বাংলাদেশী রোগী না থাকায় বিপাকে ভারতের হসপিটালগুলো!

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, শনিবার। ১৮ এপ্রিল, ২০২০

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ২ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে কয়েকদিন আগেই। পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে।

বিশ্বব্যাপী চলমান করোনা মহামারীতে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকদেশে চলছে অবরুদ্ধ অবস্থা। বাংলাদেশী রোগীর অভাবে কলকাতার দক্ষিণে মুকুন্দপুরের বিভিন্ন হাসপাতাল সংকটাপন্ন অবস্থায় আছে। হাসপাতালকে ঘিরে অন্যান্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও স্থবির হয়ে পড়েছে। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে লকডাউন কার্যকর করায় এ অবস্থা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, হাসপাতালগুলোতে বর্তমানে শূন্যতা বিরাজ করছে। এর আশপাশে গড়ে উঠা হোটেল, গেস্ট হাউস, ভাতের হোটেল, মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, ওষুধের দোকানগুলোও একদম ফাঁকা।

মুকুন্দপুরে অবস্থিত সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের এক কার্ডিওলজিস্ট বলেন, “এই হাসপাতালের খ্যাতি আছে হৃদযন্ত্রের চিকিৎসার জন্য। এখানকার ৫০ শতাংশ রোগীই আসে বাংলাদেশ থেকে। বাংলাদেশিদের জন্য হাসপাতালে বিশেষ প্যাকেজও আছে। কিন্তু লকডাউনের কারণে আসতে পারছেন না বাংলাদেশের মানুষ। অন্যান্য সময় হাসপাতালের ওপিডিতে মানুষের ভিড়ে হাঁটা যায় না। কিন্তু বর্তমান চিত্র পুরো উল্টো।”

হাসপাতালের বাইরে এক গেস্ট হাউজের মালিক বলেন, “এখানে একজন রোগী আসা মানে তার সঙ্গে আরো দুই তিন জন আসা। আমার গেস্ট হাউজ কোনো সময় খালি থাকতো না। এখন একদম শূন্য। লকডাউনের কারণে বাংলাদেশ থেকে কেউ আসতে পারছে না। গেস্টহাউজ ফাঁকা থাকায় গুনতে হচ্ছে লোকসান।”

কলকাতা ছাড়াও ভারতের অন্যান্য প্রান্তে থাকা হাসপাতালগুলোতেও প্রায় একই অবস্থা বিরাজ করছে বলে জানা গেছে। যেমন- মাদ্রাজ ও ব্যাঙ্গালুরুর মতো জায়গাও রয়েছে বাংলাদেশি রোগীর পছন্দের তালিকায়। কিন্তু লকডাউন থাকায় সেখানকার হাসপাতালগুলোও কম-বেশি সংকটে পড়েছে।

প্রথম দফার লকডাউন শেষে ভারতে চলছে দ্বিতীয় দফার লকডাউন, যা চলবে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত। কিন্তু তারপরে যে সংকট কেটে যাবে তা কিন্তু নিশ্চিত করে বলা যায় না। বরং ভারতীয় গবেষকরা বলছেন, মে মাসে গিয়ে দেশটিতে করোনা সংক্রমণ তীব্র আকার ধারণ করবে।

বাংলাদেশ থেকে যেমন কলকাতায় কেউ যেতে পারছে না, তেমনি কলকাতায় আটকে পড়া অনেকেই বাংলাদেশে ফিরতে পারছে না। তেমনটিই জানালেন বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বদরুদ্দীন মিয়া।

তিনি বলেন, “আমার ফুফার হার্টের অপারেশন করাতে এখানে আসা। এখানে পৌঁছানোর দুই দিন পরই লকডাউনের ঘোষণা আসায় আটকে গেছি। লকডাউন উঠে গেলেই ফিরে যাবো। হিসাবের অনেক বাইরে গিয়ে খরচ করতে হচ্ছে আমাদের।”

এদিকে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্প্রতি জানিয়েছে, “চিকিৎসার জন্য যেসব মানুষ ভারতে গিয়ে আটকে আছেন, বিশেষ ব্যবস্থায় তাদের ফিরিয়ে আনা হবে।”

গতকাল (১৭ এপ্রিল) বেসরকারি বিমান সংস্থা ইউএস-বাংলা জানায়, “ভারতে আটকে পড়াদের আনতে তারা আটটি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।”

নিজস্ব প্রতিবেদক/ অংকন বনিক জয়

Publisher

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড ১৯: অসচেতনতা ও বাঙ্গালী সত্ত্বা

Sat Apr 18 , 2020
প্লাটফর্ম নিউজ, ১৮ এপ্রিল, ২০২০: অদৃশ্য এক শত্রুর সাথে লড়াই, যার সাথে লড়াই করার মত সামর্থ আমাদের নেই জানি! তাও কেন এত অসচেতনতা?? সব উত্তর খুঁজবো তার আগে একটু অতীতের সোনালি পাতা গুলো একটু চোখ বুলিয়ে নিই। আমরা বাঙ্গালীরা কি ছিলাম?কতটুকু সজাগ ছিলাম? ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি নীল চাষী বিদ্রোহ,নুরুলদীনের […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo