বৃহস্পতিবার, ০৮ মে, ২০২৫
দেশে থ্যালাসেমিয়া রোগ প্রতিরোধে স্কুল পর্যায়ে সচেতনেতা ছড়িয়ে দিতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। তারা বলছেন, থ্যালাসেমিয়া রোগীদের চিকিৎসার নতুন আশার আলো হলো রক্তের পাশাপাশি ওষুধ দিয়েও রোগীদের চিকিৎসাসেবা শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস উপলক্ষে আয়োজিত বর্ণাঢ্য র্যালি শেষে আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তারা।
অধ্যাপক ডা. মো. মুজিবুর রহমান হাওলাদার বলেন, থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে গণমানুষকে সচেতন করাসহ প্রতিরোধের পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে। এই রোগ প্রতিরোধে স্কুল পর্যায়ে সচেতনেতা ছড়িয়ে দিতে হবে। বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে রক্তরোগ সংক্রান্ত গবেষণাকে ত্বরান্বিত করা হয়েছে। বোনম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট (বিএমটি) সেন্টার চালুর কার্যক্রম অনেক দূর এগিয়েছে। ইতোমধ্যে এই বিষয়টি একনেকে পাশ হয়েছে। পূর্ণাঙ্গভাবে বিএমটি চালু হলে রক্তরোগ সংক্রান্ত অনেক রোগীর চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে হবে না।
অধ্যাপক ডা. নাহরীন আখতার বলেন, থ্যালাসেমিয়া একটি জেনেটিক ডিজিজ। এই রোগ প্রতিরোধে থ্যালাসেমিয়ার দুই বাহকের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করা প্রয়োজন। স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে থ্যালাসেমিয়ার বাহক চিহ্নিত করা সম্ভব। আবার গর্ভাবস্থায়ও অনাগত শিশুটি থ্যালাসেমিয়ার রোগী কিনা তা চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া যায়। সর্বোপরি যে সকল থ্যালাসেমিয়া রোগী রয়েছে তাদের সঠিক, উন্নত ও সহজ চিকিৎসাসেবাকে নিশ্চিত করতে হবে।
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানান, বাংলাদেশে ৬০ থেকে ৮০ হাজার থ্যালাসেমিয়ার রোগী রয়েছে। ৬ থেকে ১০ জন রোগী প্রতিবছর জন্ম নিচ্ছে। দেশে থ্যালাসেমিয়া বাহকের সংখ্যা দেড় থেকে দুই কোটি। থ্যালাসেমিয়া প্রতিরোধে দুই বাহকের মধ্যে বিবাহ বন্ধ করতে প্রয়োজনে সরকারকে আইন করতে হবে। তাহলে থ্যালাসেমিয়ার অভিশাপ থেকে জাতিকে মুক্তি দেওয়া সম্ভব। একজন থ্যালসেমিয়ার রোগী পারিবারিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে ঝুঁকিপূর্ণ। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যায়ের শিশু হেমাটোলজি ও অনকোলজি বিভাগের বহির্বিভাগে প্রতি মাসে প্রায় ৫ শত শিশু রোগীর চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে। আজকের দিবেসের বিশেষত্ব হলো বিএমইউতে থ্যালাসেমিয়া রোগীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ও সংশ্লিষ্ট সকল বিভাগ ঐক্যবদ্ধভাবে চিকিৎসাসেবা দিতে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
প্ল্যাটফর্ম/