ধর্ষণের ভিক্টিমদের স্বাস্হ্য পরীক্ষায় পুরুষ চিকিৎসকের নিষিদ্ধ করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট!

22

গোটা বাংলাদেশের সরকারী মেডিকেল কলেজ মিলিয়ে ফরেনসিক মেডিসিন এর অধ্যাপক সর্বসাকুল্যে মাত্র ২ জন। যার একজন এ বছরে আর একজন সামনের বছরে অবসরে যাচ্ছেন।

সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে আছেন ৮ জন এবং সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ১০ জন।এছাড়া এমসিপিএস কোর্সে ১০ জন, এমডি কোর্সে ২ জন আর ডিপ্লোমা কোর্সে আছেন ১৪ জন।মানে দাঁড়ালো বাংলাদেশে সর্বসাকুল্যে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ২০ জন আর হবু বিশেষজ্ঞ ২৬ জন, এই হল মোটমাট ৪৬ জন।এর মধ্যে ১০ জনও নারী নন!

এখন কথা হচ্ছে, মহামান্য আদালত যে পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত টা দিলেন তা কি এই পরিসংখ্যান টা জেনে নাকি না জেনে।

দুই নম্বর কথা- পরীক্ষা করতে বিশেষজ্ঞ না হলেও চলে তবে রিপোর্ট লিখতে কিন্তু বিশেষজ্ঞ হতে হয়।

তাহলে ব্যাপারটা কি দাঁড়ালো?পরীক্ষা করবেন একজন আর রিপোর্ট লিখবেন আরেকজন?সুব্যবস্থা করতে গিয়ে এ কোন অব্যবস্থাপনার আয়োজন!আর প্রতিটি মেডিকেল কলেজে ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পর্যাপ্ত নারী মেডিকেল অফিসার আছেন কিনা সেটাও কি খোঁজ নিয়ে দেখেছেন!

যথেষ্ট লিখে ফেলেছি, শেষ করি আইন দিয়ে-ফরেনসিক মেডিসিন এ ধর্ষণের ক্ষেত্রে ভিকটিম বা তার অভিভাবক এর অনুমতি নিয়ে একজন মহিলা সহকারীর উপস্থিতিতে পর্যাপ্ত গোপনীয়তা রক্ষা করে পরীক্ষা করা হয়, এটাই আইন, যার ব্যতিক্রমের সুযোগ নেই।

সুতরাং শুধু পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে,(প্রসংগত যে প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এমন রায় আমি সেই প্রতিবেদনের প্রতিবাদ করে একটি স্ট্যাটাস লিখেছিলাম,সেখানে স্বয়ং প্রতিবেদনকারী কে মেনশন করা হয়েছিলো, তিনি কোন মন্তব্য করেননি এ ব্যাপারে!!)

এরকম একটা সিদ্ধান্ত গোটা চিকিৎসক সমাজেরই নৈতিকতা এবং দায়বদ্ধতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে বলে আমি মনে করি।যেহেতু সিদ্ধান্তটি স্পর্শকাতর, তাই অনেকেই স্বাভাবিকভাবেই এটিকে স্বাগত জানাচ্ছে এবং জানাবেও কিন্তু বাস্তবতার প্রেক্ষিতে আমি সাধুবাদ জানাতে পারছিনা বলে দুঃখিত।

উন্নত বিশ্বের কথা বাদ দিলাম, কেবল পাশের দেশ ভারতই যেখানে পর্যাপ্ত ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ থাকা সত্ত্বেও ধর্ষণের পরীক্ষার প্রক্রিয়াগুলোতে উন্নত প্রযুক্তির সন্নিবেশ ঘটিয়ে পুরো প্রক্রিয়াদিকে বিতর্কমুক্ত করে ফেলেছে,সেখানে বাস্তবতা বিবেচনা না করে কেবল পত্রিকার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে চিকিৎসকদের অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ফেলে- এমন একটা সিদ্ধান্ত আসলে কতটুকু ভিক্টিমদের স্বার্থ সংরক্ষণ করবে তা হয়তো কেবল সময়ই বলতে পারবে।

আজ ফরেনসিকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, পরবর্তীকালে হয়তো আলট্রাসনোগ্রাম এবংগাইনিকলিজিক্যাল পরীক্ষাতেও পুরুষের উপস্থিতি নিষিদ্ধ করা হবে!

আমাদের চিকিৎসক সমাজ আর কত অপমান, অপদস্থ হলে জেগে উঠবেন নিজেদের অধিকার আদায়ে?

Link-  http://m.prothom-alo.com/bangladesh/article/197101/ধর্ষণের_শিকার_নারীর_স্বাস্থ্য_পরীক্ষায়_পুরুষ

লেখক – সৈয়দ নাজিন মোর্শেদ

Sairee

22 thoughts on “ধর্ষণের ভিক্টিমদের স্বাস্হ্য পরীক্ষায় পুরুষ চিকিৎসকের নিষিদ্ধ করেছেন মহামান্য হাইকোর্ট!

    1. আমারো খুব পছন্দের সাবজেক্ট, কিন্তু এইসব কাহিনি কীত্তন দেখে আগ্রহ হারাইয়া যাচ্ছে দিন দিন,এই পেশায় আপনারা নারীরা এগিয়ে আসলে তো ভালোই হয়

    2. ফরেনসিক মেডিসিনে ক্যারিয়ার করলে সরকারী চাকুরী করে লাভ নেই বাংলাদেশে | পিএম রিপোর্ট/ ভিক্টিম রিপোর্টের জন্য অহেতুক বিস্তর চাপ নিতে হয়, অসততায় আকন্ঠ নিমজ্জিত রাজনীতি এর জন্য দায়ী | সবাই মনে করে, এই বিভাগের সবাই দূর্নীতির প্রতীক | বেসরকারী মেডিকেল কলেজে শিক্ষকতা করাই শ্রেয়, অন্য ননক্লিনিক্যাল সাবজেক্টের মতোই |

  1. গাইনী ডাক্তার দের একটা দুই দিনের ট্রেনিং দিয়ে দিলেই হবে। অন ডিউটি, রেজিস্টার ভিক্টিম এক্সামিন করবেন, ফরেনসিক ডাক্তারের গাইডেন্সে

    1. যিনি গাইড করবেন তিনি কি পুরুষ হবেন নাকি মহিলা?

    2. তিনি একজন এক্সপার্ট হবেন। পুরুষ মহিলা ব্যাপার না।

    3. কিন্তু হাইকোর্ট যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে??

    4. তাহলে তো হতই আপা, আমার মত মানুষকে ছোটমুখে এত বড় কথা বলতে হতে না, আমাদের জুনিয়রদের দায়িত্ব সিনিয়ররা, নেতারা নেয়না বলেই তো চিকিৎসাখাতের আজ এই দুরাবস্থা..

  2. স্যালুট হাইকোর্ট।তবে ফরেনসিক মেডিসিনে মহিলা ডাক্তার বাড়াতে হবে।

  3. গাইনী বিশেষজ্ঞ ও যেন কোন পুরুষ না হয় তার আদেশ জারি হচ্ছে না কেন !

  4. রেপ ভিক্টিমের রিপোর্ট লিখতে বিশেষজ্ঞ লাগে এই কথার সুত্র কি?

    1. ভাই, আমি যতদূর জানি, কমপক্ষে চলতি দায়িত্বে সহকারী অধ্যাপক পদমর্যাদার নিচে কেউ কোন ফরেনসিক রিপোর্ট লিখতে পারেন না, আমার জানায় ভুল থাকলে ধরিয়ে দিলে কৃতজ্ঞ থাকবো…

    2. আন্তজাতিক নিয়ম বা বই পুস্তুকের নিয়ম জানা নাই। তবে জেলা পর্যায়ে এইকাজ এমবিবিএস চিকিৎসকরাই করেন। করেন মানে এই নয় যে ফরেন্সিকের কেউ নাই দেখে করেন। এইটা জব ডেসক্রিপশনেই পড়ে।

    3. কিন্তু মেডিকেল কলেজের ক্ষেত্রে? আর জেলা বা উপজেলা পর্যায়ে সবজায়গায় পর্যাপ্ত নারী চিকিৎসক আছেন??

    4. যেই হাসপাতালে নারী চিকিৎসক নাই সেখানে রেপ ভিক্টিম পরীক্ষা করা হয় না।
      জেলা পর্যায়ে এই রকম কেসে একজন মহিলা ডাক্তার বোর্ডে থাকেন। সেই মহিলা ডাক্তার ওই হাসপাতালের যেকোনো বিভাগের চিকিৎসক হলেই চলে।
      মেডিকেল কলেজে ফরেন্সিকের হেড চলতি দায়িত্বের সহ অধ্যাপক এবং পুরুষ হলে তিনি মহিলা লেকচারার এর সহযোগীতা নিবেন। ডিপার্টমেন্ট-এ মহিলা ডাক্তার না থাকলে অন্য যেইকোনো ভাবে মহিলা ডাক্তার ম্যানেজ করবেন এবং এটা খুব সহজে করা যায় এবং করা হয় ও।

    5. তার মানে কি আগে থেকেই পুরুষ না রাখার পদ্ধতিটা চলে আসছে? সেক্ষেত্রে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা কেন? আমরা তো ফরেনসিকে পড়েছিলাম ডাক্তার তিনি পুরুষ বা মহিলা যা ই হোন, একজন মহিলা সহকারী থাকবেন, সেই সহকারীর কি চিকিৎসক হওয়া বাধ্যতামূলক?? আর এমন একটা সিদ্ধান্ত কি আদতে আমাদের হিপোক্রিটাস ওথ কে অসম্মানিত করছেনা? কেবল জানার জন্যই প্রশ্নগুলো করলাম ভাই..

    6. নারী চিকিৎসক রাখার নিয়মটা এই রায়ের পর থেকে শুরু। আগের কমেন্টে এই রায়ের পরের পরিস্থিতির কথা বলেছি। তার আগে অবশ্যই এমন ছিল না। তোমরা এই ব্যাপারে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা আদেশের কপি দেখলে অনেক কিছুই সহজ মনে হবে।
      হিপোক্রিটাস ওথ না মানলে আমাদের দেশের আইনের দৃষ্টিতে কোনো অপরাধ হয় কিনা আমার জানা নাই।
      না হওয়ার কথা।

    7. ভিক্টিম পরীক্ষা বা পিএম করতে যেখানে মেডিকেল কলেজ আছে সেখানে সহঃ অধ্যাপক হতে হবে বা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ হতে হবে এমন কোন নিয়ম বা আইন বা প্রজ্ঞাপন ছিলো না, এখনো নাই ( তনু’র পিএম করেছেন যে মহিলা ডাঃ তিনি ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ও প্রভাষক) | বছর ২ আগে হাই কোর্টেরএক প্রজ্ঞাপনে ভিক্টিম মহিলা ডাক্তার দ্বারা সম্পাদনের নির্দেশ দেয়া হয় | তাহলে, মহিলা মৃতদেহের ময়না তদন্ত পুরুষ ডাক্তার করতে পারবে না, এমন কোন নির্দেশনা কেন জারি হয় না, তাহা বোধগম্য নয় ! বাংলাদেশে ফরেনসিক চিকিৎসক’গন ( সরকারী) আশে-পাশের দেশগুলো ও উন্নত দেশগুলোর প্রেক্ষিত বিবেচনায় এক শতাংশ সুযোগ সুবিধা পায় না |এ দেশে ফরেনসিক মেডিসিনে পোস্টগ্র্যাজুয়েট বা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এখনো হাতে গোনা আর সরকারী চাকুরীতে থাকা’টা আরো বেশী পীড়াদায়ক | শুধু নামের আগে অধ্যাপক শব্দ’টি যোগ হওয়া ছাড়া সততা ভিত্তিক কোন মূল্যায়ন নেই এই দেশে | আর তাই অন্যান্য বিভাগের ডাক্তার’গনও ভাবেন সরকারীভাবে যারা এই বিভাগে আছেন বা সদর হাসরপাতালগুলোতে এই দায়িত্ব পালন করেন তাদের উপার্জনে অনৈতিকতার সংযোগ আছে | উদোর পিন্ডি বুদোর ঘাড়ে চাপানোর জন্যই যদি এই বিভাগ’টি ব্যবহৃত হয় তবে ভবিষ্যতে অন্তত সরকারীভাবে বিশেষায়িত ডাঃগন নিরুৎসাহিত হবেন, সন্দেহ নেই |

  5. I thought we doctors have no sex. We are just doctors. I thought we took an oath to never let gender make my judgement biased towards patient. apartently our judges think that’s a joke.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

মাদারীপুর সদর হাসপাতালে মানববন্ধনঃ চিকিৎসকের উপর হামলার প্রতিবাদ এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবী

Sun Apr 24 , 2016
চিকিৎসকের উপর হামলার প্রতিবাদে এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার দাবীতে মাদারীপুর সদর হাসপাতালের সামনে সকল ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল সহকারী ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন। অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট যথারীতি চলছে। মানববন্ধনের কিছু ছবি-      News Courtesy : ‎Khandoker Mynul Hasan‎  Share on FacebookTweetFollow us

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo