মুখ এবং চোয়ালের ত্রুটিজনিত রোগের চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে..

বর্তমানে ডেন্টিস্ট্রি পেশা সর্বোত্তম পেশা গুলোর একটি।
ডেন্টিস্ট্রিতে ক্যারিয়ার করতে চাইলে বা ডেন্টাল সার্জন হতে চাইলে আগে Bachelor of Dental Surgery(BDS) পাশ করতে হবে। আর এই পেশায় পোস্ট গ্র‍্যাজুয়েশন করতে চাইলে বিশেষায়িত কিছু বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রী MS বা FCPS করা যায়। তেমনই ডেন্টিস্ট্রির একটা শাখা হচ্ছে ওরাল এন্ড ম্যাক্সিলোফেসিয়াল সার্জারী।যারা এই ডিগ্রী লাভ করেন তারা হতে পারেন ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জন। মাথা, ঘাড়, মুখমন্ডল, চোয়ালের বিভিন্ন রোগ যেমন সিস্ট, টিউমার, ইনফেক্টশন, আঘাত, হাড় ভাঙ্গা, ত্রুটির চিকিৎসা করেন ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জন।

ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জারিতে সাফল্য নির্ভর করে সার্জনদের যোগ্যতা এবং দক্ষতার উপর। একজন ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জন মুখের টিস্যু ক্ষত এর চিকিৎসা থেকে শুরু করে মাড়ির রক্তক্ষরণ, মুখের যে কোন ইনফেকশন, টিউমার, ঠোটকাটা , তালু কাটা রোগীর চিকিৎসা,ডেন্টাল অফিসের যে কোন জরুরী চিকিৎসা, এমনকি মুখের ক্যান্সারের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বর্তমানে ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জারির ক্ষেত্রে প্রতিনিয়তই নতুন সব কৌশল এবং প্রযুক্তি যুক্ত হচ্ছে এবং এই ক্ষেত্রটি আরো প্রসারিত হচ্ছে।

আজ আমরা এমন একজন রোগীর সম্পর্কে জানবো যে বাংলাদেশের ওরাল এবং ম্যাক্সিলোফ্যাসিয়াল সার্জনদের অসামান্য ভুমিকায় আজ স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন।

ছবির টগবগে এই যুবকের বয়সটা ছিলো তারুণ্যের দীপ্তিতে বলীয়ান হওয়ার। কিন্তু জন্মগত চোয়ালের ত্রুটির জন্য ছেলেটা খুবই হীনমন্যতায় ভুগতো। জন্মগত ভাবেই তার নীচের চোয়ালটা ডানপাশে বাঁকানো ছিলো। ফলে মুখটা বাঁকা লাগতো। মেডিকেলের ভাষায় যাকে বলে লেফট কন্ডাইলার হাইপারপ্লাসিয়া। এতে বিপরীত দিকের চোয়াল বেঁকে যায়। চেহারা অসামঞ্জস্য হয়। মুখের এই বিকৃতির জন্য মানুষের সামনে যেতে খারাপ লাগতো ছেলেটার। এমন অবস্থায় সে ঢাকায় ডেন্টাল কলেজের এসিসটেন্ট প্রফেসর ডা. আবদুল্লাহ আল মাসুদ স্যারের কাছে চিকিৎসার জন্য আসে।(ছবি-১)

সাধারণত এই রোগের চিকিৎসা হচ্ছে দুই ধাপে। প্রথমে অর্থোডেন্টিক চিকিৎসা করে দাঁতের Allignment করা হয়। তারপর করা হয় অর্থোগন্যাথিক সার্জারি। এই রোগীর ক্ষেত্রে যে অপারেশন করা হয়েছে তার নাম Bilateral Sagital Ramus osteotomy। পুরো চিকিৎসার ক্ষেত্রে সময় লাগতে পারে ৬- ৯ মাস। এই রোগীর ক্ষেত্রে ৬ মাস লেগেছে। (ছবি-২)

সার্জারির পর মাত্র এক সপ্তাহের ছবি এটা। সময়ের সাথে ধীরে ধীরে ছেলেটির চেহারা স্বাভাবিক হয়ে যাবে। (ছবি – ৩)

ফিচার রাইটারঃআয়েশা মজুমদার
তথ্য ও ছবি : ডা. সাবরিনা ফরিদা চৌধুরী
বিশেষ কৃতজ্ঞতা : ডা. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ
এসিসটেন্ট প্রফেসর ,ঢাকা ডেন্টাল কলেজ ও হাসপাতাল

সোনালী সাহা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

এক্স রে এর সেকাল একাল..

Tue Jul 24 , 2018
১৮৯৫ সাল।যুগান্তকারী এক বছর।কারন ভুলক্রমে কিংবা দৈবক্রমে হলেও বিজ্ঞানী রন্টজেন আবিষ্কার করে ফেলেন এক্স-রে রশ্মি।সেই প্রথম এক্স-রেটা ছিলো একটা চাবির।আবিষ্কারের নেশায় বইটাতে কবে জানি পড়েছিলাম আজো মনে আছে।এই আবিষ্কারের কারনে ভাঙা হাড় কিংবা বুলেটের আঘাত খুব সহজেই বের করে ফেলতে পারলেন ডাক্তাররা।কিন্তু শতাব্দী পেরিয়ে গেলো, দাঁত আর টিউমারের এক্সরে প্রায় […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo