রক্ত পরিসঞ্চালনঃ জানার আছে অনেককিছু

 

ভদ্র সমাজে একটি কথা প্রচলিত আছে- ladies first. কিন্তু কথাটি রক্ত দান সংক্রান্ত ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়, এমনটাই জানা ছিল সবার যারা রক্ত পরিসঞ্ছালন নিয়ে কাজ করতেন তাদের কাছে।

মহিলারা কি রক্ত দান করা থেকে বিরত থাকবেন তাহলে? বিষয়টি আসলে তেমন নয়। মহিলারা রক্ত দান করতে পারবেন তবে কেউ যদি প্রেগন্যান্ট হয়ে থাকেন কখনও তবে তিনি পুরুষদের রক্ত দান করা থেকে বিরত থাকবেন বিশেষ করে প্লাজমা ব্যবহারের প্রয়োজন হলে।

এর কারন হিসাবে এতদিন যেটি ধারনা করা হত তা হল প্রেগন্যান্ট হলে রক্তে HLA(Human Leucocyte Antigen) এর পরিবর্তন আসে কারন আরেকটি জীবন তার সাথে জড়িত হয় তখন। কতটুকু কি হবে তা নির্ভর করে কয়েকটি বিষয়ের উপর-

-প্রেগ্নেন্সি থেকে রক্ত দানের বিরতি- যত দেরী হবে প্রেগ্নেন্সি থেকে তত বিপদের মাত্রা কমতে থাকে।

-কি ধরনের ডেলিভারি হয়েছে- প্রেগ্নেন্সি কি শেষ পর্যন্ত বজায় ছিল নাকি এবরশন হয়ে গিয়েছিল তার উপরও নির্ভর করে। যত দিন গড়াবে তত বিপদের মাত্রা বাড়বে( রক্ত দান সংক্রান্ত, অন্য বিপদ নয়)।

এই HLA-ই আসলে অনেক ঝামেলার সৃষ্টি করে রক্ত পরিসঞ্চালনের ক্ষেত্রে৷

-Transfusion associated graft versus host disease( TA-GVHD)

– সহজে রক্তের ক্রস ম্যাচ না হওয়া ফলে রক্ত দাতার সংখ্যা কমে যাওয়া৷

-Transfusion related acute lung injury (TRALI). ইত্যাদি।

এর মাঝে সর্বশেষ টি ছিল এতদিন নূন্যতম একবার প্রেগন্যান্ট হওয়া মহিলাদের রক্ত দান করার অন্যতম বাধা কারন এই ধরনের রক্ত দাতার রক্ত ব্যবহারে ৬ ঘণ্টার মাঝেই এই লক্ষন চলে আসতো। এমনও পরিসংখ্যান রয়েছে ১৩% মৃত্যুর সম্ভাবনা থাকে এই ধরনের রক্ত দাতার রক্ত গ্রহনের ফলে।

তবে ১১ই জুন ২০১৯ সালে National Institute of Helath বলছে প্রায় ১ মিলিয়ন মানুষের রক্ত পরিসঞ্চালনের ইতিহাস পর্যালোচনা করে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, এই ধরনের কোনও সমস্যা সরাসরি সম্পর্ক যুক্ত নয় এমন রক্ত দাতার রক্ত গ্রহনের ফলে।

আমরা কি করতে পারি?

আমাদের এমনিতেই রক্ত দাতার সংখ্যা কম তার মাঝে এই ধরনের দোলাচলে থাকলে কারও জীবন হয়ত ঝুঁকির মাঝে পড়তে পারে। HLA নিয়ে যত ঝামেলা তা যেহেতু রেড সেল নিয়ে সম্পর্কিত নয়, কাজেই প্রয়োজনের তাগিদে ব্যবহার করতে হলে Red Cell Concentrate(RCC) যাকে অনেকেই ভুল বশত Packed cell transfusion বলে থাকেন তা দেওয়া যেতে পারে।

নিরাপদ রক্ত পরিসঞ্চালন সবার অধিকার, সেই লক্ষেই সবার সচেতন হওয়া প্রয়োজন।

লিখেছেনঃ
ডাঃ আশরাফুল হক
১২ ব্যাচ
দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ
ব্লাড ট্রান্সফিউশন মেডিসিন স্পেশালিষ্ট।

ফিচার লেখকঃ
শেখ লুৎফুর রহমান তুষার
খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ।
সেশনঃ ২০১৫-১৬।

Special Correspondent

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে ১২০০ শয্যায় উন্নীতকরণ

Fri Sep 20 , 2019
শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বগুড়া এর শয্যাসংখ্যা ৫০০ থেকে ১২০০ এ উন্নীতকরণ করা হবে বলে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। সম্প্রতি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে এই ঘোষণা দেয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে শয্যাসংখ্যার দিক থেকে এটি হবে বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম হাসপাতাল। ২৬০০ শয্যাবিশিষ্ট ঢাকা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo