বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫
- মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট হয়েও পরিচয় দেন নানা চমকপ্রদ বিদেশি ডিগ্রিধারী হিসেবে
- তিনি জেলা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা
- ভ্রাম্যমাণ আদালত চলাকালীন তর্কে জড়িয়েছেন ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে
- অন্তত দশ বছর ধরে করছিলেন এমন অভিনব প্রতারণা
দীর্ঘদিন ধরে সকল রোগের চিকিৎসা দিয়ে আসছিলেন ডিএমএফ ডিগ্রিধারী মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রদীপ বসু। মানিকগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালের পাশেই গ্রীন লাইফ হাসপাতালে চিকিৎসার নামে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছিলেন এই মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট।

মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টের পাশাপাশি প্রতারক প্রদীপ বসু মানিকগঞ্জ জেলা প্রজন্ম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা।এমবিবিএস কিংবা বিডিএস ডিগ্রি ছাড়াই নামের আগে ‘ডাক্তার’ লিখে প্রতারণার আশ্রয়ে প্রতিদিনই দেখছেন সব রোগের রোগী একই সাথে করছেন অপচিকিৎসাও।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গ্রীন লাইফ হাসপাতালে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসানুল হক।
অভিযানে দেখা যায়, প্রদীপ বসু নিজেকে নানা চমকপ্রদ বিদেশি ডিগ্রিধারী ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন। তবে ম্যাজিস্ট্রেটের জিজ্ঞাসাবাদে প্রদীপ বসু জানান, তার ডিএমএফ (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট) ডিগ্রি রয়েছে ও বিএমডিসির মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট রেজিস্ট্রেশন নিয়েই রোগী দেখছেন।
তবে প্রতারক প্রদীপ বসু দাবি করেন, সুপ্রীম কোর্টে (মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্টরা) একটি রিট দায়ের করেছেন ও সেই রিট বিচারাধীন অবস্থায় চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া তার অধিকার।
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আহসানুল হক গণমাধ্যমে বলেন, রোগীদের সঙ্গে প্রতারণা করে নিজেকে ডাক্তার হিসেবে পরিচয় দেওয়া এবং ভুয়া ডিগ্রি প্রদর্শন করা গুরুতর অপরাধ। তাই বিএমডিসি আইন ২০১০ অনুযায়ী প্রদীপ বসুকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। সেইসঙ্গে তাকে সতর্কও করা হয়েছে।
অভিযানের সময় প্রদীপ বসু ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন এবং নিজের বিরুদ্ধে নেওয়া ব্যবস্থাকে ‘হেনস্থা’ বলেও দাবি করেন।
স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রদীপ বসুর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আগেও উঠেছিল। তবে রাজনৈতিক পরিচয়ের আড়ালে থেকে তিনি পার পেয়ে যান।
জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. আহসানুল হকের নেতৃত্বে অভিযানে মানিকগঞ্জ সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা: এম আর পারভেজ সহ সদর থানার পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস