সব বাবার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা || ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ জুন, ২০২২, সোমবার

ইমেরিটাস অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক।

মা একটি বর্ণের আর দুটি বর্ণের খুব ছোট একটি শব্দ বাবা; কিন্তু বাস্তবতায় তার গভীরতা আর বিশালতা সীমাহীন। আদর-শাসন, স্নেহ-মায়া-মমতা, সন্তানকে ভালো রাখতে নিজের তাজা প্রাণটুকুও যিনি দিতে প্রস্তুত থাকেন তিনি বাবা। প্রতিটি বাবার মাধ্যমেই তাঁর সন্তানের জীবনের শুরু, যার ঋণ পরিমাপ করার ক্ষমতা সন্তানদের হয়তো প্রকৃতি দেননি। জেমসের গাওয়া একটা বিখ্যাত জনপ্রিয় গানের কলি দিয়ে শুরু করছি আজকের বাবা দিবসের লেখাটি-

‘ছেলে আমার বড় হবে,

মাকে বলত সে কথা…

মানুষের মতো মানুষ এক,

লেখা ইতিহাসের পাতায়…

নিজ হাতে খেতে পারতাম না,

বাবা বলত ও খোকা;

যখন আমি থাকব না

কী করবি রে বোকা?

এ তো রক্তের সাথে রক্তের টান

স্বার্থের অনেক ঊর্ধ্বে,

হঠাৎ অজানা ঝড়ে তোমায় হারালাম

মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ল…

বাবা কত দিন কত দিন দেখি না তোমায়,

কেউ বলে না তোমার মতো

কোথায় খোকা ওরে বুকে আয়…

বাবা কত রাত কত রাত দেখি না তোমায়,

কেউ বলে না মানিক কোথায় আমার

ওরে বুকে আয়…

চশমাটা তেমনি আছে,

আছে লাঠি ও পাঞ্জাবি তোমার,

ইজি চেয়ারটাও আছে,

নেই সেখানে অলস দেহ শুধু তোমার…

আজানের ধ্বনি আজ শুনি,

ভাঙাবে না ভোরে ঘুম জানি,

শুধু শুনি না তোমার সেই

দরাজ কণ্ঠে পড়া পবিত্র কোরানের বাণী…’

ছবিঃ প্রতীকী।

মা দিবস কয়েক শ বছর ধরে পালন করা হচ্ছে, কিন্তু সে তুলনায় বাবা দিবসটি অনেক নতুন।

বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে বাবা দিবস পালন শুরু হয়। মায়েদের পাশাপাশি বাবারাও যে সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল তা বোঝানোর জন্যই দিবসটি পালন করা হয়। মা দিবস বা বাবা দিবস সন্তানের চোখের সামনের পর্দাটি খুলে ফেলে পিতা-মাতার প্রতি তার দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। পারিবারিক বন্ধন দৃঢ় করতে মা দিবস বা বাবা দিবসের আলাদা গুরুত্ব রয়েছে।

মোট কথা আমাদের পরিবার তথা সমাজে বাবার যে গুরুত্ব তা আলাদাভাবে তুলে ধরাই বাবা দিবস পালনের মূল উদ্দেশ্য।
বাবার প্রতি শ্রদ্ধা-ভালোবাসা জানানোর জন্যই প্রতি বছর ‘বিশ্ব বাবা দিবস’ পালিত হয়ে আসছে। পৃথিবীর সব বাবার প্রতি শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা প্রকাশের ইচ্ছা থেকে যার শুরু। বাবা দিবস হলো বাবার প্রতি সন্তানের ভালোবাসা প্রকাশের একটি অন্যতম দিন।

সারা বিশ্বের সন্তানরা বাবাদের বিশেষভাবে সম্মান জানানোর জন্য জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস হিসেবে পালন করেন। সে হিসেবে আজ ১৯ জুন পালিত হচ্ছে বাবা দিবস। সারা পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশেও দিনটি উদ্যাপন করা হয়। দিবসটিতে পৃথিবীর সব বাবার জন্য শুভেচ্ছা। আমাদের বিশ্বস্ততার জায়গা হলো জন্মদাতা মা-বাবা।

এ পৃথিবীতে তাঁদের মতো আপনজন আর কেউ নেই। তাঁরা আমাদের জন্য মহান আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত।
মহান আল্লাহতায়ালা বলেছেন, ‘তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন তাকে ছাড়া অন্য কারও ইবাদত কোরো না এবং পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদের “উহ্” শব্দটিও বোলো না, তাদের ধমক দিও না এবং তাদের সঙ্গে আদবের সঙ্গে কথা বোলো। তাদের সামনে করুণভাবে বিনয়ের সঙ্গে নত থাকবে। আর এরূপ দোয়া করতে থাকবে, হে আমার পরোয়ারদেগার! তাদের উভয়ের প্রতি দয়া কর যেরূপ তারা আমাকে লালনপালন করেছেন শৈশবকালে। ’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত ২৩-২৪)

প্রিয় নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত। আর সেই বেহেশত অর্জন করার পূর্বশর্ত হচ্ছে তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করা, নরম ভাষায় কথা বলা, সম্মানের চোখে দেখা। ’ পিতা-মাতা সব সময় সন্তানের কল্যাণের কথা ভাবেন। তাঁদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে কোনো সন্তান কখনো সফলতার পথে এগিয়ে যেতে পারে না। মা-বাবার অবাধ্য সন্তানের ধ্বংস অনিবার্য। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর সন্তুষ্টি পিতার সন্তুষ্টিতে এবং আল্লাহর অসন্তুষ্টি পিতার অসন্তুষ্টিতে। ’ (তিরমিজি)

শাস্ত্রে বলা হয়- ‘পিতা স্বর্গ পিতা ধর্ম পিতাহী পরমং তপঃ। পিতরী প্রিতিমাপন্নে প্রিয়ন্তে সর্ব দেবতা। ’ অর্থ- পিতাই ধর্ম, পিতাই স্বর্গ, পিতাই পরম তপস্যা।

সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসা চিরন্তন। বাবা মানে ভরসার জায়গা, পরম নির্ভরতার প্রতীক, এক সাগর ভালোবাসা। বাবা মানে উত্তপ্ত সূর্যের নিচে সন্তানের শীতল ছায়া। বাবা সন্তানের মাথার ওপর বটবৃক্ষের ছায়ার মতো, যাঁর স্নেহ অবারিত ধারায় শুধু ঝরতেই থাকে। বাবা যখন শিশুর কচি হাতটি আঁকড়ে ধরে হাঁটতে থাকেন, আদর করে কোলে তুলে দুই গালে দুটো চুমু দেন তখন দিবালোকের মতো স্পষ্ট হয় তাঁদের এ অটুট সম্পর্ক কতটা গভীর।

বাবাকে কে না ভালোবাসে! বাবা সব সন্তানের কাছেই পরম পূজনীয়, সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল। বাবার মাধ্যমেই সন্তানের জীবনের শুরু। বাবার ছায়ায় বড় হওয়া সন্তান জানে কতটা নির্ভরতায় বেড়ে উঠেছে সে, আবার জীবন কত কঠিন তা জানে বাবাহীন বড় হওয়া সন্তানরা। যার বাবা নেই একমাত্র সে-ই জানে বাবা না থাকার বেদনা। বাবা শব্দটি পৃথিবীর সর্বত্র নিখাদ ভালোবাসার সঙ্গেই উচ্চারিত হয়। কারণ সন্তানের ভালোর জন্য জীবনের প্রায় সবকিছুই নির্দ্বিধায় ত্যাগ করতে হয় বাবাকে। বাবার রূপে ফুটে ওঠে কখনো শাসন, কখনো ভালোবাসা।

সম্ভবত যুক্তরাষ্ট্রে বাবা দিবসটি প্রথম পালন করা হয়, যদিও শুরু নিয়ে বেশ কয়েকটি গল্প প্রচলিত আছে।

১৯০৮ সালের ৫ জুলাই আমেরিকার পশ্চিম ভার্জিনিয়ার ফেয়ারমন্টের এক গির্জায় দিনটি প্রথম পালিত হয়। ডড নামের ওয়াশিংটনের এক ভদ্রমহিলার মাথায় পিতৃদিবসের আইডিয়া আসে। ডড এ আইডিয়াটা পান গির্জার এক পুরোহিতের বক্তব্য থেকে, সেই পুরোহিত আবার মাকে নিয়ে অনেক ভালো ভালো কথা বলছিলেন। ডডের মনে হয়, তাহলে বাবাদের নিয়েও তো কিছু করা দরকার। ডড তাঁর বাবাকে খুব ভালোবাসতেন। তিনি সম্পূর্ণ নিজ উদ্যোগেই পরের বছর, ১৯ জুন, ১৯১০ সালে বাবা দিবস পালন শুরু করেন।

অন্য গল্পটি হলো, ওয়াশিংটনের সোনোরা লুইস স্মার্ট নামের একজন ভদ্রমহিলা এ দিনটি উদ্যাপন শুরু করেন। ষষ্ঠ সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে মা মারা গেলে তাঁর বাবা ছয় সন্তানকে বড় করে তোলেন। সোনোরা লুইস স্মার্ট ১৯০৯ সালে গির্জায় কোনো একজন পাদরির একটি বক্তব্যে ‘মা দিবসের’ কথা জানতে পারেন। তখন তাঁর মনে হলো, বাবার জন্যও এ রকম একটি দিবস পালন করা উচিত। তাঁর এ সুন্দর ধারণাটা স্থানীয় বেশ কয়েকজন ধর্মযাজক গ্রহণ করেন। এর পর ১৯১০ সালের ১৯ জুন প্রথমবারের মতো বাবা দিবসটি পালন করা শুরু হয়।

আসলে মা দিবস নিয়ে মানুষ যতটা উৎসাহ দেখাত, বাবা দিবসে মোটেও তেমনটা দেখাত না, বরং বাবা দিবসের বিষয়টি তাদের কাছে এতটা গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আপাতদৃষ্টিতে অনেকের কাছেই মা দিবস বা বাবা দিবস পালনের বিষয়টি খুব একটা গুরুত্ব পায় না। তবে ধীরে ধীরে অবস্থা পাল্টায়, ১৯১৩ সালে আমেরিকান সংসদে বাবা দিবসকে ছুটির দিন ঘোষণার জন্য একটি বিল উত্থাপন করা হয়। ১৯২৪ সালে তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ক্যালভিন কুলিজ বিলটিতে পূর্ণ সমর্থন দেন। অবশেষে ১৯৬৬ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট লিন্ডন বি. জনসন সিদ্ধান্ত নেন, প্রতি বছর জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালন করা হবে। ছয় বছর পর প্রেসিডেন্ট রিচার্ড নিক্সন একে আইনে পরিণত করেন। বিশ্বের বেশির ভাগ দেশে জুনের তৃতীয় রবিবার বাবা দিবস পালিত হয়।

সন্তানের জন্য বাবার ভালোবাসা অসীম, অকৃত্রিম, স্বার্থহীন। মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর সন্তানের প্রতি বাবার ভালোবাসার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে আছেন। মুঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসে একটি ঘটনা সবাইকে হতচকিত করে। বাবরপুত্র হুমায়ুন জটিল রোগে আক্রান্ত হলেন। বাঁচার কোনো আশা রইল না। সম্রাট বাবর রোগগ্রস্ত পুত্র হুমায়ুনকে বাঁচাতে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করেছিলেন তাঁর নিজের জীবনের বিনিময়ে পুত্রের জীবন ভিক্ষার। হুমায়ুন সুস্থ হয়ে ওঠেন আর মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বাবর। এমন স্বার্থহীন যাঁর ভালোবাসা, সেই বাবাকে সন্তানের খুশির জন্য জীবনের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। বাবা দিবসে সন্তানদের সামনে সুযোগ আসে বাবাকে অন্তরের অন্তস্তল থেকে ভালোবাসা জানানোর। সমাজে এবং পরিবারে বাবাদের যে অবদান, বাবা দিবস পালনে নিজের সন্তানের মূল্যায়নে বাবারাও কিন্তু বেশ পুলকিত বোধ করেন।

অনেক সন্তানই আছে যারা পিতা-মাতার দেখাশোনার প্রতি খুব একটা মনোযোগী নয়। সংসারের জন্য কত কষ্টই না করতে হয় একজন বাবাকে। তিনি তাঁর সন্তানকে জীবনের সব উত্তাপ থেকে সামলে রাখেন। অথচ সেই বাবাকে আমরা অনেকেই কষ্ট দিতেও দ্বিধা করি না। সন্তানের সঙ্গে বাবার যে নিবিড় সম্পর্ক, তা আমাদের সমাজে কতটুকু বিদ্যমান? বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক সন্তান তাদের বাবাকে ভাবে বোঝা। বাবার বুকফাটা তীব্র যন্ত্রণার আর্তনাদ না শোনার মতো সন্তানও আছে এ সমাজে! মাথার ঘাম পায়ে ফেলে যে বাবা সন্তানদের মানুষ করেন, সব সঞ্চয় ব্যয় করেন, হাজারো কষ্ট সয়ে তিলে তিলে যে সন্তানকে বড় করেন, যে বাবা-মা একসময় নিজে না খেয়েও সন্তানের মুখে তুলে খাইয়ে দিতেন, জীবনসায়াহ্নে এসে বৃদ্ধ বয়সে অনেকেই অনেকটা অসহায়। তাঁরা নিজেদের জীবনের সব ধনসম্পদ, সময় বিনিয়োগ করেছিলেন সন্তানের জন্য, রাখেননি নিজের জন্য কিছুই তাঁরাই আজ সন্তানের অবহেলা-অযতের কারণে, কখনো কখনো দুর্ব্যবহারের শিকার হয়ে আশ্রয় নেন বৃদ্ধনিবাসে! দেখা যায় আর্থিকভাবে সচ্ছল সন্তান নৈতিকতার অবক্ষয়ের চূড়ান্ত দৃষ্টান্ত স্থাপন করে বাবাকে ত্যাগ করে ফেলে যাচ্ছে এসব বৃদ্ধাশ্রমে, তাঁদের খরচ দেওয়া দূরে থাক একবার গিয়ে খবরও নেয় না। আস্তাকুঁড়ে আবর্জনা ফেলার মতো করে একবার বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে এসেই মনে হয় দায়িত্ব শেষ।

করোনা মহামারির এই সময়ে তাদের দুর্ভোগের মাত্রা যে কত বেড়ে গেছে তা বলাই বাহুল্য। খবরে প্রায়ই দেখা যায়, বৃদ্ধ মা-বাবাকে রাস্তায় ফেলে চলে গেছে সন্তান। এই তো কদিন আগের ঘটনা, এক ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর তাঁর স্ত্রী, পুত্র, মেয়ে সবাই মিলে তাঁকে একটি ঘরে বন্দি করে রাখে। তিনি যাতে ঘর থেকে বের হতে না পারেন সেজন্য বাইরে থেকে ছিটকিনি লাগিয়ে রাখেন। মৃত্যুর আগে সেই ভদ্রলোক অনেক ডাকাডাকি করলেও কেউ দরজা খুলে দেয়নি, এমনকি তাঁকে খাবার পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। শেষ পর্যন্ত ভদ্রলোকটি মারা গেলেন, মারা যাওয়ার পর পরিবারের কেউ তাঁকে শেষ দেখা দেখে দাফনটুকু করতেও আসেনি, পড়শিরা তাঁকে দাফন করেন।

আরও একটি ঘটনার অবতারণা করছি। এক বাবা একজন পুত্রসন্তান পেতে অস্থির, তাঁর স্ত্রী পরপর নয়টি কন্যাসন্তান জন্ম দেন। এর পরের সন্তানটি হয় পুত্র, বাবা পরম শান্তির সঙ্গে পুত্রসন্তানের মুখ দেখে আনন্দে আত্মহারা হন। আস্তে আস্তে ছেলেটি বড় হতে থাকে, সব মেয়ের বিয়ে হয়, তারা স্বামীর বাড়ি চলে যায়। একসময় বাবা যখন অকর্মণ্য বৃদ্ধ অবস্থায় পতিত হন, ওই আদরের ছেলেটাই বাবাকে বোঝা মনে করতে থাকে। কোনো একসময় বাবা একটি ছোট্ট আবদার করে বসেন, এতে ছেলেটি ক্ষিপ্ত হয়ে বাবাকে মারতে মারতে বাড়ির বাইরে রাস্তার ধারে ফেলে আসে। যে বাবা তাঁর হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর সবকিছু বিসর্জন দিয়ে ছেলেকে (অ)মানুষ করে তোলেন, শেষ বয়সে এ-ই তাঁর প্রতিদান।

নানা কারণে একান্নবর্তী পরিবারগুলো ভেঙে যাচ্ছে, আর তাতে স্থান হচ্ছে না বাবা-মায়ের। ঝামেলা এড়াতে বয়স্ক বাবা-মাকে বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু সেখানে তাঁদের দিনগুলো কত কষ্টে কাটে সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেওয়াটাও অনেকে প্রয়োজন মনে করেন না। সন্তান নিজে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার আগ পর্যন্ত বাবা-মাকে নিঃশেষ করে তাঁদের শেষ বয়সে ছুড়ে ফেলার জন্যই এ রকম একটা বৃদ্ধাশ্রম হয়তো দরকার ছিল।

সন্তানদের পক্ষ থেকে বিশ্ব বাবা দিবসে সব বাবার প্রতি রইল সম্মান, শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও শুভকামনা। ছোট-বড়, অখ্যাত-বিখ্যাত সবার কাছেই বাবা অসাধারণ। নির্ভরতা ভরসার গভীর সম্পর্কের নাম বাবা। বাবার স্নেহ-ভালোবাসা সবারই প্রথম চাওয়া আর পাওয়া। সন্তানের প্রতি বাবার যেমন ভালোবাসা তেমনি বাবার প্রতিও সন্তানের হৃদয়ে পুঞ্জীভূত থাকুক গভীর ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা প্রতিদিন প্রতিক্ষণ। বিশ্বের সব বাবা-মা ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন- এটাই আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা; তিনি আমাদের প্রিয় বাবা-মাকে দীর্ঘায়ু দান করুন, সুস্থ রাখুন।

লেখকঃ মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক।

তথ্যসূত্রঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন

Sadia Kabir

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

এমবিবিএস চূড়ান্ত পেশাগত লিখিত পরীক্ষা স্থগিতঃ চিকিৎসা অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যাল

Mon Jun 20 , 2022
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, সোমবার, ২০ জুন, ২০২২ চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতার কারণে চিকিৎসা অনুষদ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কতৃক অনুষ্টিতব্য সকল পেশাগত এমবিবিএস (নতুন ক্যারিকুলাম) পরীক্ষা নভেম্বর/২০২১ এবং (পুরাতন ক্যারিকুলাম) পরীক্ষা জানুয়ারি/২০২২ ইং সালের অদ্য ২০/০৬/২০২২ ইং তারিখের বায়োকেমিস্ট্রি ও অবস এন্ড গাইনী (পেপার-২) এবং এনাটমি ও মেডিসিন (পেপার-১) এর লিখিত পরীক্ষা সমূহ স্থগিত করা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo