কোভিড-১৯: কোন জোনে কি করা যাবে কি করা যাবে না

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৩ জুন ২০২০, শনিবার

ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম শামীম
সহযোগী অধ্যাপক ইপিডেমিওলজি এবং প্রোগ্রাম ম্যানেজার অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী
(এনসিডিসি), স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর

কোভিড-১৯ এর বিস্তার ঠেকাতে নতুন করে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা গুলো লাল, হলুদ ও সবুজ জোন ভাগ করে লকডাউন করা হয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা যায়, তিনটি জোনের জন্যেই কিছু বিষয় সাধারন রয়েছ অর্থাৎ এই বিষয়গুলো যেকোনো স্থানেই বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলতে হবে। এর মধ্যে প্রত্যেকের “মাস্ক পরা, সামাজিক দুরত্ব মেনে চলা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের বিষয়টি প্রযোজ্য হবে তিনটি জোনেই। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে শনাক্ত করা, তার চিকিৎসা ও আইসোলেশনের ব্যবস্থা, কন্টাক্ট ট্রেসিং ও কোয়ারেনটাইন ব্যবস্থাও থাকবে সব জোনেই। একইভাবে সব জোনেই বন্ধ থাকবে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, চালু থাকবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও প্রয়োজনীয় জরুরি পরিষেবা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও থাকবে মাঠে। এছাড়াও সব এলাকাতেই মাঠকর্মী ও কমিউনিটি সাপোর্ট টিমের সাহায্যে নিয়ে গৃহীত পদক্ষেপ বাস্তবায়ন ও নজরদারি নিশ্চিত করার বিষয়গুলোও প্রস্তাবনায় রাখা হচ্ছে। এর বাইরে শপিং মল বন্ধ রাখার প্রস্তাবনা নিয়েও আলাপ চলছে”।

সবুজ জোন/ নিম্ন ঝুঁকির এলাকাঃ –

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষি পণ্য উৎপাদন কাজ করা যাবে।
৩। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিস খোলা থাকবে।
৪। ৩০ জনের বেশি জন সমাবেশ করা যাবে না।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জন চলাচল করা যাবে তবে প্রয়োজন ছাড়া আমোদ বা আড্ডা দেয়ার জন্য বের হওয়া যাবে না।
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭। জোনের ভিতরে ও বাহিরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান, রেস্টুরেন্ট, চায়ের দোকান, সেলুন, বাজার ইত্যাদি স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। তবে শপিং মল সিনেমা হল, জিম/ স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/ উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীদের নমুনা পরীক্ষার সহজগম্যতা থাকতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে/ আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১। মসজিদ/ উপাসনালয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।

হলুদ জোন/ মাঝারি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা-

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ করা যাবে।
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কলকারখানা ও কৃষি পণ্য উৎপাদন কারখানায় ৫০% কর্মী কাজ করবে এবং জনসমাকীর্ণ কারখানাতে ৩৩% শতাংশ কর্মী বর্ধিত শিফটে কাজ করা যাবে।
৩। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অফিসে ৫০% কর্মী কাজ করবে। বাকিরা বাসা থেকেই কাজ করবে।
৪। ৩০ জনের বেশি জন সমাবেশ করা যাবে না।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু মাত্র প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে, রিক্সা, ভ্যান, সি এন জি বা ট্যাক্সিতে একজন করে চলাচলা করবে ট্যাক্সি বা নিজেস্ব গাড়ীতে চলাচল করা যাবে
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাচল করা যাবে।
৭। জোনের ভিতরে ও বাহিরে মালবাহী জাহাজ চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে, রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবল মাত্র হোম ডিলেভারী সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধু মাত্র নিত্য প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিং মল সিনেমা হল, জিম/ স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/ উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমান নমুনা পরীক্ষার করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে/ আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে। স্থানীয় ভাবে পর্যাপ্ত আইসোলেশনের ব্যবস্থা থাকবে।
১১। মসজিদ/ উপাসনালয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।

লাল জোন / উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা-

১। স্বাস্থ্যবিধি মেনে কৃষিকাজ বর্ধিত শিফটে কাজ করা যাবে।
২। স্বাস্থ্যবিধি মেনে গ্রামাঞ্ছলে কলকারখানা ও কৃষি পন্য উৎপাদন কারখানায় কাজ করা যাবে, তবে শহরাঞ্চলে সব বন্ধ থাকবে।
৩। বাসা থেকেই অফিসের কাজ করবে।
৪। কোন ধরনের জন সমাবেশ করা যাবে না, কেবল মাত্র অসুস্থ ব্যক্তি হাসপাতালে যেতে পারবে।
৫। স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু মাত্র প্রয়োজনে বাসা থেকে বের হতে পারবে, রিক্সা, ভ্যান, সি এন জি, ট্যাক্সিতে বা নিজেস্ব গাড়ী চলাচল করবে না।
৬। সড়ক পথ, নদী পথ ও রেল পথে জোনের ভেতরে কোন যান চলাচল করবে না।
৭। জোনের ভিতরে ও বাহিরে মালবাহী জাহাজ কেবল মাত্র রাতে চলাচল করতে পারবে।
৮। এই জোনের অন্তর্গত মুদি দোকান, ওষুধের দোকান খোলা থাকবে রেস্টুরেন্ট ও খাবার দোকানে কেবল মাত্র হোম ডিলেভারী সার্ভিস চালু থাকবে এবং বাজারে শুধু মাত্র প্রয়োজনে যাওয়া যাবে। তবে শপিং মল সিনেমা হল, জিম/ স্পোর্টস কমপ্লেক্স, বিনোদন কেন্দ্র বন্ধ থাকবে।
৯। আর্থিক লেনদেন বিষয়ক কার্যক্রম যেমন টাকা জমাদান/ উত্তোলন স্বাস্থ্যবিধি মেনে কেবল মাত্র এটিএম এর মাধ্যমে করা যাবে।
১০। উক্ত এলাকার রোগীদের পর্যাপ্ত পরিমান নমুনা পরীক্ষার করতে হবে, শনাক্ত রোগীরা আইসোলেশনে (বাড়িতে/ আইসোলেশন সেন্টারে) থাকবে।
১১। মসজিদ/ উপাসনালয়ে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে ইবাদত করা যাবে।

Silvia Mim

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

গর্ভবতীর করোনা পরীক্ষা জরুরী

Sat Jun 13 , 2020
শনিবার, ১৩ জুন, ২০২০ ডা. ফাহমিদা রশীদ স্বাতি সহকারী অধ্যাপক, গাইনী এন্ড অবস চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করোনার এই ত্রাহি ত্রাহি অবস্থায় কেউ এর ছোবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না- বাচ্চা, যুবক, বয়স্ক, পুরুষ, মহিলা সবাই আক্রান্ত হচ্ছেন। সেই সাথে যারা এখন গর্ভবতী আছেন, তারাও আক্রান্ত হচ্ছেন। যেসব গর্ভবতী মায়েদের উপসর্গ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo