এবার বরগুনার সিভিল সার্জন বললেন N95 মাস্ক পাননি – ঝুঁকিতে স্বাস্থ্যসেবা

১৬ এপ্রিল, ২০২০

গতকাল বুধবার(১৫ এপ্রিল) সন্ধ্যায় নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে মাস্কের অভাব তুলে ধরে একটি পোস্ট দেন বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের করোনা চিকিৎসক ডা. কামরুল আজাদ।

তিনি বলেন “আমাকে N-95 মাস্ক দিন অথবা মৃত্যুর মাধ্যমে পালাতে দিন। লোক দেখানো বাজারের ব্যাগের কাপড় দিয়ে তৈরি গাউন দেওয়া বন্ধ করুন।”

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসটির সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশনে এই মুহূর্তে ৩ জন করোনা পজিটিভ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। করোনাভাইরাসে সংক্রমিত সন্দেহে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও ২৩ জন। এসব রোগীর চিকিৎসা থেকে শুরু করে নমুনা সংগ্রহসহ তাদের সংস্পর্শে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং বাংলাদেশ স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে N-95 মাস্ক ব্যবহারের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কেননা N-95 মাস্কই পারে এই ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিহত করতে। কিন্তু আমাদের N-95 মাস্ক নেই। এজন্য আমরা পুরো টিম ঝুঁকিতে পড়েছি। এই ঝুঁকি নিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। হাসপাতালে যে পিপিই সরবরাহ করা হয়েছে, তা খুবই পাতলা এবং সাধারন স্প্রে করলে, তার ৮০ শতাংশ অতিক্রম করে যায়। তাহলে করোনা ভাইরাসের মত অতি ক্ষুদ্র ভাইরাস থেকে কতটুকু রক্ষা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে সঙ্কা রয়েছে।

এই চিকিৎসক আরও বলেন, “করোনাভাইরাসে সংক্রমিত ও সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের চিকিৎসা দেওয়ার পাশাপাশি হাসপাতালে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসা দিতে হয় আমার। তাই আমি যদি সংক্রমিত হই, তাহলে আমার কাছে আসা সাধারণ রোগীরা সংক্রমিত হবেন। এর মাধ্যমে পুরো জেলায় করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়বে। তাই বরগুনায় দ্রুত এন-৯৫ মাস্কের সরবরাহ নিশ্চিত করার অনুরোধ জানাই।এর আগে নিয়মিত ভিডিও কনফারেন্সে মাঠ পর্যায়ে চিকিৎসার চিত্র তুলে ধরতে চেয়েও বলার সুযোগ পাননি। অনন্যোপায় হয়ে তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।

এ বিষয়ে বরগুনার সিভিল সার্জন হুমায়ুন শাহীন খান বলেন, “আমাদের এখানে N-95 মাস্ক এখনো সরবরাহ করা হয়নি। এ কারণে চিকিৎসকরা চরম ঝুঁকি নিয়ে করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তিদের সংস্পর্শে যাচ্ছেন, এটা সত্য। সরকারের কাছে N-95 মাস্ক চাওয়া হয়েছে জানিয়ে সিভিল সার্জন বলেন, হয়তো দ্রুতই এই মাস্ক পেয়ে যাবেন তাঁরা।”

তিনি আরও বলেন, “জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর আমাদের বহু পুরোনো কিছু N-95 মাস্ক দিয়েছিল। যা এখন ব্যবহারের উপযোগী নয়। তাই আমাদের চিকিৎসকরা নিরুপায় হয়ে সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহার করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের সংস্পর্শে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। অথচ এই মাস্ক ব্যবহার করে করোনা সংক্রমিত রোগীদের সংস্পর্শে যাওয়া মোটেই নিরাপদ নয়।”

এভাবে চিকিৎসকদের জেনে-শুনে বিপদের মধ্যে ফেলার জন্য কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায় এড়াতে পারে না!

স্টাফ রিপোর্টার/ শরিফ শাহরিয়ার।

প্ল্যাটফর্ম স্টাফ রিপোর্টার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

পুরো দেশকে কোভিড-১৯ সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা হিসেবে ঘোষণা

Thu Apr 16 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ বৃহস্পতিবার, ১৬ই এপ্রিল , ২০২০ খ্রিস্টাব্দ আজ ১৬ই এপ্রিল, ২০২০ ইং তারিখ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে পুরো দেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশে সংক্রামক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল আইন ২০১৮’র ক্ষমতাবলে এ ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সারা দেশে সাধারণ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo