মঙ্গলবার, ১০ জুন, ২০২৫
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ১০০ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি বিভাগের কক্ষে ঢুকে কর্তব্যরত চিকিৎসককে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সকাল ১১টা নাগাদ হাসপাতালের চিকিৎসক অনুপম বাড়ৈ মারধরের শিকার হয়েছেন।

জানা গেছে, হামলাকারী ব্যক্তির নাম সোহেল হাওলাদার (২৫), সে কোটালীপাড়া পৌর শহরের ফেরধরা গ্রামের আজিজ হাওলাদারের ছেলে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রতিদিনকার মতো ডা. অনুপম বাড়ৈ রোগী দেখছিলেন। কক্ষে থাকা রোগীরা বের হয়ে গেলে সোহেল তালুকদার দরজার সিটকিনি বন্ধ করে দেয় এবং তার হাতে থাকা একটি স্টেইনলেস স্টিলের পাইপ দিয়ে ডা. অনুপমকে বেধড়ক পেটাতে থাকে। পরে তার চিৎকার শুনে হাসপাতালের কর্মচারীরা দরজা ভেঙে তাকে উদ্ধার করেন।
‘স্টেইনলেস স্টিলের পাইপ নিয়ে একজন ব্যক্তি হাসপাতালে প্রবেশ করছে কিন্তু হাসপাতালের নিরাপত্তায় নিয়োজিত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিস্ক্রিয় ছিল কী-না?’ – প্ল্যাটফর্মের এমন প্রশ্নের কোন সদুত্তর দিতে পারেনি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এ ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবিতে হাসপাতালের কর্মচারীরা তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা সেবা বন্ধের ঘোষণা দেন। পরে কোটালীপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মৃদুল কুমার দাসের আশ্বাসে কর্মসূচি প্রত্যাহার করে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রাখা হয়।
প্ল্যাটফর্মের অনুসন্ধানে জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার তার সন্তানসম্ভবা স্ত্রী ছাদিয়া খানমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। ভর্তির পরে সেখানে কোনো চিকিৎসক ছিল না। এতে ডেলিভারি করাতে দেরি হয়। তার স্ত্রী ছাদিয়া খানম মৃত বাচ্চা প্রসব করেন। এ কারণে তিনি ক্ষিপ্ত ছিলেন।
চিকিৎসক অনুপম বাড়ৈ জানান, “আমি কাজ করছিলাম। হঠাৎ একজন অপরিচিত লোক এসে দরজা বন্ধ করে আমাকে মারধর শুরু করেন। আমার চিৎকার শুনে হাসপাতালের কর্মীরা দরজা ভেঙে আমাকে উদ্ধার করেন।
শুনেছি, সোহেল হাওলাদার কয়েক দিন আগে তার গর্ভবতী স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে এসেছিলেন। তার স্ত্রীর আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে দেখা গেছে, হাসপাতালে আনার চার দিন আগে তার বাচ্চা গর্ভেই মারা গেছে। এই রোগীকে আমি চিনি না। তাকে আমি চিকিৎসাও দেইনি।”
স্থানীয় গণমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, সোহেল হাওলাদারের স্ত্রী ছাদিয়া খানম বলেন, “আমি সন্তান প্রসব করতে হাসপাতালে গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে কোনো ডাক্তার পাইনি। ডাক্তার আসতে দেরি করায় আমার বাচ্চা মারা গেছে। এ কারণে আমার স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে ডাক্তারকে মারধর করে থাকতে পারে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মৃদুল কুমার দাস বলেন, “একজন লোক এসে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অনুপম বাড়ৈকে মারধর করেছে। মারধরের পরে কোটালীপাড়া থানা থেকে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। আমরা তার বিরুদ্ধে মামলা করব।”
কোটালীপাড়া থানার সূত্রে জানা গেছে, সোহেল হালদারের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস