ভ্যাকসিনের জন্য এখন থেকেই লবিং- বুকিং শুরুর পরামর্শ দিলেন অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৪ আগস্ট ২০২০, মঙ্গলবার

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ বলেছেন, এ বছরের মধ্যেই করোনার ভ্যাকসিন এসে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে অনেকেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, ভ্যাকসিন চূড়ান্তভাবে যখন মানুষের ব্যবহারের জন্য ছাড়া হবে, তখন উন্নত বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোই হয়তো আগে আগে ভ্যাকসিন নিয়ে নেবে। বাংলাদেশ এই ভ্যাকসিন পাবে কি পাবে না, তা নিয়ে একটা সংশয় তৈরি হয়েছে।

তবে ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন এদেশের মানুষ পাবে, এ নিয়ে সংশয়ের কিছু নেই। সরকারের কাছে, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন রাখা দরকার, ভ্যাকসিনটা আসার সাথে সাথেই যেন আমরা পাই। সেজন্য যেন এখন থেকেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। লবিং বা বুকিং যেটারই দরকার হোক না কেন, এখন থেকেই যেন সেটা শুরু করা হয়। বাজারে আসার পরপরই আমরা যেন ভ্যাকসিনটা পেয়ে যাই।

ডা. আব্দুল্লাহ আরও বলেন, বিশ্বের অনেক দেশ এবং সংস্থাই করোনার ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে। এর মধ্যে ২২টি মোটামুটি চূড়ান্ত ধাপে আছে। অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি রয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের মর্ডানা আছে, চীন এবং রাশিয়ার ভ্যাকসিনেরও ফাইনাল ট্রায়াল চলছে। এই ভ্যাকসিনগুলো নিয়ে সবাই আশাবাদী।

চীনের ভ্যাকসিনের ট্রায়াল বন্ধ হওয়ার বিষয়ে ডা. আব্দুল্লাহ বলেন, বাংলাদেশে একটা ভ্যাকসিনের ট্রায়াল চালাতে চেয়েছিল চীন। বিএমআরসি অনুমোদনও দিয়েছিল। কিন্তু একটা পর্যায়ে দেখা গেল এই ট্রায়ালটা আর হচ্ছে না। এটা দুটো রাষ্ট্রের বিষয়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বিষয়টা দেখছে। যেটা ভালো হবে তারা সেটাই সিদ্ধান্ত নেবে।

ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ জানিয়েছেন, সবাই অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনটি নিয়ে আশাবাদী। যেহেতু তারাও ফাইনাল স্টেজে রয়েছে। পাশাপাশি মর্ডানাও আছে। তারাও ৩৫ হাজার মানুষের উপর ট্রায়াল চালাবে। চীন রাশিয়াসহ আরও কয়েকটি দেশ আছে। সবগুলো ভ্যাকসিনের বিষয়েই বলা হচ্ছে, সেগুলো ভালো ফল দিচ্ছে। যদিও ফাইনাল ট্রায়ালের ফলাফল পাওয়ার আগে চূড়ান্তভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। তবে আশা করা যায় যে, এবছরই ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। বিশেষ করে অক্সফোর্ডের ভ্যাকসিনের কথা বলা হচ্ছে যে, সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যেই বাজারে এসে যাবে। শেষমেশ এতটা দ্রুত সম্ভব না হলেও, এই বছরের শেষ নাগাদ ভ্যাকসিনটি হয়তো মানুষের হাতে চলে আসবে।

ডা. আব্দুল্লাহ আরও বলেন, যেসব দেশের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার মার্কিন ডলারের কম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়ম অনুসারে তাদের বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাওয়ার কথা। যেহেতু বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ৪ হাজার ডলারের কম, তাই বাংলাদেশও বিনামূল্যে ভ্যাকসিন পাবে বলে আশা করা যায়। তবে যদি টাকা খরচ করেও কিনতে হয়, তবেও খুব বেশি চিন্তিত না হলেও চলবে। কারণ অক্সফোর্ড জানিয়েছে, মাত্র এক কাপ কফির দামে তাদের ভ্যাকসিন পাওয়া যাবে। অর্থাৎ তাদের ভ্যাকসিনের দাম খুবই কম। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই।

আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আব্দুল্লাহ সবাইকে সতর্ক করে জানিয়েছেন, ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত জনগণ যেন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে, সচেতন থাকে। এমনকি ভ্যাকসিন আসার পরেও কেউ যেন গা ছাড়া ভাব না দেখায়। কারণ একটি ভ্যাকসিনের শতভাগ কার্যকারিতা নিশ্চিত হতে কয়েক বছরও লেগে যেতে পারে। তাই ভ্যাক্সিন নয়, বরং নিজের সুরক্ষা নিজের হাতে। সকলকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার ও সচেতন থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

Tasnim Sanjana Kabir Khan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত তরুণীর সফলভাবে ফুসফুস প্রতিস্থাপন

Tue Aug 4 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৪ ই আগস্ট, ২০২০, মঙ্গলবার করোনা ভাইরাসে সারাবিশ্বের সবাই যখন মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে, ঠিক তখনি গত ৫ ই জুন (শুক্রবার) প্রথমবারের মত মায়রা রামিরেজ নামে এক কোভিড-১৯ রোগীর সফলভাবে দুটি ফুসফুস প্রতিস্থাপন করেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ম্যামোরিয়াল হাসপাতালের চিকিৎসকগণ। মায়রা রামিরেজ গত ২৬ শে এপ্রিল, ২০২০ কোভিড-১৯ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo