Happy Medical Life Without Frustration

( নতুন বছরের ১ম বর্ষের মেডিক্যাল স্টুডেন্টসদের অনেকেরই প্রথম কার্ড কমপ্লিটেশন এক্সাম হয়ে গেছে বা অনেকেরই সামনে হবে, লেখাটি তাদের জন্য উউৎসর্গীকৃত)

ছোট্ট সোনামণিরা! মানে, মেডিক্যালে নতুন আসা আপু ভাইয়াদের জন্য নতুন কিছু টিপস এন্ড ট্রিক্সস!!
.
… শুরু করি এক গবেটের গল্প দিয়ে! সেই গবেট কলেজে ভর্তি হয়েই এক সিনিয়ার থেকে বুকলিস্ট নিয়ে দুনিয়ার সব বই কিনে ফেলেছিল। ক্লাস শুরু হল যথারীতি। গবেট বইয়ের ভারে নুজ্য! সে বুঝেই না, এনাটমির বই কোন গুলো, কোন গুলোই বা ফিজিওলজির!! একবার বায়োকেমেস্ট্রি টিউটোরিয়ালে একটা পড়া দেখে যেতে বলেছিল। আর হোস্টেলে ফিরে সে গবেট সবগুলো বই নামিয়ে ঘেঁটে ঘেঁটে দেখেছে কোনটা কোন সাবজেক্ট এর বই!! এরপর কোন খেই না করতে পেরে শুয়ে শুয়ে দুই ঘণ্টা কেঁদেছে … আমি কেন এখানে পড়তে আসলাম, আমি তো কিছুই পারবো না!! অথচ জানেন, ওই গবেট ( গবেটি!!) শেষ পর্যন্ত প্লেস-অনার্স নিয়ে একদিন মেডিক্যাল কলেজ পার হয়ে গেছে!! তাইলে বলেন, আপনি কেন পারবেন না! বলেন?!
প্রথম প্রথম সবাই কাঁদে, কারন গবেটের মত সবাই নিজেকে বিশ্লেষণ করতে ভুলে যায়। বায়োকেমেস্ট্রির হারপার সবার জন্য না। হিস্টোলজির জ্যাঙ্কুইরা সবার জন্য না। আগে চলেন, বিশ্লেষণ করেন আপনি কোন ক্যাটেগরির ছাত্রঃ
.
স্বর্গীয় আঁতেল –
এই শ্রেণীর ছাত্ররা ভিনগ্রহ থেকে মানুষ সেজে আপনার সাথে পড়তে এসেছে। এদের পড়ার পদ্ধতি আমার অজানা!! আল্লাহ্‌ জানেন!!
.
লেকচার ক্লাস ভিত্তিক পড়ুয়া – মেধাবী আঁতেল
এটাই আদর্শ মেডিক্যাল ছাত্রের লক্ষণ। উপরের যে বইগুলো বললাম, সেগুলো উনাদের জন্যই। তারা চটি পড়েন না। তারা লেকচারের আগের রাতে বা তারও আগেই মেইন বই থেকে ওই বিষয় ফালা ফালা করে ফেলেন। ফলে লেকচারে তারা খুব সপ্রতিভ থাকতে পারেন। এরা লাইফে অনেক শাইন করেন।
তবে এ শ্রেণীর একটা অংশকে আইটেমে অথবা প্রফের ভাইভাতে ভরাডুবি হতে দেখা যায়। এর কারন হল, উনারা অনেকে মেইন বই পড়তেই পুরো সময় শেষ করে ফেলেন। ভাইভার জন্য অথবা দ্রুত লেখার জন্য ‘মুখস্থ’ করতে হবে যে ব্যাপার গুলো, সেগুলো নিয়ে কোন হ্যান্ড নোট করেন না। ফলে গড়গড় করে ইএসআর বাড়ার কারনগুলো তারা বলতে পারেন না! আপনি এ শ্রেণীর মেধাবী আঁতেল হলে, জ্ঞানের জন্য মেইন বই পড়ুন, এবং পাসের জন্য নিজের একটা হ্যান্ডনোট বানান।
.
টিউটোরিয়াল ক্লাস ভিত্তিক – মাঝারি আঁতেল
শুরুতেই বলি, এরা আদর্শ না। এদের মত হবেন না। কিন্তু মেডিক্যাল এ এসে আপনি শুধু পড়াশোনাই তো করেন না!! প্রেম করেন, পলিটিক্স করেন, পড়াতে যান, জনকল্যান মূলক সংগঠন গুলো করেন, ফেসবুকিং ও মাশাল্লাহ যথেষ্ট করেন। আপনার অত সময় কই!! এদিকে ভালো রেজাল্ট করার একটু একটু ইচ্ছা মনে ঠিকই আছে!!
হ্যাঁ ভাই!! আপনার জন্য আছে, টিউটোরিয়াল ভিত্তিক পড়াশোনা!! আপনি পড়বেন টিউটোরিয়াল এর সাথে সাথে। যেদিন যা পড়াবে, সেটা সেদিন মেইন বই থেকে পড়ে ফেলবেন। বুঝলে তো খুব ভালো! মেধাবী আঁতেল এর মত নিজের নোট করার দরকার নাই, জাস্ট মার্কার দিয়ে ইম্পরট্যান্ট লাইন/বক্স গুলো দাগিয়ে রাখেন!!
কিভাবে বুঝবেন, কোন লাইন ইম্পরট্যান্ট ??!
যে অংশ পড়তে আপনার মজা লেগেছে, যা আপনার এন্টেনার ফ্রিকোয়েন্সি দিয়েই গেছে, যেটা পড়ে মনে মনে ভাবসেন, ওহ!! এই সেই মেকানিজম!! – সেটাই ইম্পর্ট্যান্ট লাইন!! মেইন বই যতক্ষন আনন্দ লাগে পড়বেন, দাগাবেন। পড়তে পড়তে না বুঝলেও সমিস্যা নাই!! আপনি যে সেটা মেইন বই থেকে পড়েছেন, সেই ইমানের জোর আপনার থাকবে অন্তত!! হাইসেন না, প্রফের হাশরে এই জোর, অনেক বড় জোর!
এরপর যেদিন আইটেমের ডেইট দেবে, তার আগের রাতে চটি বইটা বের করবেন। এসব চটি বই ‘চটি’ হতে পারে, কিন্তু যারা বইগুলোর অথর, তারা কোন অংশেই চটি নন!! উনারা সেই মেধাবী আঁতেল, আর চটি তাদের হ্যান্ডনোটেরই একটা নমুনা!! যেটা আপনি বিনা পরিশ্রমেই হস্তগত করছেন!!
এবার মেইন বইয়ের দাগানো, মার্ক দেয়া, ভালো লাগা পার্টগুলো আর চটি বইয়ের সে চ্যাপ্টারটা আগাগোড়া ‘মুখস্থ’ করে ফেলেন। মুখস্থ করতে না পারলে বার বার করে ব্রেনে হ্যামার করেন, বারবার পড়েন। আইটেমের টুলে বসার আগ পর্যন্ত পড়েন। এই কায়দায় আইটেম, কার্ড, টার্ম, প্রফ সব দিয়ে দেন চকাচক!!
তবে এরাম পড়েই ঝড়ে বক মরার মত, প্লেস প্লুস করে ফেলতে চাইলে আরেকটু কষ্ট করা লাগপে!! লেকচার শিটগুলোও একটু করে দেখে যেতে হবে। চুম্বক অংশ মনে রাখতে হবে, মতান্তরে মুখস্থ করতে হবে!!
.
আইটেম ভিত্তিক – মেডিক্যাল ছাত্র
উনারা আইটেমের আগের রাতে, অথবা সেদিন সকালে, অথবা আইটেম চলতে চলতে, অথবা আইটেম টেবিলে প্রশ্ন উত্তর শুনে শুনে, অথবা মাঝে মাঝে কিছু না পড়েই আইটেম ক্লিয়ারের মাধ্যমে মেডিক্যাল লাইফ পার করেন।
এদের প্রতি পরামর্শ, আরেকটু পরিশ্রমি হতে হপে। নইলে প্রফে কষ্টে পড়বেন।
তবে যাই করেন, যত কমই পড়েন, কনসেপশন যদি ক্লিয়ার করতে পারেন, ‘বেসিক’ ভালো থাকলে পার হয়ে যাবেন। আপনি যদি এই শ্রেণীর হয়ে থাকেন, তবে হতাশ হবার কারন নেই। ফাঁকিবাজির পথগুলো খুঁজে সেগুলো বন্ধ করে দিন। অল্প পড়েই তো পার হইতেসি, এরকম আত্মপ্রসাদে না থেকে একটু পরিশ্রম করুন। অন্তত পড়াশোনা গুছিয়ে রাখুন, জেনে রাখুন কোথায় কি আছে। কার কাছে কি আছে। তাহলে যেদিন রেস দিতে নামবেন, সেদিন দৌড়ে আপনিও তেমন একটা পিছিয়ে থাকবেন না।
.
… সব কথার শেষ কথা! মেডিক্যাল লাইফ, খরগোশ কচ্ছপের দৌড়। নিজের ইচ্ছার বেশি লোড নেবার দরকার নাই, একটু একটু করে প্রতিদিনের স্টামিনা বাড়ুক। খরগোশ হলে একটু জেয়েই হাঁপিয়ে যাবেন! বরং কচ্ছপের মত দাঁত কামড়ে এগিয়ে যান, একটু একটু করে হলেও … পথ বেশি না, যদি আপনি ‘ক্রমাগত সরণ’ এ থাকেন!! থেমেছেন, কি মরেছেন!!
.
যাহোক, কথা শেষ! গবেট এর ( গবেটি!!) পরিচয় জানিতে চাহিয়া লজ্জা দিবেন না আশা করি। তাহার জন্য দোয়া করিবেন, যদি কথাগুলো আপনার উপকারে আসে!! ভালোবাসা নিয়েন সবাই!!

 

লেখিকা: ডা. তাহসিনা আফরিন

এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি-আফ্রিকা উইং,
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়

রেডিয়েশন অনকোলজি (এমডি-পার্ট ২),
জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনিস্টিটিউট ও হাসপাতাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ঢাকার বসুন্ধরায় উদযাপিত হলো ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে ২০১৭

Tue Mar 21 , 2017
বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির আয়োজনে গতকাল ২০ মার্চ দিনব্যাপী নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি, বসুন্ধরাতে গতকাল উদযাপিত হলো ‘ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে ২০১৭’। সারা দেশের তিন হাজারেরও বেশি ডেন্টিস্টের অংশগ্রহণে সকাল ৮টায় র‍্যালির মাধ্যমে ‘ওয়ার্ল্ড ওরাল হেলথ ডে’-এর কর্মসূচি শুরু হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ডা. হুমায়ূন কবির […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo