বিএমইউতে চালু হচ্ছে দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার

সোমবার, ১২ মে, ২০২৫

দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএমইউ) চালু হতে যাচ্ছে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার। এরই ধারাবাহিকতায় চিকিৎসক-ফিজিওথেরাপিস্টসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য শুরু হয়েছে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ক চারদিনের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি। প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চলবে আগামী ১৪ মে পর্যন্ত। এতে চিকিৎসক, ফিজিওথেরাপিস্টসহ ২১ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নিচ্ছেন।

রোববার (১১ মে) বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতালে আনুষ্ঠানিকভাবে রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। চীনের ৭ জন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারের সমন্বয়ে গঠিত চীনা টেকনিক্যাল টিম এই প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছেন।

জানা গেছে, চীন সরকারের সহায়তায় স্থাপিত এ সেন্টারে থাকবে ৬২টি অত্যাধুনিক রোবট, যার মধ্যে ২২টি হবে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নির্ভর। বিশেষ করে জুলাই মাসে ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনে আহতদের জন্য এখানে বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়া হবে। দীর্ঘমেয়াদি সমস্যায় ভোগা সাধারণ রোগীরাও স্বল্প ব্যয়ে সেবা পাবেন।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএমইউর উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) ও রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার ইমপ্লিমেন্টেশন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. আবুল কালাম আজাদ, ফিজিক্যাল মেডিসিন অ্যান্ড রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর, উপ-পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. আবু নাছের, উপ-পরিচালক (সুপার স্পেশালাইজড হাসপাতাল) ডা. এ কে আল মিরাজ এবং চীনের টেকনিক্যাল টিম ও প্রশিক্ষণার্থীরা।

ডা. আবুল কালাম আজাদ তার বক্তব্যে চীন সরকার ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি জানান, চীন সরকার প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের রোবটিক যন্ত্রপাতি উপহার দিয়েছে। এই সেন্টারটি চালু হলে এটি হবে দেশের প্রথম রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার, যেখানে গণআন্দোলনে আহতদের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকবে। ভবিষ্যতে নির্দিষ্ট পরিকল্পনার ভিত্তিতে সাধারণ রোগীদের জন্যও সেন্টারটি উন্মুক্ত রাখা হবে এবং চিকিৎসা ব্যয় সাধ্যের মধ্যে রাখার চেষ্টা করা হবে। এ ধরনের সেবা চালু হলে বিদেশমুখী চিকিৎসা নির্ভরতা কমবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয় হবে।

অধ্যাপক ডা. মো. আব্দুস শাকুর জানান, দক্ষিণ এশিয়ায় এ ধরনের রোবটিক রিহ্যাবিলিটেশন সেন্টার বিরল। এখানে থাকবে ৬২টি রোবট, যার মধ্যে ২২টি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নির্ভর। স্ট্রোক, স্নায়ুবিক বৈকল্য, প্যারালাইসিস, ফ্রোজেন শোল্ডার, নার্ভ ইনজুরি, অ্যাক্সিডেন্টজনিত জটিলতাসহ বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি রোগে আক্রান্তরা এই সেন্টার থেকে উন্নতমানের চিকিৎসাসেবা পাবেন এবং স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবেন।

সংশ্লিষ্টরা আরও জানান, প্রশিক্ষণ শেষে জনবল প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করলে খুব শিগগিরই সেন্টারটির আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হবে বলে জানানো হয়।

 

প্ল্যাটফর্ম কনট্রিবিউটর

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

সিভিল সার্জনরা চাইলে সেবার মান ২৫ শতাংশ উন্নতি সম্ভব: প্রধান উপদেষ্টা

Mon May 12 , 2025
সোমবার, ১২ মে, ২০২৫ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস মনে করেন, দেশের স্বাস্থ্য খাতে মৌলিক নিয়মকানুন যথাযথভাবে মানলে এবং জেলা পর্যায়ের সিভিল সার্জনরা আন্তরিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে—সীমিত সম্পদের মধ্যেও চিকিৎসাসেবার মান অন্তত ২৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো সম্ভব। সোমবার (১২ মে) রাজধানীর তেজগাঁওয়ে অবস্থিত প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে আয়োজিত […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo