মুক্তামনির প্রথম “সফল” অস্ত্রোপচার : যে চিকিৎসা অসম্ভব বলে জানিয়েছিল সিংগাপুর

download (1)

শিশু মুক্তামনির প্রথম অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।অথচ এই চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন সিংগাপুরের চিকিৎসকগন।

আজ শনিবার , সকালে মুক্তামনিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে ঢোকানো হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে তার ডান হাতের আক্রান্ত অংশটি ফেলে দেওয়া হয় বলে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

20729384_1513561732062470_8780530647009350399_n

 

২০ সদস্যের বেশি চিকিৎসকদের সমন্বয়ে এই জটিল  অস্ত্রোপচার শেষে, সোয়া ১১টার দিকে অস্ত্রোপচার কক্ষ থেকে বেরিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন চিকিৎসক দল।

সামন্ত লাল বলেন, “আমরা প্রাথমিকভাবে সফল। হাতটি রক্ষা করে ডিজিজড অংশটি কেটে নেওয়া হয়েছে।হাতের ফুলে যাওয়া সংক্রমিত অংশটি কেটে ফেলে দেওয়ার পর হাতটি  ভালো  আছে।  এরপর পর্যায়ক্রমে আরও পাঁচ-ছয়টি অস্ত্রোপচার করতে হবে।”

 

ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক মো. আবুল কালাম বলেন, “স্কিন গ্রাফটিংসহ আরও পাঁচ-ছয়টি অপারেশন লাগতে পারে। প্রতি সপ্তাহে অথবা ১০ দিন অন্তর এই অপারেশনগুলো হবে।ডান হাতটি রক্ষা করাই ছিল আমাদের মূল লক্ষ্য। সম্মিলিত প্রচেষ্টার কারনেই প্রাথমিক সফলতা পেয়েছে।”

মুক্তামনি পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত কি না- সাংবাদিকদের এ প্রশ্নে ডা. আবুল কালাম বলেন, “বুক ও কাঁধের সংক্রমিত অংশ এখনও রয়ে গেছে। আমরা তা সরিয়ে দেব। এতে কিছুটা সময় লাগবে।আমরা হাতের যে সকল অংশে এগ্রেসিভ সংক্রমণ হয়েছিল তা সরিয়ে দিয়েছি। আগামী ৪-৫ দিন মনিটরিংয়ে রাখব। এরপর পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

অস্ত্রোপচার শুরুর আগে মুক্তামনির মা আয়েশা খাতুন দেশবাসির কাছে  তার সন্তানের সুস্থতার জন্য  দোয়া চেয়েছে ।

1499958357

সাতক্ষীরার ১২বছরের শিশু মুক্তামনির বায়োপসি রিপোর্টে রক্তনালীতে টিউমার শনাক্ত করা হয়েছে।

গত শনিবার ০৫ আগস্ট,২০১৭ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ডা. সামন্ত লাল সেন সহ আট সদস্যের একটি মেডিকেল বোর্ড সফলভাবে মুক্তামনির বায়োপসি অপারেশন সম্পন্ন করেন।

এ বিষয়ে ডা. সামন্ত লাল জানান, ‘মুক্তামনির বায়োপসি রিপোর্টে রক্তনালীতে টিউমার ধরা পড়েছে। এ রোগটিকে ইংরেজিতে বলে ‘হেমানজিওমা’ এবং এটি বিরল রোগ নয়। তার রিপোর্টটি নিয়ে আমরা বেলা ১১টার পর ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড আবার বসবো। রিপোর্টটি নিয়ে আমাদের মধ্যে পর্যালোচনা ও এ বিষয়ে করণীয় নিয়ে আলোচনা হবে’।

উল্লেখ্য, মুক্তামনির রোগটি নিয়ে ঢামেক হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বোর্ড মিটিং করেন সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগের চিকিৎসকরা। এবং সিঙ্গাপুরের চিকিৎসকরা পরবর্তীতে জানিয়েছিল এ রোগটি ভালো হবার নয় ও সেটি অস্ত্রোপচার করার মতোও নয়। এ পর্যবেক্ষণ জানার পর গত ০২ আগস্ট ১৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের সভায় ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সকল ধরনের সর্তকতা অবলম্বন করে বায়োপসি করার সিদ্ধান্ত নেন চিকিৎসকরা।

 

মুক্তামনির বাবা মুদি দোকানি ইব্রাহীম হোসেন জানান, জন্মের দেড় বছর পর একটি ছোট মার্বেলের মতো গোটা দেখা দেয়। এরপর থেকে সেটি বাড়তে থাকে। এ রোগে তার ডান হাত ফুলে যায়। শরীরের অসহ্য ব্যথা ও যন্ত্রণায় মুক্তামনি বসতেও পারে না। এরপর হাতে পচন ধরে। হাতের সঙ্গে বুকের একাংশেও ছড়িয়ে পড়েছে রোগটি। দীর্ঘ নয় বছরেও মুক্তার রোগ ধরতে পারেননি চিকিৎসকরা। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে মুক্তামনির চিকিৎসা বাংলাদেশেই চলছে।

 

 

তথ্য ঃ নিজস্ব প্রতিবেদক এবং বিডিনিউজ২৪.কম

Ishrat Jahan Mouri

Institution : University dental college Working as feature writer bdnews24.com Memeber at DOridro charity foundation

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

মুক্তামনির সফল অস্ত্রোপচার, চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী

Sat Aug 12 , 2017
মুক্তমনির সফল অস্ত্রোপচারের খবর পেয়ে , চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শিশু মুক্তামনির প্রথম অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসকরা।অথচ এই চিকিৎসা প্রায় অসম্ভব বলে জানিয়ে দিয়েছিলেন সিংগাপুরের চিকিৎসকগন। আজ শনিবার , সকালে মুক্তামনিকে অস্ত্রোপচার কক্ষে ঢোকানো হয়। প্রায় আড়াই ঘণ্টার অস্ত্রোপচারে তার ডান হাতের আক্রান্ত অংশটি […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo