সদ্য পাস করা এমবিবিএস ডাক্তারদের জন্যঃ পর্ব-১

আপনি কোন সাবজেক্ট এ ক্যারিয়ার করবেন এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে দেরি করবেন না। সিদ্ধান্ত নিতে যত দেরি করবেন আপনি ততই পিছিয়ে যাবেন। ইন্টারনীর শুরুতেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত পাকা পোক্ত করা উচিত। ইন্টারনীর সময় আপনার বেডে যে রোগী থাকবে ওই কমন রোগটা ওই সময়ে একবার পাঠ্য বই থেকে পড়ে নিবেন ।

এখন/ চলতি সময়ে এফসিপিএস/ রেসিডেন্সি একটার প্রশিক্ষণ আরেকটাতে কাজে লাগানো যায় না। তাই যে কোন একটাকে প্রাধান্য দিয়ে শুরু করবেন। অনারারি / সরকারি ট্রেনিং শুরু করলে ইন্টারনাল মেডিসিন / জেনারেল সার্জারি/ অবস-গাইনী ( মাতৃ বিষয় ) দিয়ে শুরু করা ভালো এবং এক বছর পূর্ণ না করে ব্রাঞ্চ এ না যাওয়াই ভালো । এতে করে পরবর্তীতে ব্রাঞ্চ গুলিতে প্রশিক্ষণ নিতে আপনার সুবিধা হবে। তা ছাড়া, ওই এক বছরের প্রশিক্ষণ দেখিয়ে পরে প্রয়োজন মনে করলে এমসিপিএস পরীক্ষা দেয়া যাবে।

ট্রেনিং এর লগ বইয়ে সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের স্বাক্ষর যথাসময়ে নিশ্চিত করবেন। অন্যথা অধ্যাপক বা আপনি বদলি হয়ে গেলে আপনি বিপদে পড়বেন । ভালো প্রস্তুতি না নিয়ে পরীক্ষা না দেয়াই ভালো । এতে করে আর্থিক অপচয় হয়।
বিগত বছরের প্রশ্নগুলো দেখে নিলেই বুঝবেন কিভাবে প্রস্তুতি নিতে হবে। সহায়ক বইগুলিতে বিগত বছরের প্রশ্ন গুলো পাবেন। সহায়ক বই থেকে প্রশ্ন দেখে পাঠ্য বই থেকে পড়বেন ।

রেসিডেন্সিতে আনুমানিক ৬৫% প্রশ্ন বেসিক সাবজেক্ট থেকে আসে। অর্থাৎ , বেসিক মাইক্রোবায়োলজি , বেসিক প্যাথলজি , ফার্মাকোলজি , ফিজিওলজি ইত্যাদি । এফসিপিএস প্রথম পর্বে তার উল্টা , অর্থাৎ বেসিক থেকে আনুমানিক ৩৫% প্রশ্ন আসে। বাকিটা ক্লিনিক্যাল থেকে ।
ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দেয়ার পর একবার, দুইবার বা তিন বারে এফসিপিএস ১ম পর্ব বা রেসিডেন্সিতে চান্স না পেলে হতাশ হওয়ার কিছু নেই, এতে আপনার পরবর্তী প্রশিক্ষণের জন্য বরং ভালোই হবে।

অনেকে জানেই না যে, এফসিপিএস/ এমডি/ এম এস এর জন্য থিসিস/ ডিজারটেশন করা লাগে । এফসিপিএস এর ডিজারটেশনের জন্য বিসিপিএস তিন দিনের প্রশিক্ষণ দেয় । আপনার প্রশিক্ষণ দুই বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই ওই তিন দিনের প্রশিক্ষণ করে নিলে ভালো। এমডি/ এমএস এর থিসিস এর জন্য সংশ্লিষ্ট মেডিক্যাল কলেজে research methodology & biostatistics এর ক্লাস হয়/ হওয়ার কথা/ হওয়ার সম্ভাবনা। এফসিপিএস এর ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ দুই বছর পূর্ণ হওয়া মাত্র ডিজারটেশনের কাজ শুরু করে দিবেন। এর জন্য আনুমানিক এক বছর সময় লাগে। কারন, থিসিস / ডিজারটেশন করতে হয় অধ্যাপক বা সহযোগী অধ্যাপকের অধীনে । জেলা সদর হাস্পাতালে সিনিয়র কন্সাল্টেন্ট এর অধীনে প্রশিক্ষণ করা যাবে কিন্তু সেখানে থিসিস করার ব্যবস্থা নেই। থিসিস/ ডিজারটেশন এর ব্যপারে সময় থাকতে অবহেলা করলে পরে আফসোস করবেন।

সরকারি চাকরিতে থেকে প্রশিক্ষণের জন্য পোস্টিং নেয়ার পর তিন বছর পার হলে যে কোনও মুহূর্তে আপনার প্রশিক্ষণ পদ বাতিল করতে পারে কর্তৃপক্ষ । পরে আপনি এক বছরের কোর্স করবেন। আশা করি বুঝতে পেরেছেন। উপজেলাতে দুই বছর পূর্ণ না করে প্রশিক্ষণ পদে আসবেন না। অন্যথা পরবর্তীতে আপনি অনেক মাশুল দিবেন এবং আফসোস করবেন। এ ব্যাপারে অল্পতে সন্তুষ্ট থাকুন। চাকরিতে যোগদান করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে আপনার পিডিএস একাউন্ট খুলুন। যে কোন আবেদনের সাথে পিডিএস দিতে হয়। প্রত্যেক জানুয়ারিতে এসিআর জমা দিন। এটা অতি গুরুত্বপূর্ণ । প্রশিক্ষন পদে যাওয়ার আগেই ফাউন্ডেশন ট্রেনিং করা ভালো ।সংশ্লিষ্ট তথ্য সমূহ এর ব্যাপারে সময়মত আপডেট জেনে নিবেন।

আমাদের মা বোনেরা অনেকেই স্তনের সমস্যার জন্য স্বাভাবিক লজ্জার কারনে সমস্যা লুকায়িত রাখে এবং দেরি করতে থাকে। স্বভাবতই এ ধরনের সমস্যার জন্য তারা পুরুষ ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। এসব কারনে অনেক সময় দেখা যায় স্তনে ক্যান্সার হয়ে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ার পর তারা শেষ মুহূর্তে ডাক্তারের শরনাপন্ন হয়। তখন আর কিছু করার থাকে না। ওই পরিবারটাতে বিপর্যয় নেমে আসে। তারা জানে না যে , এটার জন্য সার্জারি বিশেজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। তাই তারা ভুল করে গাইনি ডাক্তারের কাছে গিয়ে কিছু সিস্টেম লস করে। তাই নতুন পাস করা মহিলা ডাক্তারদের মধ্য থেকে কেউ কেউ সম্ভব হলে সার্জারি বিশেষজ্ঞ হওয়ার কথা চিন্তা করা যায় ।

পরবর্তী পর্বের জন্য প্ল্যাটফর্ম ওয়েবে চোখ রাখুন

লিখেছেন:
ডাঃ মোঃ মাকসুদ উল্যাহ
রেসিডেন্ট ফেজ বি (নেফ্রোলোজি)
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটি অফ শরিয়তপুরের ঈদ পূনর্মিলনী- ২০১৭

Mon Jul 3 , 2017
প্রথমবারের মত শরীয়তপুর জেলার ডাক্তার এবং মেডিকেল-ডেন্টাল শিক্ষার্থীদের এক জায়গায় নিয়ে আসার প্রত্যয়ে একটি ঈদ পূনর্মিলনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে মেডিকেল এন্ড ডেন্টাল সোসাইটি অফ শরিয়তপুরের সদস্যরা ।   ঈদের পরের দিন শরীয়তপুর চৌরংগীতে অবস্থিত শরীয়তপুর বি এম এ র কার্যালয়ে বিকাল ৪ টায় অনুষ্ঠিত হয় এই ঈদ পূনর্মিলনী আর সাথে আনুষ্ঠানিক […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo