সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাবার কিছু উপায়…

  1. সাপের কামড় বেশি হয় জুন থেকে সেপ্টেম্বর/অক্টোবর মাস পর্যন্ত। কারন এই সময় বৃষ্টি হয়, আর সাপ যে গর্তে থাকে তা পানিতে ডুবে যায়। সাপ তখন শুকনো জায়গা খুঁজে বেড়ায়। এই জন্য মানুষের বাড়ীতে আসে। বিশেষ করে শুকনো জায়গা যেমন-খড়ের গাদা, কাঠের বা খড়ির স্তুপ, বিছানা এমনকি বালিশের নিচেও আশ্রয় নিতে পারে।
    কিছু জিনিস খেয়াল করলে সাপের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়া যায়-
    ১। বাড়ির মধ্যে বা পাশে খড়ের গাদা, কাঠের স্তুপ, ইটের স্তুপ না রাখাই ভালো। এগুলো সাপের জন্য নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র।
    ২। বাড়ির চারপাশে কাচা রসুন বা ন্যাপথোলিন ছিটিয়ে দেয়া যেতে পারে। সাপ এগুলোর গন্ধ সহ্য করতে পারে না। তবে কার্বলিক এসিড ছিটিয়ে দিয়ে কোন লাভ নেই, বরং ক্ষতি হয়, কারন এটি পরিবেশ ও মানুষের জন্য ক্ষতিকর।
    ৩। বাড়ির মধ্যে বা পাশে কোন ভাবেই যেন ইদুর, ব্যাঙ আসতে না পারে। এগুলো সাপের প্রিয় খাবার। এরা আসলে সাপ আসার সম্ভবনা অনেক বেশি।
    ৪। লাইট জালিয়ে ঘরে প্রবেশ করুন। গ্রামের রাস্তায় চলাচলের জন্য লাইট ব্যাবহার করুন।
    ৫। খড়ের গাদা থেকে খড় বা খড়ির স্তুপ থেকে খড়ি নেবার আগে কোন কিছু দিয়ে শব্দ করে তারপর খড় নিন। সাপ থাকলে চলে যাবে।
    ৬। মানুষের থাকার জায়গার আশে পাশে হাস বা মুরগীর থাকার জায়গা না রাখাই ভাল। কারন সাপ হাস বা মুরগীর বাচ্চা, ডিম খেতে আসতে পারে।
    ৭। রাতে ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারী টাঙিয়ে ঘুমাতে হবে।
    ৮। ঘরের বাইরে বা বারান্দায় না ঘুমানোই ভালো। ঘুমালে অবশ্যই মশারী ব্যাভার করতে হবে।
    ৯। কোন কিছুর গর্তেই হাত ঢুকানো যাবে না।
    সাপ কামড়ালে কি করবেন?
    ১। আতংকিত হবেন না। কারন সাধারনত শতকরা ৯৬-৯৭ শতাংশ সাপ দংশন হয় অবিষাক্ত সাপ দারা। আবার বিষাক্ত সাপ কামড়ালেও বিষক্রিয়া কয় মাত্র ৫০% ক্ষেত্রে।
    ২। যে জায়গায় সাপ কামড় দিয়েছে সে জায়গাটা নাড়ানো যাবে না। ক্রেপ ব্যন্ডেজ দেয়া সবচেয়ে ভাল। তবে গ্রামে পাতলা গামছা বা শাড়ির কাটা অংশ দিয়ে লুস করে বেধে দিতে হবে। বাধার উদ্দেশ্য হল, যেন lymphatic drainage হতে না পারে, আর রোগী ওই অংশটা নাড়াতে না পারে। (সাপের বিষ lymphatic দিয়ে শরীরে ছড়িয়ে যায়)।
    ৩। কোন ভাবেই রোগীকে ঝারফুক, কবিরাজী, সাপ কাটার জায়গা ব্লেড দিয়ে কেটে ফেলা এসব করা যাবেনা। কারন কোনভাবেই সময় নষ্ট করা যাবে না। বিষাক্ত সাপ কামড়ালে যত তাড়াতাড়ি সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করার ঔষধ দেয়া যাবে রোগী তত ভালো হবার সম্ভবনা বেশী।
    ৪। রোগীকে দ্রুত কাছের হাস্পাতালে নিয়ে যাবেন, যেখানে সাপের বিষ নিষ্ক্রিয় করার ঔষধ এবং কৃত্রিম্ভাবে শাস-প্রশাস দেবার ব্যাবসহা আছে।
    ৫। অবশ্যই রোগীকে সাপ কামড়ানোর সময় থেকে ২৪ ঘন্টা অব্জারভ করে তারপর হাস্পাতাল থেকে নিয়ে যাবেন। কারন সাধারনত সাপ কামড়ানোর ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিষক্রিয়া হয়। এই সময়ের মধ্যে বিষক্রিয়ার কোন লক্ষন না হলে আর ভয়ের কোন কারন নেই।

    Dr. Ratindra Nath Mondal (Ratin), MBBS, FCPS (Medicine)
    Fellow, Indian Society of Hypertension
    Associate Professor
    Department of Medicine
    Rangpur Community Medical College, Bangladesh

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে ডায়বেটিস নিয়ন্ত্রন।

Sun Jul 22 , 2018
বিশ্বে ডায়াবেটিস প্রধান দেশ ভারতে ৫০ মিলিয়ন লোক ডায়াবেটিস টাইপ -২ তে আক্রান্ত। মেডিকেল বিশেষজ্ঞরা মনে করেন সময়মত সনাক্তকরণ, সঠিক চিকিৎসাই এই রোগীদের সাধারণ জীবন যাপন করতে সাহায্য করবে। বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে আলোচিত রোগ হচ্ছে ডায়াবেটিস, বিশেষভাবে ভারতে। একমাত্র সচেতনতার মাধ্যমেই এই রোগের ঝুঁকি কমানো সম্ভব। International Journal of Diabetes […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo