রাজধানী ঢাকায় করোনা চিকিৎসায় বাড়ছে হাসপাতাল ও শয্যাসংখ্যা

প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
শুক্রবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২০

দিনদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন জেলায় মিলছে করোনা রোগীর সন্ধান। করোনার ছোবলে আক্রান্ত সমগ্র বাংলাদেশ!

দেশে সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (IEDCR) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) পর্যন্ত শুধু ঢাকা মহানগরীতেই আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৮৩ জন, ঢাকা জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন আরো ৫৩ জন।

রাজধানী ঢাকাতে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে রোগীদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল ও শয্যাসংখ্যাও বাড়ানো হচ্ছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একটি অংশকে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। আগামী রোববার (২৬ এপ্রিল) থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩০০ শয্যার এই করোনা ইউনিট চালু হবে। পাশাপাশি ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা শুরু হয়েছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটকে করোনা ইউনিট করার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। এ কারণে বার্ন ইউনিটে থাকা সব রোগীকে শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হচ্ছে।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসিরউদ্দিন বলেন,

“বার্ন ইউনিটে থাকা প্রায় ৩০০ রোগীকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে হস্তান্তর করা হচ্ছে। রোববার করোনা ইউনিট চালু করা হবে। এখানে ৩০০ রোগীর চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব।”

এর আগে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার্থে ঢাকাতে ৬টি সরকারি ও ৩টি বেসরকারি হাসপাতাল নির্ধারণ করেছিল সরকার। তবে শুরুর দিকে আক্রান্তের সংখ্যা কম থাকায় শুধু কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা চলছিল। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ এপ্রিল) নির্ধারিত ৯টি হাসপাতালের ৬টিতেই করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি ছিলেন।

করোনা নির্ধারিত হাসপাতালগুলোর মধ্যে কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, কুর্মিটোলা হাসপাতাল, মহানগর জেনারেল হাসপাতাল এবং বেসরকারি তিনটি হাসপাতাল রিজেন্ট হাসপাতাল (উত্তরা ও মিরপুর) এবং নারায়ণগঞ্জের শিমরাইলে অবস্থিত সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রোগী ভর্তি ছিলেন।

সাজিদা ফাউন্ডেশন হাসপাতালে গতকাল পর্যন্ত ৩৩ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে ৩ জনকে ICUতে ভর্তি রাখা হয়েছে। গতকাল পর্যন্ত রিজেন্ট হাসপাতালের দুটি শাখায় ২৪ জন রোগী ভর্তি ছিলেন। এর মধ্যে উত্তরা শাখায় ১৩ জন এবং মিরপুর শাখায় ১১ জন রোগী ভর্তি আছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন ICU তে আছেন। তবে, বহির্বিভাগ চালু থাকলেও মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য হাসপাতাল এবং মহাখালীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রোগী ভর্তি ছিলেন না। আর রেলওয়ে জেনারেল হাসপাতালটি এখনো রোগী ভর্তির উপযোগী হয়নি। আরো ২-৩ দিন সময় লাগবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

নির্ধারিত ৯টি হাসপাতালে শয্যা ছিল প্রায় ১ হাজার ৩৩০টি। মুগদা হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেলের ৮০০ শয্যা যুক্ত হওয়ায় এখন করোনা চিকিৎসার শয্যাসংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ২ হাজার ১৩০।

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (ICU) ও কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দেওয়ার সুবিধা বা ভেন্টিলেশন জরুরি। কিন্তু নির্ধারিত সরকারি হাসপাতালগুলোর মধ্যে রেলওয়ে, মহানগর এবং মিরপুরের মাতৃ ও শিশুস্বাস্থ্য হাসপাতালে ICU সুবিধা নেই।

এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল শাখা) আমিনুল হাসান বলেন,

“করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য নির্ধারিত অধিকাংশ হাসপাতালে রোগী ভর্তি আছেন। যেসব হাসপাতালে আইসিইউর সুবিধা নেই, সেখানে ব্যবস্থা করা হচ্ছে। মুগদা হাসপাতালকে করোনার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলেও রবিবার (২৬ এপ্রিল) থেকে করোনার চিকিৎসা শুরু হবে।”

নিজস্ব প্রতিবেদক/ অংকন বনিক জয়

অংকন বনিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

চিকিৎসকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে উপহার পাঠালো বিজিসি ট্রাস্ট মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা

Sat Apr 25 , 2020
নিজস্ব প্রতিবেদক, শনিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২০ বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্ব বর্তমানে এক কঠিনতম বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, যেখানে বিশ্ববাসী অসহায়। সামনে পড়ে আছে এক অনিশ্চিত ভবিষ্যত। এই অনিশ্চয়তার মধ্যেও যে যার সাধ্যমতো সাহায্য সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষের পাশে দাড়াচ্ছে, কিংবা এই সংকটের সম্মুখসাড়ির যোদ্ধা তথা চিকিৎসক এবং […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo