা এক বছরে চারজন বস পাবো। প্রগতির জন্য স্থিরতা খুব বেশি দরকার। আমি যতটুকু দেখেছি এ দেশে একজন অফিস প্রধান এতো সম্মান পান […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo