রেসিডেন্সি এক্সাম স্ট্র‍্যাটেজি

যে কোন পরীক্ষায় সাফল্য প্রিপারেশনের উপর যেমন নির্ভর করে ঠিক তেমনি নির্ভর করে পরীক্ষার হলে সঠিকভাবে আউটপুট দেয়ার উপর৷ পরীক্ষার হলের কিছু টেকনিক্যাল বিষয় নিয়ে বলার চেষ্টা করছি৷

১। টাইম ক্যালকুলেশন:
মোট প্রশ্ন ২০০ টি, মোট স্টেম ১০০০ টি, মোট সময় ৩ ঘণ্টা। অর্থাৎ, ১০০০ টি বৃত্ত ভরাটের জন্য মোট সময় মাত্র ১৮০ মিনিট। তাই হিসেব করে সময় খরচ করাটা জরুরি।
২০ মিনিট হাতে রাখলে সময় থাকে ১৮০ – ২০= ১৬০ মিনিট। প্রতিটি প্রশ্নের জন্য গড়ে ৪৮ সেকেন্ড বরাদ্দ দেয়া যায়। প্রতিটি স্টেম এ প্রায় ১০ সেকেন্ড। এর মধ্যেই সিদ্ধান্ত নেয়া এবং বৃত্ত ভরাট করা!
সাধারণভাবে বলা যায়, প্রথম ঘণ্টায় ৭০, ২য় ঘণ্টায় ৭০ আর ৩য় ঘণ্টায় বাকি ৬০টি ভরাট করতে হবে৷
খুব বেশি তাড়াহুড়া করার কিছু নাই৷ আবার একটা প্রশ্নে বেশি সময় নষ্ট করারও উপায় নেই৷

২। সাথে রাখুন:
অ্যাডমিট কার্ড (কালার প্রিন্ট)
একটা এনালগ ঘড়ি
কমপক্ষে ৩টি বলপেন
কমপক্ষে ৫টি ভালো মানের 2B পেন্সিল
২টি ভালো মানের ইরেজার
শার্পনার

৩। এক্সামের কমপক্ষে ৪৫ মিনিট আগে হলে প্রবেশ করুন। এনভাইরনমেন্টের সাথে এডাপ্টেড হওয়ার ব্যাপার আছে। এক্সাম শুরুর আগে অবশ্যই ব্লাডার খালি করে নিবেন। নিজের সিটে বসে ডেস্ক/ টেবিলটা তে কোন প্রবলেম আছে কিনা খেয়াল করে নিন৷ কোন সমস্যা থাকলে আগেই সলভ করে নিন৷

৪। প্রশ্ন হাতে পাওয়ার আগে “র’ব্বি জিদনি ই’লমা” বা অন্য কোন দুআ পড়তে পারেন। অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও তাদের নিজ নিজ প্রভুকে স্মরণ করুন। এতে অস্থিরতা কমবে।

৫। প্রশ্নপত্র পাওয়ার সাথে সাথে সেখানে ২০০ টি প্রশ্ন আছে কিনা চেক করুন।

৬। উত্তরপত্রে সাধারণত ২টি পাতা মানে ৪টি পৃষ্ঠা থাকে। প্রথম আর শেষ পৃষ্ঠা কলম দিয়ে পূরণ করতে হয়। এটা খেয়াল রাখবেন৷ উপস্থিতি শিটে স্বাক্ষর করতে ভুলবেন না!

৭। ৫০০ মিলি বোতলে করে গ্লুকোজ শরবত নিবেন। এক ঘণ্টা পর পর খেয়ে নিবেন। সত্যি বলছি, এটা খুব কাজে দেয়। ব্রেইনের ফাস্ট অ্যাকটিভিটির জন্য এটা জরুরি।

৮। যেহেতু সময় কম, একটা উত্তরে ফিরে আসাটা কঠিন এবং রিস্কি। তাই মোটামুটি একবারেই সব দাগিয়ে আসার চেষ্টা করবেন। তবে কোন উত্তরে যদি অনেক কনফিউশন হয় এবং মনে হয় যে, পরে ভাবলে পারবেন তাহলে আপাতত ট্রু দাগিয়ে রাখবেন৷ আর প্রশ্নপত্রে একটু মার্ক করে রাখবেন যাতে পরে এসে ভাবতে পারেন।

৯। কোন উত্তর মোছার সময় খুব সাবধান। বেশি জোরাজুরি করতে গেলে কাগজ ছিড়ে যেতে পারে৷

১০। এক্সাম চলাকালীন সময়ে কারো সাথে কথা বলাটা বুদ্ধিমানের কাজ হবে না৷ এক্সামের পর কুশল বিনিময় করে নিতে পারেন৷

১১। সবগুলো উত্তর দাগানোর পর সম্ভব হলে একবার চেক করে নিন কোন স্টেম ভরাট করা বাকি আছে কি না৷

১২। এমনো হতে পারে শুরুতেই কঠিন প্রশ্ন পড়েছে। প্রথম ৪-৫ টা প্রশ্ন আপনি পারছেনই না। এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। ঠান্ডা মাথায় বৃত্ত ভরাট করুন। মনে রাখবেন, প্রশ্ন কঠিন হলে সেটা সবার জন্যই কঠিন৷

রেসিডেন্সি এক্সাম অনেকাংশেই নির্ভর করে উপস্থিত বুদ্ধিমত্তা এবং তড়িৎ সিদ্ধান্তের উপর৷ তাই, প্রিপারেশন যাই হোক না কেন ঠান্ডা মাথায় নিজের সবটুকু দেয়ার চেষ্টা করুন।

সবার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা।

ডা. ফারহান লিয়াকত অনিক
ডিএমসি কে-৬৭ (সেশন : ২০০৯-১০)
এমডি রেসিডেন্ট (কার্ডিওলজি), এন আই সি ভি ডি
৩৬ তম বিসিএস (স্বাস্থ্য)

প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটার:
সামিউন ফাতীহা
সেশন ২০১৬-১৭
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ, গাজীপুর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ডোনারিজম ও স্যারোগেসি

Fri Nov 9 , 2018
A child must born in the private darkness of fallopian tube after love making, not in the glory of “Petri Dish” of IVF lab. এটি রোমান ক্যাথলিকদের ভাষা। তারা কোন আর্টিফিশিয়াল জন্ম পদ্বতি গ্রহন করেন না। শুকরিয়া যে ইসলাম অন্তত: আর্টিফিশিয়াল জন্ম পদ্বতির অনুমোদন দেয়। ১৯৮০ সালের কায়রো কনফারেন্স, ১৯৮৩ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo