২৫ মার্চ, ২০২০
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের আঘাতে বিপর্যস্ত সারাবিশ্ব। প্রতিদিনই এ ভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে, মারা যাচ্ছে বহু মানুষ। বাংলাদেশেও মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা ভাইরাস। এ যাবৎ বাংলাদেশে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ৩৯, মারা গেছেন ৫ জন।
এমতাবস্থায় দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে সাহায্য নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।কেন্দ্রীয় চুক্তিতে থাকা ১৭ ক্রিকেটারের সঙ্গে কিছু দিন আগে শেষ হওয়া জিম্বাবুয়ে সিরিজে সুযোগ পাওয়া আরও ১০ জন ক্রিকেটার নিজেদের এক মাসের বেতনের অর্ধেক দান করছেন প্রধানমন্ত্রীর দুর্যোগ ব্যবস্থাপক তহবিলে। দুঃসময়ে এই অর্থ তারা পৌঁছে দিতে চান করোনাভাইরাস মোকাবেলার কাজে।
বিসিবির চুক্তিভুক্ত ও গত তিন মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা বিভিন্ন গ্রেডের মোট ২৭জন ক্রিকেটার মিলে দানকৃত এ অঙ্কের পরিমাণ দাঁড়ায় সর্বোচ্চ ৩০ লাখের কিছু বেশি টাকা। তবে কর বাবদ বাদ রেখে ২৬ লাখ টাকার মত ব্যবহার করা যাবে করোনা ইস্যুতে।
আজ (বুধবার) দুপুরের দিকে মিডিয়াকে এমনি তথ্য জানিয়েছে ক্রিকেট বোর্ডের একটি সূত্র।
ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান জানান, ‘গতকাল মাশরাফি ভাইয়ের সঙ্গে আলাপ হচ্ছিল এটা নিয়ে। এরপর সবার সঙ্গে কথা হয়। সবাই এক বাক্যে রাজি হয়েছে।’
পরে ফেসবুকে নিজের ভ্যারিফাইড পেইজের মাধ্যমে তামিম জানানঃ
“বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে আমরা সহায়তা করছি। কর কেটে রাখার পর মোট থাকবে ২৫ লাখ টাকার কিছু বেশি।করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই যতটা ব্যাপক, এই অর্থ হয়তো খুব বড় অঙ্ক নয়।তবে বিন্দু বিন্দু জল মিলেই হয়ে ওঠে মহাসাগর। আমরা সবাই যদি নিজেদের জায়গা থেকে চেষ্টা করি, যত ছোট অবদানই হোক, সবাই মিলে সেটিই বড় হয়ে উঠবে। চারপাশের সবার সমালোচনায় মেতে না থেকে আমরা যদি নিজেরা দায়িত্ব নেই ও নিজেদের সাধ্যমতো অবদান রাখি, তাহলেই করোনাভাইরাসের
বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে আমাদের জয় সম্ভব।”
একই রকম বিশদ বার্তা আসে জাতীয় দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীমের পেইজ থেকেও। তিনি লিখেনঃ
“করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে আমাদের সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে যার যার জায়গা থেকে।সেটির অংশ হিসেবে আমরা ক্রিকেটাররা একটা উদ্যোগ নিতে যাচ্ছি, যেটি হয়তো অনুপ্রাণিত করতে পারে আপনাদেরও। আমরা এই মাসের বেতনের ৫০ শতাংশ দিয়ে একটা তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিল ব্যয় হবে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে আক্রান্ত কোভিড-১৯ রোগে আক্রান্ত ও সাধারণ মানুষ যাদের গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় জীবন চালিয়ে নিতে অনেক কষ্ট হয়।তহবিলে জমা পড়েছে প্রায় ৩০ লাখ টাকার মতো। কর কেটে থাকবে ২৬ লাখ টাকা। করোনার বিরুদ্ধে জিততে হলে আমাদের এই উদ্যোগ হয়তো যথেষ্ট নয়। কিন্তু যাদের সামর্থ্য আছে সবাই যদি এক সঙ্গে এগিয়ে আসেন কিংবা ১০জনও যদিও এগিয়ে আসেন, এই লড়াইয়ে আমরা অনেক এগিয়ে যাব। হ্যাঁ, এরই মধ্যে করোনা মোকাবিলায় অনেকে এগিয়ে এসেছেন। তাদের অবশ্যই সাধুবাদ জানাই।কিন্তু বৃহৎ পরিসরে যদি আরও অনেকে এগিয়ে আসে, তাহলে আমরা এই লড়াইয়ে জিততে পারব ইনশাআল্লাহ। সেই সহায়তা হতে পারে ১০০, ৫০০০ কিংবা ১ লাখ টাকা দিয়ে। টাকা দিয়ে না হোক হতে পারে দুস্থ মানুষকে খাবার কিনে দিয়ে। আসুন পুরো দেশকে আমরা একটা পরিবার ভেবে চিন্তা করি এবং এই বিপদে সবাই সবাইকে সহায়তা করি। আল্লাহ আমাদের নিশ্চয়ই রক্ষা করবেন। ইনশাআল্লাহ।”
নিজস্ব প্রতিবেদক/ আব্দুল্লাহ আল মারুফ