করোনার টিকা কে পাবেন? কীভাবে পাবেন?

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১২ জানুয়ারি ২০২১, মঙ্গলবার

গত সোমবার (১১ জানুয়ারি ২০২০) স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশব্যাপী করোনার টিকা প্রদানের একটি প্রাথমিক রূপরেখা প্রকাশ করেছে। আগামী ২১ থেকে ২৫ জানুয়ারির মধ্যে প্রথম ধাপে সেরাম ইন্সটিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ডের আবিষ্কারকৃত টিকার ৫০ লাখ ডোজ করোনার টিকা দেশে এসে পৌঁছাবে। প্রথম ধাপেই ৫০ লাখ মানুষকে এই টিকা প্রদান করা হবে।

ছবিঃ ভ্যাকসিনের মাস ভিত্তিক বিতরণের তালিকা

করোনার টিকা প্রদানের প্রাথমিক তালিকানুযায়ী প্রথম দফায় কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যসেবায় সরাসরি সম্পৃক্ত সরকারি স্বাস্থ্যকর্মী ৪৫২,০১৭ জন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মী ৬০০,০০০জন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ২১০,০০০ জন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ৫,৪৬,৬১৯ জন, সামরিক ও বেসামরিক প্রতিরক্ষা বাহিনী ৩৬০,৯১৩ জন, রাষ্ট্র পরিচালনায় নিয়োজিত কর্মকর্তা- কর্মচারী ৫০,০০০ জন, সংবাদমাধ্যমকর্মী ৫০,০০০ জন, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ১৭৮,২৯৮ জন।

ছবিঃ ভ্যাকসিনের মাস ভিত্তিক বিতরণের তালিকা

এছাড়াও বিভিন্ন সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভার কর্মচারী, ধর্মীয় প্রতিনিধি, মৃতদেহ সৎকার কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি, জরুরি পানি- গ্যাস- পয়ঃনিষ্কাশন- বিদ্যুৎ- ফায়ার সার্ভিস- পরিবহন কর্মী, স্থল- নৌ- বিমান বন্দর কর্মী, প্রবাসী শ্রমিক, জেলা- উপজেলায় জরুরি জনসেবায় সম্পৃক্ত সরকারি কর্মচারী, ব্যাংক কর্মকর্তা- কর্মচারী এবং স্বল্প রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার জনগোষ্ঠীরাও (ক্যান্সার, যক্ষা, এইচঅাইভি) বিভিন্ন ধাপে টিকা পাবেন। এভাবে বয়স অনুযায়ী তালিকাভুক্ত ব্যক্তিদের করোনা টিকা প্রদান করা হবে। তবে গর্ভবতী এবং ১৮ বছর বয়সের নিচে কাউকে নিয়ে উক্ত টিকার কোন গবেষণা হয় নি বলে তারা এই টিকা পাবেন না।

ছবিঃ ভ্যাকসিনের মাস ভিত্তিক বিতরণের তালিকা

তালিকাভুক্ত জনগোষ্ঠীকে ৮ সপ্তাহ ব্যবধানে (১ম ডোজের ৮ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ) ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। প্রবাসী অদক্ষ শ্রমিকদেরকেও ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে। কিন্তু সেক্ষেত্রে, কেউ যদি ভ্যাকসিন গ্রহণে ইচ্ছুক হন তবে তাকে অবশ্যই ২ ডোজের মধ্যবর্তী সময়ের নির্ধারিত ৮ সপ্তাহ দেশে অবস্থান করতে হবে। এক্ষেত্রে তাকে বৈধ কাগজপত্রাদি (পাসপোর্ট, ভিসা, ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি) দাখিল করতে হবে। ভ্যাকসিন পরিবহণ, সংরক্ষণ ও প্রদানের সময় যথাযথ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে দেশের পুলিশ বাহিনী সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করবে। করোনা ভাইরাসের টিকা দেয়ার কার্যক্রম সঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরি করেছে সরকারের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ। করোনা ভাইরাসের টিকা নিতে হলে এই অ্যাপে নিজেদের তথ্য দিয়ে তালিকাভুক্ত করতে হবে। সেখান থেকে সরকার টিকা গ্রহীতার সম্পর্কে যেমন সব তথ্য পাবেন, তেমনি যারা টিকা নেবেন, তারাও পরবর্তী আপডেট সম্পর্কে জানতে পারবেন। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এমআইএস, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এ-টু-আই ও তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ এই অ্যাপটি তৈরির কাজ প্রায় শেষ করে এনেছে। এছাড়াও ডিজিটাল পদ্ধতিতে অনলাইন নিবন্ধন, ভ্যাকসিন কার্ড, সম্মতিপত্র, ভ্যাকসিন সনদ প্রদানে আইসিটি বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তর কর্তৃক “সুরক্ষা ওয়েবসাইট” প্রস্তুত করা হয়েছে।

ছবিঃ কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণকারীর সম্মতিপত্র

করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য ২ জন ভ্যাকসিন প্রদানকারী ও ৪ জন স্বেচ্ছাসেবক নিয়ে একটি করে দল গঠিত হবে এবং সারাদেশে মোট ৭ হাজার ৩৪৪টি দল করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করবেন। ইতোমধ্যেই ৬৪ জেলার ২৮টি জেলায় অবস্থিত ভ্যাকসিন সংরক্ষণাগার ভ্যাক্সিন সংরক্ষণের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতালে ভ্যাক্সিন সংরক্ষণের জন্য পৃথক স্থান নির্ধারণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট হতে প্রাপ্ত ৩ কোটি বা ততোধিক ডোজ ভ্যাকসিন ৬টি ধাপে সরাসরি বাংলাদেশের নির্ধারিত জেলার ইপিআই কোল্ড স্টোরসমূহে পৌঁছানোর দায়িত্ব পালন করবে বেক্সিমকো ফারমাসিউটিক্যালস লিমিটেড।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভ্যাকসিন অনুমোদন এর ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর ডব্লিউএইচও প্রিকোয়ালিফিকেশন ছাড়াও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জাপান প্রভৃতি দেশের স্ট্রিনজেন্ট রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক অনুমোদিত ভ্যাকসিন দেশে ব্যবহারের অনুমতি দিয়ে থাকে। দেশে প্রদেয় অক্সফোর্ড বা অ্যাস্ট্রাজেনিকা উদ্ভাবিত কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনটি ইতিমধ্যেই গত ৩০ ডিসেম্বর ২০২০ তারিখে ইউকে’র ‘রেগুলেটরি অথরিটি’ অনুমোদন লাভ করে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের পাবলিক হেলথ ইমার্জেন্সি এক্সপার্ট কমিটি গত ৭ জানুয়ারি ২০২১ তারিখে উক্ত ভ্যাকসিনকে ‘ইমার্জেন্সি ইউজ অথরাইজেশন’ প্রদান করে। এতে করে দেশে উক্ত ভ্যাকসিন ব্যবহারে আর কোন বাধা নেই। তাছাড়া, নকল ভ্যাকসিন প্রতিরোধেও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

৪১ ও ৪২তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার সময়সূচী প্রকাশ

Wed Jan 13 , 2021
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৩ জানুয়ারি ২০২১, বুধবার আজ ১৩ই জানুয়ারি, ২০২১ রোজ বুধবার বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের এক সভায় নির্ধারণ করা হয়েছে ৪১তম ও ৪২তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে দেয়া তথ্য অনুযায়ী ৪১তম বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১৯ মার্চ, ২০২১ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo