করোনা পরিস্থিতিতে কেউ মারা গেলে কি করব?

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

এই সময়ে মৃত মানুষের ব্যাপারে অনেকেই আমাকে ফোন দেন যে “এক আত্মীয় হঠাৎ করে মারা গেছে কি করবো?”
আমি ফোনে সমাধান দেই। ফোনে এতো মানুষকে সমাধান দিতে হয় তাই এবার লিখতে বসলাম। অনেক প্রতিবেশী আবার উল্টোটা ও বলেন। যেমন ঐ রোগীর শ্বাসকষ্ট ছিলো,জ্বর ছিলো। আত্মীয় স্বজনরা বলেন হঠাৎ করে মারা গেছে অথবা একটু শ্বাসকষ্ট হয়েছিলো, জ্বর ছিলো তারপর মারা গেছে সকালে/ রাতে। অথবা অনেকে বলেন ব্রেইন স্ট্রোক করে মারা গেছে।কার কথা যে সত্যি বুঝা মুশকিল। একেকজন একেকরকম কথা বলেন।

মানুষ অনেকভাবে মারা যেতে পারে। এখনকার সময়ের একটি কারন হলো করোনা ভাইরাস, যেটি মারাত্মকভাবে ছড়ায়।যেহেতু এটি ছড়ায় তাই আমাদের অনেক সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে একটি মাসালা পাবলিকদের জন্য দেওয়া হয়েছে এর কবরস্থ করার ব্যাপারে। পাশ্চাত্যের লোকেরা পুড়িয়ে ফেলে এদের ইলেকট্রিক চুল্লীতে। কিন্তু আমাদের সিস্টেমে কবর দিই আমরা, হিন্দুরা সৎকার করেন। মৃত ব্যক্তি থেকে ভাইরাস ছড়ায় না ধরা হয়ে থাকে কারন সেতো আর শ্বাস নিচ্ছেনা। আর তিনঘন্টা পরে স্যাম্পল নিলে সেটি পরীক্ষায় ধরা পরে না। তাই আমরা ধরে নেই যে তিনঘন্টা পরে নিরাপদে কবরস্থ করা যাবে। তাই আমরা বলছি আরো এক ঘন্টা অর্থাৎ চারঘন্টা পরে ধর্মীয় রীতি অনুসারে কবরস্থ অথবা সৎকার করার জন্য। কোন লোক না পাওয়া গেলে আমরা ব্যবস্থা নিবো।

সমস্যা হলো যেটি শিওর না করোনা কি না সে ক্ষেত্রে। পরীক্ষা করে কনফার্ম হতে সময় প্রয়োজন। এতো সময় লাশ রাখা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আমাদের সমাধান হলো যে কোন মানুষ যে কোন কারনে মারা গেলেই এই সময়টায় সাবধানতা অবলম্বন করবেন। চার-পাঁচজন সুস্থ যুবক যাদের বয়স হবে ২০-৪০ এর ভিতরে যাদের আগে থেকে শ্বাসকষ্ট রোগ নেই তারা গোসল করাবেন, তারাই কাফনের কাপড় পরাবেন,তারাই কবরে নামাবেন। সবাই হাতের গ্লাভস পরে কাজ করবেন।
স্বল্প লোকে ৫-১০ জন লোকে জানাজা পরে লাশ কবরস্থ করবেন।কবরটা ৫ ফুট গভীরে হবে। জানাজার সময় ইমাম লাশ থেকে ১০ ফুট দূরে দাড়াবেন। কমপক্ষে পাচঁ ফুট দূরে দূরে দাড়াবেন আপনারা জানাজা পড়ার সময়।

যারা এই কবরে নামানো, গোসল করানো, কাফনের কাপড় পরানোর কাজ করবেন তারা ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবেন। মৃত ব্যক্তি মহিলা হলে গোসল করানোর মহিলা সদস্যগন ও হোম কোয়ারেন্টাইনে চলে যাবেন ১৪ দিন।
তাহলেই আর কোন সমস্যা থাকছে না এবং জনস্বার্থ বিবেচনায় আপনারা এই স্বেচ্ছাবন্দীত্ব বা হোম কোয়ারেন্টাইন মেনে নিবেন। এর মধ্যে কোন শারীরিক সমস্যা হলে আমাদের হটলাইন নম্বরগুলোয় যোগাযোগ করবেন। আর আমাদের সুনির্দিষ্ট স্বাস্থ্যকর্মী আছে আপনাদের এলাকায়। তাকে ফোন দিবেন এবং সে তার সুনির্দিষ্ট পোশাক পরে এই কাজগুলো মনিটর করবেন। মানুষ মারা যাওয়া আল্লাহর একটি সিস্টেম।আমরা সবাই এই সিস্টেমের অংশ।

আমরা আমাদের প্রিয় মানুষদের লাশ সম্মানজনকভাবে দাফন করতে চাইবো এটিই স্বাভাবিক। এই সম্মান দিতে গিয়ে যদি আমরা নিজেরাই অনেক মৃত্যুর কারন হই তবে সেটি হবে খুবই দুখজনক। কাজেই খুব আবেগপ্রবন না হয়ে আমরা যেন পুরো সমাজের কথা চিন্তা করি। সবার ভালোর চিন্তা করে আমরা যেন জনসমাগম থেকে বিরত থাকি। আমাদের দেখানো নিয়ম সঠিকভাবে আপনারা পালন করলে আশা করি কোন সমস্যা হবে না, বড় কোন সামাজিক ক্ষতি হবে না।

লেখকঃ ডা. মোহাম্মদ আল-মামুন
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা
বাঞ্ছারামপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

জামিল সিদ্দিকী

A dreamer who want to bring positive changes in health sector in Bangladesh.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ডেন্টাল সার্জনদের সহযোগিতায় বাংলাদেশ ডেন্টাল সোসাইটির তহবিল

Mon Apr 27 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ সোমবার, ২৭শে এপ্রিল, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ করোনা পরিস্থিতিতে সংক্রমণের উচ্চ ঝুঁকি থাকায় চিকিৎসকদের অনেকেই বন্ধ করেছেন নিজস্ব চেম্বারে সেবাদান। তেমনি বাংলাদেশের ডেন্টাল সার্জনদের অনেকেই এখন নিজ নিজ চেম্বার দীর্ঘদিন বন্ধ রাখায় আর্থিক ভাবে হচ্ছেন ক্ষতির সম্মুখীন। দেশের এই ক্রান্তি কালে পরিস্থিতির শিকার এসব ডেন্টাল সার্জনদের পাশে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo