রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম মার্চ, ২০১৫ সেশন : Extended Induction Program

বাংলাদেশে চিকিৎসা বিজ্ঞানের উচ্চতর শিক্ষায় ‘রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম ‘ একটি নতুন ধারণা। এ প্রোগ্রাম সম্পর্কিত সম্যক ধারণা অনেক রেসিডেন্টদের মাঝেও নাই। গত ০৬/০৬/২০১৫ থেকে ১০/০৬/২০১৫ পর্যন্ত এরকম অনেক ভুল ধারণার অবসানের সুযোগ হল আমাদের রেসিডেন্সি মার্চ, ২০১৫ ব্যাচের!
হ্যা, বলছিলাম আমাদের ব্যাচের ‘Extended Induction Program’ এর কথা। এর সাথে আদিতে Exclusive শব্দ যোগ করলে খুব একটা ভুল হতনা! বাংলাদেশের চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার দিকপালদের সাথে এমন সরাসরি মতবিনিময়ের একাডেমিক সেশন কি খুব বেশি পাওয়া যায়!
আমার মতে প্রোগ্রামের মূল সেশনগুলো যতটা না ছিল একাডেমিক তার থেকেও ছিল রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম সম্পর্কে দিকনির্দেশনার প্রয়াস, ছিল বাংলাদেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ভাবনা।
চমক ছিল প্রোগ্রামের ভেন্যুতে- চাকচিক্যময় বিএসএমএমইউ এর নতুন অডিটোরিয়াম এ ইন্ডাকশন প্রোগ্রামে উপস্থিত হতে পারা আমরাই প্রথম ব্যাচ। এর সাথে স্যারদের একের পর এক চমৎকার চিত্তাকর্ষক, উৎসাহব্যঞ্জক বক্তব্য। সকল বিষয়ের রেসিডেন্টদের কিছু ‘Common Topic’ নিয়ে সাজানো ছিল বেশ কিছু বিষয়। বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক কামরুল হাসান খান স্যার এর ‘Doctor patient relationship ‘, প্রো ভিসি অধ্যাপক রুহুল আমিন মিয়া স্যার এর ‘Learning for doing’, প্রো ভিসি অধ্যাপক মো শহিদুল্লাহ শিকদার স্যার এর ‘Role of physician & professionalism’, অধ্যাপক মোহাম্মদ শহিদুল্লাহ স্যার এর ‘Medical ethics’, অধ্যাপক জুলফিকার রহমান খান স্যার এর ‘Good medical practice’, অধ্যাপক মো নজরুল ইসলাম স্যার এর ‘Patient safety’ এর মত বিষয় যেমন ছিল, তেমনি বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে অভিনব কিছু চিন্তার খোরাক ও চমক ছিল সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক প্রাণ গোপাল দত্ত স্যার এর ‘Universal health coverage ‘ শীর্ষক লেকচার এ, অভিনব পোর্টফলিও বিষয়ক ধারণা ছিল অধ্যাপক এম এ জলিল চৌধুরী স্যার এর ‘ Medical records’ লেকচার এ। ‘Infection control ‘ এর উপর চমৎকার এক লেকচারের মাধ্যমে সর্বশেষ উপস্থাপনা করেন অধ্যাপক শারমিন আহমেদ ম্যাডাম।
প্রায় সব সেশনেই প্রয়াস ছিল রেসিডেন্ট এবং প্রচলিত স্টুডেন্ট ধারণার পার্থক্য পরিষ্কার ভাবে ফুটিয়ে তোলার। সমাপনী অনুষ্ঠানে তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে। বিএসএমএমইউ এর ষষ্ঠ রেসিডেন্সি ব্যাচ চলছে।তারপরও এখনও এই প্রোগ্রাম এর বিভিন্ন modification চলছে, সেখানে নতুন চালু হওয়া বিভিন্ন মেডিকেল কলেজে কোর্স গুলোর অবস্থা কি হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়। তারই নানারকম ধারণা পাওয়া গেল বিভিন্ন ইন্সটিটিউট থেকে আসা বিভিন্ন বিষয়ের রেসিডেন্ট দের বক্তব্যে। প্রায় সব ইন্সটিটিউট ই বেশ কিছু অব্যবস্থাপনার মাঝে রেসিডেন্সি প্রোগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকায় আছেন সেখানকার রেসিডেন্টরা। এর মাঝেও ঢাকা মেডিকেলের নিউরোসার্জারি বিভাগের প্রশংসা ফুটে উঠেছে তাদের রেসিডেন্ট দের বক্তব্যে। প্রো ভিসি অধ্যাপক রুহুল আমিন মিয়া স্যারও রেসিডেন্ট দের বিভিন্ন বক্তব্যের অনবদ্য উত্তর দিয়েছেন, কিছু ভুল ধারনারও অবসান হয়েছে আমাদের। জানা গেল, অন্যান্য ইন্সটিটিউট গুলোতে কোর্সগুলো চালু হয়েছে তাদের নিজেদেরই আবেদনের ভিত্তিতে। সুতরাং তাদের রেসিডেন্টদের সকল দায়িত্ব নিজস্ব ইন্সটিটিউট কেই বহন করতে হবে। তারপরও যদি তারা মান নিয়ন্ত্রনে ব্যর্থ হয়, তবে বন্ধ হয়ে যেতে পারে পরবর্তি বছরগুলোতে। বিভিন্ন ইন্সটিটিউট এ স্যাররা যাবেন ও রেসিডেন্ট দের সাথে আলাদাভাবে মতবিনিময় করবেন – এমন বক্তব্যগুলো আন্তরিকতারই বহিঃপ্রকাশ ছিল। অধ্যাপক আহমেদ আবু সালেহ স্যার এর একটি বক্তব্য এখানে না বললেই না,যার মাঝে ছিল অনেক সমস্যার সমাধান, আর তা হল- সিনিয়র রেসিডেন্টরাই হল জুনিয়র রেসিডেন্টদের সকল মুশকিলে আসান। তারা যে সমস্যাগুলো উৎরিয়ে এসেছেন তার সমাধান যদি জুনিয়রদের দেয়ার চেষ্টা করেন তবেই অনেক সমস্যার অবসান হবে। বর্তমান রেসিডেন্টরাই হবে আগামী দিনের রেসিডেন্টদের পাথেয় – সবার আশা সেটাই।
ভবিষ্যৎ ব্যাচগুলোর সম্মানী ভাতার ফান্ডের প্রাপ্যতা নিয়ে আশংকার কথাও উঠে এসেছে সমাপনী অনুষ্ঠানে। মোটামুটি এভাবেই সমাপ্ত হল ৫ দিন ব্যাপী রেসিডেন্সি মার্চ, ২০১৫ ব্যাচের ‘Extended Induction Program ‘. অডিটোরিয়াম এর দরজা দিয়ে বেরুনোর সময় শুধু একটা কথাই মনে হচ্ছিল, যেন ‘শেষ হইয়াও হইল না শেষ ‘!
বিদ্র: যারা উপস্থিত হতে পারেননি প্রোগ্রামে তারা দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে পারবেন! স্যারদের অসাধারণ বক্তব্য না শুনতে পারলেও পেয়ে যাবেন লেকচারগুলোর হ্যান্ড আউট বিএসএমএমইউ এর ওয়েবসাইট এ।

সংবাদ দাতা: ডা. শাহরিয়ার রিজভী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে বিএসএমএমইউ!!!!!!

Sat Jun 13 , 2015
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ দিন কয়েকের মধ্যেই তারা তাদের চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে। খুব শিগগির এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে। দুই-এক দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। মতামত সাপেক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসকদের বাইরের হাসপাতাল বা ক্লিনিকে গিয়ে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করা নিষিদ্ধ করা হবে। গত সোমবার ‘বঙ্গবন্ধু […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo