প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ননামতে মেডিকেল শিক্ষার্থী ইতির মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার চিত্র

মিরাজুল ইসলাম নামের একজন প্রত্যক্ষ্যদর্শীর বর্ননামতে আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ এর ৫ম বর্ষের ছাত্রী আফসানা ইলিয়াস ইতির মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনার ঐদিনের চিত্র।

ফেসবুক থেকে সংগৃহীতঃ

জীবনের প্রথম নির্ম্মম সড়ক দুর্ঘটনার চাক্ষুষ সাক্ষী হলাম আজ!!!

স্থানঃ মালিবাগ রেইলগেট বাসস্ট্যান্ড
সময়ঃ সন্ধ্যা ৬.৪০, জানুয়ারী ১৯, ২০১৯

-বাসায় যাওয়ার জন্য বাসের জন্য অপেক্ষা করছি, অনেক যাত্রী। আমার সাথে একটি মেয়েকে নটিস করি। হিজাব পরা – কাধে ব্যাগ – গায়ে অ্যাপ্রন – একটু স্বাস্থ্যবতী (মেবি প্রাইভেট মেডিকেলের ছাত্রী)। বাস গুলোতে যাত্রীদের অনেক ভীড়। এমন এক সময় একটি ”তুরাগ” (টঙ্গি-উত্তরা-বাড্ডা-মালিবাগ-যাত্রাবাড়ী)বাস রামপুরা থেকে এলো। বাস টিতে দাঁড়ানোর ও যায়গা নেই। তারপরও আমরা সবাই(৭/৮ জন) বাস এর গেট এর সামনে ”পাড়াপাড়ি” করছিলাম, পাছে কিছু যাত্রী নামলে যদি চড়ার সুযোগ হয়।

-ড্রাইভার বাসটিকে সাইড করার জন্য এবং গেট এ যাত্রীদের ”পাড়াপাড়ি” কমানোর জন্য একটু দ্রুতগতিতে মোড়ের সামনে এগিয়ে ৯০ ডিগ্রী টার্ন নিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে আমরা নিজেদেরকে আল্লাহর অশেষ অশেষ রহমতে সাইড করে আনতে সমর্থ হলাম, কিন্তু আমাদের মধ্যেই একজন(মেয়েটি) ধাক্কা খেয়ে মাটিতে পড়ে যায় আর ওই ৯০ ডিগ্রী টার্ন এর গতির মধ্যসময় বাসের পেছনের চাকা মেয়েটির কোমরের উপর দিয়ে উঠে যায় — (এন্ড টু মেইক দিস মোড়্র প্যাথেটিক) কোমরের উপরে থাকা অবস্থায় ড্রাইভার ব্রেক করেন। ড্রাইভারকে তৎক্ষণাৎ বাসটিকে সামনে বা পেছনে নিতে বলা হয়। এর মধ্যে আমরা সবাই বাস টিকে ঠেলে চাকা উঁচু করতে থাকি। তারপর মেয়েটিকে চাকা উচিয়ে সরিয়ে আনা হল আর রিকশা করে আহত অবস্থায় খিদমাহ হাসপাতাল পাঠান হল।

-তারপর আমি পরের তুরাগ বাসে বাসায় আসলাম। এসেই নিউজ চ্যানেল গুলোতে খবরটি বের করার বৃথাচেষ্টা করলাম।

-মেয়েটির কি অবস্থা জানতে পারিনি এখনও,বেঁচে আছে নাকি মরে গেছে? হয়তো কালকে জানতে পারব। আর বাঁচলেই বা? থিংস উইল নট বে দ্য সেইম।
-আমি নিজেও প্রথমে বিরক্ত হচ্ছিলাম, মেয়েটিও এত ভীড়ের মধ্যে বাসে উঠতে কেন চাচ্ছে? কে জানে, হয়তবা কালকের এক্সামের জন্য তাড়া ছিল, অথবা, রক্ষনশীল মেয়ে হিসেবে জলদি বাড়ি ফেরার তাড়া ছিল, হয়তবা মধ্যবিত্ত ফ্যামিলির জীবনটাকে যুদ্ধ ভেবেই ঝাঁপিয়ে পড়েছিল।

— আমাদের দেশের ট্র্যাফিক আইনকে আরো কঠোররূপে প্রণয়নের আরতি করে (কিন্তু সেই আইন বাস্তবায়নের জন্য অপেক্ষা না করে) পাশাপাশি আমরা নিজেরাও একটু সাবধানতা অবলম্বন করি।
– গাড়ি চলন্ত অবস্থায় তার আশেপাশে ”পাড়াপাড়ি” না করি।
– রাস্তাঘাটে চলার সময় কোনোভাবেই অন্যমনস্ক না হই।
– সড়ক পারাপারের ক্ষেত্রে কঠোর সচেতনতা অবলম্বন করি।
– সময় বাঁচাতে গিয়ে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে না ফেলি।
– আই রিপিট, সময় বাঁচাতে গিয়ে নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে না ফেলি।

সর্বাবস্থায় মহান সৃষ্টিকর্তার শুকরিয়া আদায় করতে না ভুলি।

ওয়েব টিম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ভুল স্বীকার করে শিকড় নিয়ে আবারও হাসপাতালে ফিরেছেন বৃক্ষ মানব

Mon Jan 21 , 2019
প্ল্যাটফর্ম নিউজ ডেস্কঃ ভুল স্বীকার করে বৃক্ষমানব আবুল বাজানদার আবারও হাসপাতালে ফিরেছেন। সোমবার (২১ জানুয়ারি) বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা নতুন করে শুরু করা হবে। আজ রবিবার সকাল ১০ টায় মা আমেনা বেগমকে সঙ্গে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে আসেন আবুল। বর্তমানে তিনি বার্ন ইউনিটে অবস্থান করছেন। […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo