এবার করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিন নকশা উন্মোচিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, শনিবার, ২৩ মে, ২০২০

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস। সারাবিশ্বে আক্রান্তের সংখ্যা ৩ মিলিয়ন ছাড়িয়েছে বেশ কয়েকদিন আগেই। পৃথিবীব্যাপী মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। বাংলাদেশও ইতোমধ্যে করোনায় ভয়াল থাবায় আক্রান্ত। দিনদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

এবার করোনা ভাইরাসের পূর্ণাঙ্গ জিন নকশা উন্মোচিত হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। করোনা ভাইরাসের পাঁচটি নমুনার পূর্ণাঙ্গ জিন নকশা উন্মোচন (জিনোম সিকোয়েন্সিং) করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির উচ্চতর বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রে (কার্স) স্থাপিত করোনা পরীক্ষার ল্যাবরেটরিতে এটি করা হয়েছে।

জিনোম হচ্ছে কোনো জীবের (উদ্ভিদ ও প্রাণী) বংশগতি বৈশিষ্ট্যের নকশা। উদ্ভিদ কিংবা প্রাণীর জিনোমে নিউক্লিওটাইডের (একধরনের জৈবিক অণু) বিন্যাস লিপিবদ্ধ করাকে বলে জিনোম সিকোয়েন্সিং। এর ওপরই নির্ভর করে সংশ্লিষ্ট জীবের বৈশিষ্ট্য।

প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করা সম্ভব হলে ধাপে ধাপে করোনাভাইরাসের আরও ১০০টি নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সিং করবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক দল। আজ শনিবার (২৩ মে) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শরীফ আখতারুজ্জামান এমনটি জানিয়েছেন। এর আগে গত ১৪ মে সংবাদ সম্মেলন করে করোনাভাইরাসের জিন রহস্য উন্মোচনে বিস্তৃত গবেষণার ঘোষণা দিয়েছিলেন ওই কমিটি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের বিশেষজ্ঞ শিক্ষকেরা।

গত ১২ মে, ড. সমীর সাহা ও তাঁর মেয়ে ড. সেঁজুতি সাহার গড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান “চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশন দেশে প্রথম করোনা ভাইরাসের জিন নকশা উন্মোচন করে। এ কাজে নেতৃত্ব দেন প্রতিষ্ঠানটির অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা নিজেই।

এছাড়াও, গত ২১ মে বাংলাদেশে সংক্রমিত হওয়া ভাইরাসটির ৭টি নমুনার পূর্ণাঙ্গ জিনোম সিকোয়েন্সিং করার কথা জানায় বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট এবং চট্টগ্রামের ভেটেরেনারি ও অ্যানিমেল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শরীফ আখতারুজ্জামান স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে,

“করোনাভাইরাসের জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের পর আক্রান্ত ব্যক্তিদেরও এর আওতায় আনা হবে। বিশেষ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত অথচ লক্ষণগত ভিন্নতা রয়েছে, এমন ব্যক্তিদের এক্সোম (মোট জিনের সমষ্টি) সিকোয়েন্সিংয়ের মাধ্যমে জিনগত বৈশিষ্ট্য নিরূপণ করা হবে। এই গবেষণার ফলাফল বাংলাদেশে চলমান করোনাভাইরাস মহামারির গতিপ্রকৃতি, উৎস, জিনগত বৈশিষ্ট্যের পরিবর্তন ও ভাইরাসটির বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ ও ভ্যাকসিন তৈরিতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্ট গবেষকেরা অভিমত দিয়েছেন।”

এই প্রকল্পে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগ, জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগ, অণুজীববিজ্ঞান বিভাগ এবং কার্সের বিশেষজ্ঞ শিক্ষক ও বিজ্ঞানীরা যুক্ত আছেন৷ গবেষক দলটির নেতৃত্বে রয়েছেন জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের করোনাভাইরাস রেসপন্স টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক শরীফ আখতারুজ্জামান।

প্রসঙ্গত, করোনার জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের এই ডেটা (তথ্য) ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আন্তর্জাতিক তথ্যভান্ডার ‘গ্লোবাল ইনিশিয়েটিভ অন শেয়ারিং অল ইনফ্লুয়েঞ্জা ডেটা (জিআইএসএআইডি)’–তে গৃহীত হয়েছে বলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

অংকন বনিক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: গত ২৪ ঘণ্টায় নোয়াখালী জেলায় নতুন করে আরো ৭৭ জন শনাক্ত

Sun May 24 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, শনিবার, ২৩ মে, ২০২০ দিনদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন জেলায় মিলছে করোনা রোগীর সন্ধান। গত ২৪ ঘন্টায় নোয়াখালী জেলায় নতুন করে আরো ৭৭ জনের দেহে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে, জেলাটিতে যা একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এ নিয়ে জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo