বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই, ২০২৫
সিলেটের এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নবজাতকের মৃত্যু নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ প্রচার করছে গণমাধ্যম। প্রচারিত সংবাদ অনুযায়ী হাসপাতালের বারান্দায় দুই প্রসূতির সন্তান প্রসবের ঘটনা ঘটেছে। এসময় মারা যায় একটি শিশু।
কিন্তু বাস্তবে শয্যা সংকটের কারণেই এমন হয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিকেলে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের দ্বিতীয় তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের সামনের বারান্দায় এ ঘটনা ঘটে।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, হাসপাতালে থাকা অবস্থায় প্রসব ব্যথা উঠলে চিকিৎসক এবং সেবিকাদের সহযোগিতা চেয়েও না পেয়ে স্বজন এবং অন্যদের সহযোগিতায় ওই দুই প্রসূতি সন্তান জন্ম দেন। এমনকি প্রকাশ্যে হাসপাতালের বারান্দায় সন্তান জন্মদানের সময় ওয়ার্ডের সেবিকাদের কাছে কাপড় চেয়েও পাওয়া যায়নি।
তবে প্ল্যাটফর্মের অনুসন্ধানে জানা গেছে ভিন্ন তথ্য। অনুসন্ধানে জানা যায়, ভর্তির কক্ষে শয্যা আছে ৫টি। সেখানে প্রসূতিদের পরীক্ষা করার পর ভর্তি করা হয়। প্রসূতিদের অবস্থা দেখেই প্রসব করানোর জন্য শয্যা দেয়া হয়। শয্যার অতিরিক্ত রোগী ভর্তি থাকায় শয্যা পাননি সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের চাটিবহর গ্রামের শাহিন মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম (১৯) ও গোলাপগঞ্জের দক্ষিণ রামপাশা গ্রামের রতন চন্দ্র দাসের স্ত্রী সুপ্রিতা রানী দাস (২৫)। তারা গতকাল (০২ জুলাই) বিকেলে হাসপাতালের ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের বারান্দায় সন্তান প্রসব করেন।
সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপ-পরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তীর বক্তব্যেও জানা গেছে একই তথ্য। তিনি বলেন, হাসপাতালের প্রসূতি ওয়ার্ডে ২৪ ঘণ্টাই রোগী ভর্তি করা হয়। ২৫-৩০ জন প্রসূতি এক সঙ্গে ভর্তির জন্য আসেন। তাদের অনেকের ফলস লেবার পেইন, কেউ ৮ মাসের অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় আসেন। ভর্তির কক্ষে শয্যা আছে ৫টি। সেখানে প্রসূতিদের পরীক্ষা করার পর ভর্তি করা হয়। প্রসূতিদের অবস্থা দেখেই প্রসব করানোর জন্য শয্যা দেয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ৯০০ শয্যার হাসপাতালে তিন হাজারের কাছাকাছি রোগীকে সেবা দেয়া হচ্ছে বিষয়টিও সবাইকে বুঝতে হবে।
ওই প্রসূতি দুই নারী সুস্থ রয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, এক প্রসূতি সময়ের আগেই সন্তান জন্ম দিয়েছেন এ জন্য শিশুটিকে বাঁচানো যায়নি। মা সুস্থ রয়েছেন। অন্য শিশু ও মা ভালো আছেন। আজ কালকের মধ্যেই তাদের ছাড়পত্র দেয়া হবে।
এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনী বিভাগে কর্মরত একজন চিকিৎসক জানান, “গণমাধ্যমে সবসময়ই চিকিৎসকদের নেতিবাচকভাবে উপস্থাপন করা হয়। আমরা প্রতিনিয়ত শয্যার তুলনায় কয়েকগুণ বেশি রোগীর সেবা দেই। আমাদের লেবার রুমের বেডও নির্দিষ্ট। একজন রোগীর জন্য আরেকজনকে ত বের করে দেয়া যায় না। তবুও আমরা প্রতিনিয়ত সর্বোচ্চ সেবা দেয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছি।”
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস