পেশাভিত্তিক প্রশাসন ও মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি নিয়ে প্রকৃচি’র সংবাদ সম্মেলন

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৮ ডিসেম্বর ২০২০, মঙ্গলবার

আজ ৮ ডিসেম্বর ( মঙ্গলবার) সকাল ১১ টায়
জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে
”প্রকৃচি কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির” আয়োজনে
“বিদ্যমান আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন ও কৃত্যপেশাভিত্তিক প্রশাসন গড়ে তোলার লক্ষ্যে”
এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

ছবিঃ সংবাদ সম্মেলন

“পেশাভিত্তিক প্রশাসন ও মন্ত্রণালয় গঠন” করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের প্রায় দুই লাখ সদস্যের সংগঠন প্রকৌশলী- কৃষিবিদ- চিকিৎসক (প্রকৃচি)। আজকের সংবাদ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করেন “প্রকৃচি” কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মোঃ নূরুল হুদা এবং কার্যপত্র উপস্থাপন করেন প্রকৃচি কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য সচিব ও বিএমএ মহাসচিব ডা. মোঃ ইহতেশামুল হক চৌধুরী। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন, প্রকৃচির কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য ও বাংলাদেশ মেডিকেল এসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, কৃষিবিদ এম এম মিজানুর রহমান, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ডা. মোঃ শারফুদ্দিন আহমেদ, আইইবির ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রকৃচির কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির সদস্য প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী এস এম মনজুরুল হক মঞ্জু, সম্মানী সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু) প্রমুখ।

ছবিঃ প্রেস বিজ্ঞপ্তি

সংগঠনটির উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, প্রশাসনের সব স্তরে জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে, সকল দফতর ও অধিদফতরের নিয়মিত শূন্য পদ পূরণ করা সহ প্রশাসন ক্যাডারের মতো পদোন্নতির যোগ্য হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পেশাজীবীদের পদোন্নতি দিতে হবে। একইসঙ্গে, বিভিন্ন সংস্থার পেশাজীবীদের সুপার নিউমারারি (সংখ্যার অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি) পদোন্নতির উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে, পেশাজীবী ক্যাডার পদ সংখ্যার ওপর ভিত্তি করে প্রশাসন ক্যাডারের মতো আনুপাতিক হারে গ্রেড-১ ও তদানুযায়ী গ্রেড-২ ও গ্রেড-৩’ এর পদ সংখ্যা নির্ধারন করে পদ সৃষ্টি করতে হবে, প্রত্যেকটি পেশার ক্যাডার সংখ্যার আনুপাতিক হারে সিনিয়র সচিব সমমান পদ সৃষ্টি করতে হবে। কয়েকটি সংস্থার শীর্ষপদ গ্রেড-১ এ উন্নীত হয়েছে। কিন্তু অন্যান্য সার্ভিসের মতো নিম্নধাপের সমপর্যায়ের পদসমূহ যথাক্রমে গ্রেড-২, গ্রেড-৩ এবং গ্রেড-৪ এ উন্নত করা হয়নি। তাই দ্রুত এসব নিম্ন ধাপের পদে গ্রেড উন্নীত করে প্রকৌশল, স্বাস্থ্য এবং কৃষি সেক্টরের গুরুত্বপূর্ণ টেকনিক্যাল অধিদফতর বা সংস্থাসমূহের শীর্ষপদকে গ্রেড-১ এ উন্নীত করতে হবে। প্রশাসন ক্যাডারের মতো অন্যান্য ক্যাডারের সম-স্কেল বা গ্রেডের কর্মকর্তাদের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। প্রতি বছর ন্যূনতম তিনবার বিভাগীয় পদোন্নতি কমিটি (ডিপিসি) ও এসএসবির ব্যবস্থা করতে হবে। এসএসবি ও ডিপিসি-তে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। টেকনিক্যাল ক্যাডারে কর্মরত কর্মকর্তাদের পেশার উৎকর্ষতা সাধনে প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে টেকনিক্যাল ক্যাডার কর্মকর্তাদের উচ্চতর শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নীতিমালা তৈরি করতে হবে। গ্রেড-৫ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের পদায়ন এর ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট অধিদফতর বা সংস্থা প্রধানদের দিতে হবে।

ছবিঃ পেশাজীবীদের অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট দাবী সমূহ

সংগঠনটির উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে আরও রয়েছে প্রকৌশল সংস্থা গুলোতে সংস্থা প্রধান পদে প্রকৌশল পেশায় অভিজ্ঞ প্রফেশনাল ইঞ্জিনিয়ারদের নিয়োগ ও বিভিন্ন প্রকল্পে পরিচালক পদে প্রকৌশলীদের পদায়ন নিশ্চিত করা। পূর্বতন বিসিএস ক্যাডার’কে টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি ক্যাডারে রূপান্তরিত করতে হবে। রাজউক, সিডিএ, কেডিএ, আরডিএ কক্সডিএ- এর বহুতল ভবন নির্মানে অনুমোদনকারী কমিটিতে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করা। বেকার প্রকৌশলীদের চাকুরীর ব্যবস্থা করা।

ছবিঃ প্রকৌশলীদের পেশা সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী 

সংগঠনটির উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে কৃষিবিদদের পেশা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়াবলী সম্পর্কে বলা হয়- কৃষি সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর সংস্থায় জনবলের ব্যাপক অভাব রয়েছে তাই অতিসত্বর প্রত্যেকটি দপ্তর যুগোপযোগী সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কৃষি সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তর সংস্থা ও স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন পদ্ধতি চালু গ্র্যাচুইটি প্রদান নিশ্চিত করতে হবে। নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণের মান নিয়ন্ত্রণ তথা সরকারের রেগুলেশন বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট বিসিএস ক্যাডার কর্মকর্তাদের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রদান করতে হবে। তুলা উন্নয়ন বোর্ডে পরিবর্তন করে তুলা উন্নয়ন অধিদপ্তর করতে হবে।

ছবিঃ কৃষিবিদদের পেশা সংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী

এছাড়াও উত্থাপিত দাবিগুলোর মধ্যে চিকিৎসকদের পেশা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াবলী সম্পর্কে বলা হয়-

১. দেশের বিরাজমান সম্প্রসারিত স্বাস্থ্যসেবার চাহিদা ও গুণগত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কার্যক্রমে গতিশীলতা আনয়ন ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে বিদ্যমান বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারকে নিম্নোক্ত ৪ (চারটি) ক্যাডারে বিন্যাস করতে হবে ক) বিসিএস স্বাস্থ্য সেবা), খ) বিসিএস (চিকিৎসা শিক্ষা), গ) বিসিএস জনস্বাস্থ্য), ঘ) বিসিএস (ডেন্টাল)।
২. ক্রমিক নং ১ উল্লেখিত ক্যাডার সমূহের কার্যবলী সুষ্ঠুভাবে সম্পাদনের লক্ষ্যে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে বিদ্যমান অধিদপ্তর সমূহকে সংস্কার করে নিম্নোক্তভাবে পুনর্গঠন করতে হবে। ক) স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর (সহকারী স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা), খ) স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর (বেসরকারি স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা ও সেবা), গ) গণস্বাস্থ্য অধিদপ্তর, ঘ) চিকিৎসা শিক্ষা অধিদপ্তর, ঙ) দন্তচিকিৎসা অধিদপ্তর, চ)পরিবার কল্যাণ অধিদপ্তর, ছ) নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর, জ) ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর, ঝ) জাতীয় স্বাস্থ্য পরিকল্পনা ও প্রশিক্ষণ অধিদপ্তর প্রত্যেকটি অধিদপ্তরে একজন করে মহাপরিচালক গ্রেট ওয়ান এবং তিনজন করে অতিরিক্ত মহাপরিচালক (গ্রেড-১) থাকবেন তন্মধ্যে দুইজন সিনিয়র মহাপরিচালক সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার হবেন।
৩. স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা সকল কার্যক্রমে একটি ছাতার নিচে এনে সমন্বিত ও সম্প্রসারিত স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে হবে। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর এবং জনসংখ্যা বিষয়ক গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের নিয়োজিত রিপোর্টকে উল্লেখিত সিনিয়র মহাপরিচালকের অধীনে ন্যস্ত করতে হবে।
৪. সকল অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক, অধ্যাপক ও মেডিকেল কলেজ সমূহের অধ্যক্ষ পদকে গ্রেড-২ তে উন্নীত করতে হবে।
সকল অতিরিক্ত মহাপরিচালক, পরিচালক, অধ্যাপক ও মেডিকেল কলেজ সমূহের অধ্যক্ষ পদকে গ্রেড-ই এ উন্নীত করতে হবে।

৫. এসডিজি বাস্তবায়নে মাঠ পর্যায়ে বিশাল কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও তদারকির লক্ষ্যে-

ক) ইউএইচএন্ডএফপিও এর আরেকটি পদ,সকল জেলায় একজন করে অতিরিক্ত সিভিল সার্জন ও তিনজন করে ডেপুটি সিভিল সার্জনের পদ সৃজন করতে হবে।প্রতিটি পদ ৫ম গ্রেডের হবে।
খ)সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৩টি উপ-পরিচালক (গ্রেড-৩) ও ৩টি সহকারী পরিচালক (গ্রেড-৪) পদ সৃজন করতে হবে।
গ)বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) কার্যালয়ে পরিচালক (গ্রেড-২) এর অধীনে ৪টি উপ-পরিচালক (গ্রেড-৩) ও ৪টি সহকারী পরিচালক (গ্রেড-৪) পদ সৃজন করতে হবে।
ঘ) ২৫০ শয্যা হাসপাতালে তত্ত্বাবধায়ক পদের নাম পরিবর্তন করে পরিচালক অধীনে পদ সৃষ্টি করা।
ঙ) স্বাস্থ্য খাতে নিয়োজিত চিকিৎসক ও জনবলকে দক্ষ করে তুলতে স্বাস্থ্য প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা।
চ) মানসম্মত চিকিৎসা ও সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রতিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নিয়মানুযায়ী ছাত্রঃ শিক্ষক ও চিকিৎসকঃ নার্স এর অনুপাত নিশ্চিত করা।
ছ) চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের স্বাস্থ্য বীমার ব্যবস্থা করা ও ওভারটাইম ভাতা প্রচলন করা।

৬. অনতিবিলম্বে চিকিৎসা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করতে হবে। পেশা সংশ্লিষ্ট ফৌজদারি মামলায় বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত বিজ্ঞ আদালত এর নির্দেশ কিংবা সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তর/ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ব্যতিরেকে চিকিৎসক গ্রেফতার বন্ধ করতে হবে।

৭.সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বিশেষায়িত চিকিৎসা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও হাসপাতালসমূহে আর্থিক স্বায়ত্তশাসন এবং জেলা পর্যায় থেকে তদনিম্ন হাসপাতাল সমূহকে সীমিত স্বায়ত্তশাসন প্রদান করতে হবে।

ছবিঃ চিকিৎসকদের পেশা সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়াবলী

সংগঠনটির কেন্দ্রীয় স্টিয়ারিং কমিটির আহ্বায়ক ও ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী মো নুরুল হুদা বলেন,

“ইদানিং পেশাজীবীদের অবদানের স্বীকৃতির বদলে একটি মহল পেশাজীবীদের ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত করার অপপ্রয়াসে লিপ্ত। সাম্প্রতিককালে জনপ্রশাসন পেশাজীবীদের নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি ইত্যাদির ক্ষেত্রে অনধিকার হস্তক্ষেপ করেই চলেছে। আজ পেশাজীবীরা বিভিন্নভাবে নিগৃহীত, অধিকার বঞ্চিত যা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার রূপকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ার পথে বাধা সৃষ্টির এক গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ বিশেষ”।

 

 

 

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব পড়েছে পদ্মা সেতুর প্রকল্পে

Tue Dec 8 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৮ ডিসেম্বর, মঙ্গলবার, ২০২০ করোনার দ্বিতীয় ধাক্কার প্রভাব পড়েছে পদ্মা সেতুর প্রকল্পে। গড়ে প্রতি ১০০ জনের পরীক্ষায় ৫০ জনেরই করোনা শনাক্ত হচ্ছে বলে তথ্য দিয়েছে সেতু বিভাগ। আক্রান্ত দেশী-বিদেশী প্রকৌশলী ও শ্রমিকদের আইসোলেশনে রাখায় দেখা দিয়েছে কর্মীসংকট। করোনার কারণে এই পর্যন্ত সেতুর কাজ ৩০-৩৫ ভাগ কম হয়েছে বলে […]
padma shetu

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo