লাইফ ইন লকডাউন, ডে টু হান্ড্রেড থ্রি

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৪ নভেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার 

ডা. শুভদীপ চন্দ

নিজেকে হারিয়ে যে প্রেম তার কোনো মূল্য নেই কারো কাছে। সে ব্যক্তি জীবনে, এমনকি রাজনীতিতেও। ছাদ নেই, পাশাপাশি থাকার মতো সমতা নেই, সম্মানের সাথে মরার মতো অর্থ নেই- এ নিয়ে দুশ্চিন্তা। লোকে তাকেই সন্দেহ করে তার কেন দুশ্চিন্তা! এ জীবনে কিছুদিন বাম রাজনীতি করেছিলাম। অন্যকে নিয়ে কেন ভাবছেন না- এ আবদার নিয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি। এখন বুঝি এক জীবন অতি অল্প সময় এক বিপ্লব উপস্থিত করার জন্য। সে সমাজে এবং নিজের জীবনে।

ছবিঃ প্রতীকী

লক্ষ্মী পূজার রাত্রি। সারা আকাশ ধূসর করে এক চাঁদ উঠেছে। চাঁদ দেখার জন্য কী কোনো সঙ্গীর প্রয়োজন হয়? একা চাঁদ একা মানুষের জন্য ওঠে। মা ফোন দেয়। লক্ষ্মীপূজার উপবাস করে উনি এখন অসুস্থ। কৃচ্ছসাধনের এ এক অদ্ভুত মোহ। ভয় যুক্তিবিদ্যা অসুস্থতা কিছুই তাকে আটকাতে জানে না। ঘুরে ঘুরে নাইট ডিউটি করছি। অভিমানী মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে মা। চৌদ্দ পনেরো বছরের মেয়ে, জন্মগত হার্টের ত্রুটি। এসেছে গলাব্যথা নিয়ে। বলেছি ‘গার্গল করুন’। ঝ্যান করে বলেছে- এটা কোনো চিকিৎসা হলো? তারপর গট গট করে বেরিয়ে গেল। প্রতি পদক্ষেপে অপমানের চেষ্টা। নিজস্ব গাড়ি করে এসেছে। গাড়িতে বসে মা মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। এমন পোড়া জায়গায় ডাক্তারকে চটিয়ে লাভ নেই। এসময় আর অন্যকোনো ডাক্তার পাওয়া যাবে না।

ডর্মিটরির সামনে দুই তিন ছেলে ছোকরা আড্ডা দিচ্ছে। এরা সব সিস্টারের ছেলেপেলে। এমনি কিছু বলে না। তবে বুঝি চোখের দৃষ্টি আর গলার স্বরে তাদের কিছু বলতে বাঁধবে না। কিছু যে বলছে না তা ইচ্ছে করছে না বলে। সিগারেটে এক দুই টান চাইলেই দেখিয়ে দিতে পারে! আমাদের দুই প্রজন্মের মধ্যে এটি এক পার্থক্য। আমরা আমাদের অনুশাসনে চলি। আমাদের বাবা মায়েরা ছিল উল্টো ধরনের। তারা খুব সহজে ইচ্ছেশক্তিকে পিষে চ্যাপ্টা করে ফেলতে জানতো। ওই রোগিনী মেয়ে বা এই ছেলেপেলে আমাদের প্রজন্মের। আমি তাদের মনমানসিকতা বুঝি। আজকাল প্রচুর কথা হয়। প্রচুর জীবন নদীর স্রোতের মতন এসে পাড়ে বাড়ি খায়। জানতে পারি বিয়েকে মানুষ এখন এক কারখানা হিসেবে নিচ্ছে। অবহেলায় কোনো জিনিস ফেলে রাখলেই কি বাতিল হয়ে যায়? শরীর কি কোনো জড় পদার্থ? মনের কী কোনো খাবার লাগে না? কারো কারো খামখেয়ালিতে কত ফুল দেবতার পায়ে বিসর্জিত হচ্ছে- তার দায় কোনো সংসার নেয় না। মানুষ বন্দী নিজের তৈরি কঠিন কঠোর নিয়মে। সব ওই বোকা চাঁদ আর ওই বোকা একা একা মানুষের গল্প। দুই চোখের ম্রিয়মাণ জ্যোতিতে চাঁদ অমন পাংশুটে। চার চোখ এক হলে ঔজ্জ্বল্য সব উপচে পড়তো।

আমি বলি সমাজ ভেঙ্গে দিতে। মুশকিল ওই দরিদ্রদের নিয়ে। দরিদ্রের ঘরে যেন লোভের সঞ্চার না হয় এ নিয়ে তারা বড্ড সতর্ক। এমনকি দরিদ্রতাও এক সময় অভ্যাস। সে ভীত গণ্ডীর বাইরের জগতকে নিয়ে। একজনের উপর করা অভিমান তারা বিশ্ব সংসারের গায়ে উঠিয়ে দিয়ে বসে থাকে। যা দেখার জন্য কেউ বসে নেই!

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: গত ২৪ ঘন্টায় দিনাজপুরে নতুন শনাক্ত ৩৩ জন

Mon Nov 23 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২৩ নভেম্বর ২০২০, সোমবার  গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২,৪১৯ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ২৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ২,১৮৩ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগী ৪,৪৯,৭৬০ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ৬,৪১৬ জন এবং সর্বমোট সুস্থ হওয়া রোগীর সংখ্যা ৩,৬৪,৬১১ জন। গত […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo