৭০ হাজার নিবন্ধিত চিকিৎসকদের তালিকা ওয়েবে প্রকাশ।

ভুয়া ডাক্তার চিহ্নিত করতে সম্প্রতি দেশের সব নিবন্ধিত চিকিৎসকের নাম, পরিচয়, ছবিসহ বিস্তারিত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে ওয়েবসাইটে পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমঅ্যান্ডডিসি)। ওয়েবসাইটে এ পর্যন্ত মোট নিবন্ধিত চিকিৎসকের সংখ্যা মেডিকেলে ৬৬ হাজার এবং ডেন্টালে ৪ হাজার জন।

মূলত দেশে বর্তমানে এমবিবিএস চিকিৎসকের সংখ্যা ৭৬ হাজার। এ চিকিৎসকের মধ্যে সাত হাজার দন্ত চিকিৎসক। বাকিরা অন্যান্য রোগের চিকিৎসক।
বিএমডিসি’র প্রকাশ করা ৭০ হাজার নিবন্ধিত চিকিৎসকের মধ্যে ৬৬ হাজার হলেন এমবিবিএস অথবা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী। আর বিডিএস বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী দন্ত চিকিৎসক হলেন চার হাজার।
চিকিৎসকের এসব তথ্য বিএমডিসির ওয়েব সাইটে দেয়া হয়েছে। গত ১ সেপ্টেম্বর চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশনে, ভিজিটিং কার্ড ও সাইনবোর্ডে তাদের নামের সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন নম্বর যুক্ত করে দেয়ার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় বিএমডিসি থেকে। ভুয়া চিকিৎসক সনাক্ত করার উদ্দেশ্যে এ প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
বিএমডিসির ওয়েবসাইট :www.bmdc.org.bd

সম্প্রতি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থায় যে ধরনের সমস্যা পরিলক্ষিত হচ্ছে, সেগুলো সমাধানের জন্য অবিলম্বে বিএমঅ্যান্ডডিসিকে শক্তিশালী করতে হবে। দেশের মানুষের প্রকৃত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতের লক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানের হাতে ম্যাজিট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। পাশাপাশি মোবাইল কোর্ট পরিচালনার ক্ষমতা প্রদানের বিষয়েও মত দেন অনেকে।
জানা গেছে, চলতি বছর দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসকদের সঙ্গে সাংবাদিক ও রোগীর স্বজনদের কিছু অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটে। এই প্রেক্ষিতে কয়েকবার বিএমডিসিকে শক্তিশালী ও ক্ষমতা বাড়ানোর কথা বলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। মন্ত্রীর এ ঘোষণার পর প্রতিষ্ঠানটিকে শক্তিশালী করতে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়।
প্রতিষ্ঠানের একটি সূত্র জানায়, দেশের সামগ্রিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে গত জুন মাসে বিএমঅ্যান্ডডিসি আইন-২০১০-এ কিছু সংযোজন ও বিয়োজন করে আইনের একটি সংশোধনী মন্ত্রণালয়ে জমা দেয়া হয়। আইনের সংশোধনীতে চিকিৎসকদের ব্যবস্থাপত্র ও সাইনবোর্ডে নিবন্ধন নম্বর উল্লেখ করার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করার সুপারিশ করা হয়েছে।
সূত্র জানায়, ভুয়া চিকিৎসক চিহ্নিত করে তাদের অপকর্ম বন্ধ করতে এবং সাধারণ মানুষকে বৈধ চিকিৎসকদের সম্পর্কে অবহিত করতে এ উদ্যোগ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া বিএমঅ্যান্ডডিসির কাজের মধ্যে পড়ে না। কেননা ভুয়া চিকিৎসকরা নিবন্ধিত নয়। অনিবন্ধিতভাবে যারা নিজেদের চিকিৎসক হিসেবে দাবি করে তারা মূলত দেশের সঙ্গে প্রতারণা করছে। বিএমঅ্যান্ডডিসি নিবন্ধিত চিকিৎসকদের রেগুলেটরি বডি হিসেবে কাজ করে। এক্ষেত্রে ভুয়া চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে পৃথক শাস্তির বিধান রয়েছে।
এ প্রসঙ্গে বিএমঅ্যান্ডডিসির রেজিস্ট্রার ডা. জাহেদুল হক বসুনিয়া মানবকণ্ঠকে বলেন, ভুয়া চিকিৎসকদের দৌরাত্ম্য কমাতে বিএমঅ্যান্ডডিসি বৈধ নিবন্ধিত চিকিৎসকদের প্রেসক্রিপশন ও সাইনবোর্ডে রেজিস্ট্রেশন নম্বর উল্লেখ করার জন্য কয়েকবার বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চিকিৎসকদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ওই বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিবন্ধিত চিকিৎসকদের অনুমোদনহীন ডিগ্রি ও পদবির ব্যবহার পরিহার করতে সতর্ক করা হয়েছে।
কেউ কেউ এসব নির্দেশনা মানলেও অনেকেই আবার ওই নির্দেশ মানছেন না। এ ক্ষেত্রে বিএমঅ্যান্ডডিসি কর্তৃপক্ষের পক্ষে এত চিকিৎসকের খোঁজ খবর নেয়া সম্ভব নয়। কিন্তু দেশের মানুষ সচেতন হলে চিকিৎসকদের অবৈধ বা অনৈতিক কাজ বন্ধ করা সম্ভব। তিনি বলেন, দেশের যে কোনো নাগরিকের যদি কোনো চিকিৎসক সম্পর্কে সন্দেহ হয় তাহলে বিএমঅ্যান্ডডিসির ওয়েবসাইটে ক্লিক করে নিবন্ধিত যে কোনো চিকিৎসকের নাম, ঠিকানা, কোন মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করেছেন এসব তথ্য জানতে পারবেন। একই সঙ্গে দেশের নাগরিকরা নিশ্চিত হতে পারবেন যে তার চিকিৎসক নিবন্ধিত নাকি ভুয়া। এক্ষত্রে ভুয়া হিসেবে চিহ্নিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দেশের প্রচলিত আইনে মামলা করা যেতে পারে। এ ছাড়া বিএমঅ্যান্ডডিসি কর্তৃপক্ষ বরাবরও অভিযোগ দাখিল করা যেতে পারে।
তবে বিএমঅ্যান্ডডিসিকে অভিযোগ দেয়ার চেয়ে প্রচলিত আইনে অভিযোগ করলে ব্যবস্থা দ্রুত নেয়া সম্ভব বলে জানান ডা. জাহেদুল হক বসুনিয়া। তিনি বলেন, বিএমঅ্যান্ডডিসি কর্তৃপক্ষের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা না থাকায় অভিযুক্ত কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে যথেষ্ট সময়ের প্রয়োজন হয়। তবে নতুন আইন হলে প্রতিষ্ঠান আরো বেশি শক্তিশালী হবে বলেও জানান তিনি।
দেশের মানুষদের আরো বেশি সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডা. বসুনিয়া বলেন, শুধু নাম শুনেই চিকিৎসকদের কাছে সেবা নিতে যাবেন না। সেবা গ্রহণের আগে চিকিৎসক সম্পর্কে জেনে নিন। তাহলে প্রতারিত হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

ওয়েব টিম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

৩৫ তম বিসিএস এর বিজ্ঞপ্তি এবং নীতিমালা

Tue Sep 23 , 2014
৩৫তম বিসিএস পরীক্ষার মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন সিভিল সার্ভিসে শূন্য পদে নিয়োগের আবেদনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।মঙ্গলবার সরকারি কর্ম কমিশনের ওয়েভসাইট এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।এবার মোট ১ হাজার ৮০৩টি পদের বিপরীতে পরীক্ষা নেয়া হবে। এর মধ্যে সাধারণ ক্যাডারের পদ ৪৫৫, ফেশনাল বা টেকনিক্যাল ক্যাডারের মোট পদ ৪৮৪, সাধারণ শিক্ষা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo