বেসিক সাবজেক্টে উচ্চশিক্ষা

আমেরিকায় বেসিক সায়েন্স পিএইচডি অতি মাত্রায় কম্পিটিটিভ। তার চেয়ে-ও বড় সমস্যা, আমেরিকায় পিএইচডি তে যারা আসে, বেশিরভাগ কিছু ল্যাব টেকনিক জানে। ভারত বা চীন এর মত দেশ ছাত্রদের এসব টেকনিক শেখায়। আমাদের মেডিক্যাল স্কুল গুলি না শেখানোতে আমরা কিছুটা পিছিয়ে পড়ি। আমাদের মেডিক্যাল কলেজ এর ছেলেমেয়েরা সরাসরি আমেরিকায় পিএইচডি আবেদন করলে (বেসিক সায়েন্সে) সুযোগ পাবার সম্ভাবনা খুব কম। এটা তাদের মেধার কারণে নয়, স্কিল এর কারণে। অন্যদিকে, আমেরিকায় মাস্টার্স লেভেল এ স্কলারশিপ খুব কম। টিউশন ভয়াবহ রকম বেশি। আপনি বেশ ধনীর সন্তান হলে সেলফ ফান্ড এ মাস্টার্স পড়তে পারেন। কানাডা তে মাস্টার্স ফান্ড পাওয়া যায়। কিন্তু সেখানে প্রতিযোগিতা আমেরিকান পিএইচডি এর চেয়ে কম না। এর চেয়ে বড় সমস্যা, কানাডিয়ানরা একটু গাধা ধরণের। তারা আলু আর মূলার মধ্যে পার্থক্য কম ধরতে পারে। বিদেশী স্টুডেন্ট নেবার ক্ষেত্রে তারা তাদের ট্রান্সক্রিপট অনেক ক্ষেত্রে যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারে না। (আমাকে এক কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি জিজ্ঞেস করছিল তোমার ট্রান্সক্রিপট এত ছোট কেন) । আমেরিকা ট্রান্সক্রিপট মূল্যায়নে WES এর সাহায্য নেয়। কানাডা তা- ও নিতে চায় না। ফলে স্কলারশিপ সহ এই দেশ গুলিতে সরাসরি পড়তে আসা মেডিক্যাল স্টুডেন্ট দের জন্য একটু কঠিন।
আমেরিকা মেধা পাচারের ব্যাবসা করে মূলতঃ সায়েন্সে সবাইকে টপকে যায়। জার্মানির মত দেশগুলি একটু পরে হলেও বুঝেছে, আমেরিকার মত দেশের সাথে প্রতিযোগিতায় টিকতে হলে তাদের মেধা লাগবে। মেধাবী মানুষ অপ্রচলিত জার্মান ভাষা শিখবেনা। জার্মানির অনেক ইউনিভার্সিটি এখন ইংরেজি ভাষায় পড়ার ব্যাবস্থা করেছে। http://www.uni-assist.de/uni-assist-members.html এ জার্মানির ইউনিভার্সিটি গুলির লিস্ট আছে, যেখান থেকে জানা যাবে, কোন ইউনিভার্সিটি ইংরেজিতে পড়ায়। জার্মানির খুব বড় একটা সুবিধা আছে। তাদের ইউনিভার্সিটি গুলির টিউশন অনেক ক্ষেত্রে খুব কম। কিছু ক্ষেত্রে শূন্য। এটা বড় সুবিধা বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে, যাদের (মেডিক্যাল কলেজের প্রায় সব ছাত্র) ল্যাব এক্সপিরিয়েন্স কম/নেই, তাদের ক্ষেত্রে এরকম বিনি পয়সার দেশে মাস্টার্স করে পরে পিএইচডি এর জন্য আমেরিকায় প্রতিযোগিতা করা একটা পদ্ধতি হতে পারে। একটা উদাহরণ দেই, আমি নিজে Norwegian Institute of Science and Technology তে সুযোগ পেয়েছিলাম। (যাইনি দুটো কারণে, আমাকে ১৩ লক্ষ টাকা ব্যাঙ্কে রাখতে হত থাকা খাওয়ার খরচ হিসেবে। আর আমার USMLE দেয়া, নন ইংলিশ স্পিকিং কান্ট্রি-তে যেতে আমার আগ্রহ কম ছিল।) এখন যে আজকে এমবিবিএস পাস করল, তার জন্য এগুলো ভাল অপশন হতে পারে। বেসিক সায়েন্স এর ABC এসব জায়গায় শিখে পিএইচডি আমেরিকায় করা; রেডিমেড জিনিস আমেরিকানরা খুব খায়। তাতে মাস্টার্স এর টিউশন দিতে হল না (আমেরিকায় এর পরিমাণ ৫০ হাজার ডলার) । Norwegian Institute of Science and Technology থেকে গত বছর মেডিসিনে নোবেল পেয়েছে। সুতরাং, মান কিন্তু ভাল। খোঁজ নিয়ে জেনেছিলাম, নরওয়েতে কাজ করে থাকা খাওয়ার খরচ মেটানো সহজেই সম্ভব (এ বিষয় আমার খুব ভাল জানা নয়)। তার মানে দাঁড়াচ্ছে কেউ যদি এসব প্রতিষ্ঠানে যায়, সে নিজেকে দক্ষ করে তুলতে পারে মোটামুটি কম বা শূন্য খরচে। http://www.mastersportal.eu/ এ ধরণের তথ্য পাওয়া যায়। Germany, Belgium, Finnland, Norway, France এসব জায়গায় ছড়ানো- ছিটানো কিছু সুযোগ এর খবর।
আমার শিক্ষক জিয়াউদ্দিন আহমেদ বলতেন, উপায় নেই কথাটা বলবেনা। আমার একটা পরামর্শ হল, উপায় বের করার ক্ষেত্রে খুব খোলা মন নিয়ে কাজ করা। ইউরোপের অর্থনীতি অনেক ছোট। সুযোগ অনেক কম। তবে, প্রতিযোগিতা তার চেয়ে-ও কম হওয়াতে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজেকে তৈরি করে আরও বড় ক্ষেত্রে যাওয়া যেতে পারে।

উল্লেখ্য এটা শুধুমাত্র বেসিক সায়েন্স পাগল বোকা লোকদের জন্য। ক্লিনিক্যাল বা পাবলিক হেলথ এর লোকজনের জন্য নয়!

www.uni-assist.de/uni-assist-members.html

মূল লেখা:মুহাম্মদ তাইফুর

আসিফ মজুমদার

Next Post

কর্মস্থলে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে টেলিফোনে মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শন

Fri Jul 10 , 2015
রাজধানীসহ সারাদেশের সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে টেলিফোনে মনিটরিং ও সরেজমিন পরিদর্শন বাধ্যতামূলক করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা এখন থেকে আবশ্যিকভাবে ল্যান্ডফোনে প্রতিমাসে দুইবার দায়িত্বপ্রাপ্ত হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসকের উপস্থিতি পরিবীক্ষণ করবেন। এছাড়াও প্রতি দুই মাসে একবার সেখানে সরেজমিন পরিদর্শন ও […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo