বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
জরুরি, আবাসিক, বহির্বিভাগে দৈনিক ২৫০-৩০০ জন রোগীর চিকিৎসা সেবা দেয়ার পাশাপাশি আবাসিক মেডিকেল অফিসার, মেডিকেল অফিসার, ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসারসহ ৪টি পদ একাই সামলাচ্ছেন একজন চিকিৎসক! এমন চিত্রের দেখা মিলেছে হবিগঞ্জের ৫০ শয্যাবিশিষ্ট বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে!

অমানুষিক পরিশ্রমে মানবিক চিকিৎসা সেবা দেয়া এ চিকিৎসকের নাম আলমগীর হোসেন। তিনি মূলত বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার। কিন্তু চিকিৎসক সংকট থাকায় ৪টি পদ তিনি একাই সামাল দিচ্ছেন।
এই অমানুষিক সেবার বিষয়ে ডা. আলমগীর হোসেন প্ল্যাটফর্মকে বলেন, দৈনিক বহির্বিভাগে গড়ে ৩০০-৩৫০ জন রোগী হয়। তবে রবি, বুধ ও বৃহস্পতিবারে অন্যদিনের তুলনায় বেশি রোগী হয়। আমি দৈনিক সর্বনিম্ন হলেও ২০০ রোগী দেখি। পাশাপাশি আমাকে দৈনিক সকাল, দুপুর, রাত তিন শিফটে ডিউটি করতে হয়।
চিকিৎসক সংকটের মধ্যে সেবা দিতে গিয়ে কোন সমস্যায় পড়তে হয় কী-না জিগ্যেস করলে তিনি প্ল্যাটফর্মকে জানান, “ওয়ার্কলোডটা অতিরিক্ত, এটাই মূল সমস্যা। পাশাপাশি জনবল সংকট থাকার কারণে একসাথে অধিক রোগী আসলে সবার তাড়াহুড়ো থাকে। এজন্য প্রতিনিয়ই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। কিন্তু দেরি হলেও আমার করার কিছু থাকে না, চিকিৎসা সবাইকে দিতে হয় এবং আমরা সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করি।”
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসকদের ১৭টি পদের মধ্যে ১৪টিই শূন্য। শিশুদের জন্য জুনিয়র কনসালট্যান্ট আছেন মাত্র একজন এবং সার্জারির জন্য আছেন মাত্র একজন সহকারী সার্জন। গাইনি বিভাগের কোনো চিকিৎসক না থাকায় চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন নার্স। পাশাপাশি কয়েকজন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টও কখনো কখনো রোগী দেখেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডেন্টাল সার্জন না থাকায় দন্তচিকিৎসা দিচ্ছেন শ্যামল দেবী নামে একজন ডেন্টাল টেকনোলজিস্ট!
এভাবেই প্রতিদিন তিনজন চিকিৎসক দিয়েই বাহুবল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রায় ৩০০ থেকে ৩৫০ জন মানুষের চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে। এ উপজেলায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষের বসবাস।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা আবদুল্লাহ হেল মারুফ ফারকীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।