আজ বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৭ এপ্রিল ২০২১, শনিবার

আজ ১৭ এপ্রিল ২০২১ (শনিবার) সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস। ১৯৮৯ সাল থেকে প্রতিবছর বিশ্বজুড়ে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। মানব ইতিহাসের প্রাচীনতম দুরারোগ্য মরণব্যাধিগুলোর মধ্যে হিমোফিলিয়া একটি বংশাণুক্রমিক রক্তক্ষরণজনিত রোগ।

ছবিঃ প্রতীকী

রক্তে জমাট বাঁধার উপাদান বা ফ্যাক্টর জন্মগতভাবে কম থাকার কারণে উৎপত্তি ঘটে হিমোফিলিয়া রোগের। বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত দুই ধরনের হিমোফিলিয়া রোগী দেখা যায়, হিমোফেলিয়া- এ এবং হিমোফেলিয়া- বি। রক্তে ফ্যাক্টর- ৮ এর ঘাটতির কারণে হিমোফিলিয়া- এ এবং ফ্যাক্টর- ৯ এর অভাবে হিমোফেলিয়া- বি আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, বিশ্বে প্রতি ১০ হাজার জনে একজন হিমোফিলিয়ায় রোগে আক্রান্ত হয়। বাংলাদেশে কতজন হিমোফিলিয়া রোগী আছে তার সঠিক পরিসংখ্যান না থাকলেও প্রায় ১০ হাজার হিমোফিলিয়া রোগী রয়েছে বলে ধারণা করা হয়। নোভার্টিজ ফাউন্ডেশনের কনসালট্যান্ট ড. জেফরি কোহেন এর আর্টিকেলে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী প্রায় চার লাখ মানুষ হিমোফিলিয়ায় আক্রান্ত।

বিশ্ব হিমোফিলিয়া দিবস উপলক্ষে গতকাল ১৬ এপ্রিল (শুক্রবার) আয়োজিত এক অনলাইন সেমিনার আয়োজন করে ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়া অ্যান্ড রোটারি ক্লাব অব তুরাগ, উত্তরা।  এতে সায়েন্টেফিক পেপার উপস্থাপন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের অধ্যাপক ও ল্যাব ওয়ান ফাউন্ডেশন অব হিমোফিলিয়ার সভাপতি ডা. মো. সালাউদ্দিন শাহ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রোটারি ইন্টারন্যাশনাল ডিসট্রিক ৩২৮১, বাংলাদেশের গভর্নর নমিনী ইঞ্জিনিয়ার এম এ ওয়াব এবং অন্যান্য। অনুষ্ঠানে হিমোফিলিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন অতিথিরা।

ছবিঃ প্রতীকী

হিমোফেলিয়া রোগে রোগীর খুব বেশি রক্তপাত হয়। মহিলাদের মাসিকের সময় অনেক দিন ধরে রক্ত ঝরা, অনেক সময়ে নাক বা দাঁত দিয়ে রক্ত বের হওয়া, দাঁতের অপারেশনের পর প্রচুর রক্তপাত হওয়া এবং প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত যাওয়া এসবই হিমোফিলিয়া রোগের কারণ। চিকিৎসকদের মতে, ৮৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া- এ এবং ১৫ শতাংশ রোগীর হিমোফেলিয়া- বি হয়ে থাকে। হিমোফেলিয়া রোগ এখনবধি অনিরাময়যোগ্য একটি রোগ। তবে আক্রান্তের প্রথম দায়িত্বই হচ্ছে সচেতনতার সাথে চলাফেরা করা, যেন কোনোরূপ আঘাতে রক্তক্ষরণ না ঘটে। এ রোগীর রক্তক্ষরণ বন্ধে প্রধানত ব্যবস্থা হচ্ছে রক্তসঞ্চালন। রক্ত থেকে তৈরি ‘ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা’ নামক উপাদানই কেবল এ রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে সক্ষম। কিন্তু এ ফ্রেস ফ্রোজেন প্লাজমা তৈরিতে অনেক রক্তের ও অনেক সময়ের প্রয়োজন যা ব্যয়বহুল। প্লাজমা দেয়ার থেকে ফ্যাক্টর দেয়া রোগীদের জন্য অনেক উপকারী। এতে রোগীরা প্লাজমা বাহিত অনেক রোগ থেকে মুক্ত থাকবে। তবে দরিদ্র অসহায় রোগীদের ক্ষেত্রে প্লাজমা তৈরি ও সংগ্রহ প্রায় দুঃসাধ্য ব্যাপার।

অনুষ্ঠানে আলোচকরা অসহায় মানুষের পাশে সরকারের পাশাপাশি ধনীদের এগিয়ে আসতে আহবান জানান। কেননা সঠিক চিকিৎসা পেলে হিমোফিলিয়া রোগীরা স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারে।

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

বহুল প্রতীক্ষিত ডিএনসিসি করোনা হাসপাতালের কার্যক্রম উদ্বোধন আগামীকাল

Sat Apr 17 , 2021
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৭ এপ্রিল ২০২১, শনিবার আগামীকাল (১৮ এপ্রিল ২০২১) দেশের সবচেয়ে বড় ডিএনসিসি করোনা হাসপাতাল কার্যক্রম উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। হাসপাতালটিতে স্থাপন করা হয়েছে ১০০ বেডের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ), ১১২ বেডের হাই ডিপেনডেনসি ইউনিট (এইচডিইউ) এবং সাধারণ শয্যা থাকছে প্রায় ১ হাজার। এছাড়া রোগীদের জন্য রয়েছে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ। মহাখালী […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo