করোনার পর নতুন গাইডলাইনের স্বাস্থ্যবিধি মেনেই চালু হবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ আগস্ট, ২০২০, বৃহস্পতিবার 

মহামারী করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাংলাদেশে এখনো কমে নি। করোনার কারণে ১৭ মার্চ থেকে অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো বন্ধ রয়েছে সারাদেশের ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও। কবে নাগাদ এই করোনার প্রকোপ কমতে পারে এবং এসব প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। তবে যখনই খুলে দেওয়া হোক না কেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর বেঁধে দেওয়া শর্তাবলি প্রতিপালন করে যেন বিদ্যালয় খুলে দেওয়া হয়- সে উদ্দেশ্যে গত ১৮ ই আগস্ট মঙ্গলবার একটি স্কুল রি-ওপেনিং গাইডলাইন তৈরি করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ছবিঃ প্রতীকী

সেখানে বলা হয়, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এক্ষেত্রে একদিন অর্ধেক শিক্ষার্থী স্কুলে যাবে এবং পরদিন বাকি অর্ধেক শিক্ষার্থীকে যেতে হতে পারে স্কুলে।

এ পরিকল্পনার নির্দেশনাগুলো চূড়ান্ত করতে গতকাল মঙ্গলবার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সিনিয়র সচিব মো. আকরাম আল হোসেনের সভাপতিত্বে এক সভা হয়। পরবর্তীতে আরেকটি সভা করে এটি চূড়ান্ত করা হবে বলে জানানো হয়। মন্ত্রণালয়টির প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের অনুমোদনের পর তা প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করে, এ সংক্রান্ত প্রচারণা শুরু করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আকরাম-আল-হাসান বলেন,

‘করোনা পরবর্তী সময়ে স্কুল কীভাবে চলবে সে ব্যাপারে আমরা একটি গাইডলাইন তৈরি করছি। এ বিষয়ে আমাদের কাজ শেষের পথে। দু-একদিনের মধ্যেই এটা নীতিমালা আকারে জারি হবে। নীতিমালা তৈরি হলে কবে নাগাদ শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফিরতে পারবে, সে ব্যাপারে পরিস্থিতি বিবেচনা করে সরকারই সিদ্ধান্ত নিবে।’

তিনি আরও বলেন,

‘করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে আগের নিয়মে আর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালিত হবে না। বিদ্যালয় খোলার সরকারি নির্দেশনা দেবার পর ন্যূনতম ১৫ দিন আগে শিক্ষক, কর্মচারী এবং বিদ্যালয় ব্যবস্থাপনা কমিটির (এসএমসি) সদস্যদের উপস্থিতিতে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম শুরু করতে হবে। সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করার পাশাপাশি স্কুলের গেটে বা প্রবেশের স্থানে হাত ধোয়ার জন্য সাবান ও পানির ব্যবস্থা করতে হবে। থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে সবাইকে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করানো হবে।’

ছবিঃ প্রতীকী।

এছাড়া স্কুল রি-ওপেনিংয়ের পরিকল্পনায় বলা হয়েছে, ক্লাস রুটিন সংকুচিত করা হবে। কবে কোন বিষয়ের ক্লাস হবে তা শিক্ষক ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির (এসএমসি) সদস্যরা নির্ধারণ করবেন। আলাদাভাবে তিনটি ক্যাটাগরিতে ৫০টির বেশি নির্দেশনা অনুযায়ী প্রতিদিন ক্লাস পরিচালনা করা হবে এ পরিকল্পনা অনুযায়ী। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এক বেঞ্চে দু’জন শিক্ষার্থীকে বসাতে হবে। শিক্ষার্থীরা একসঙ্গে উপচে পড়া ভিড় করে খেলাধুলা, আড্ডা-গল্প করতে পারবে না। সামাজিক দূরত্ব রেখে হাঁটা-চলা করতে হবে। নোটিশ বোর্ডে বিদ্যালয়ের শিক্ষক, হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি যোগাযোগ নম্বর লিখে ঝুলিয়ে রাখতে হবে। কেউ অসুস্থ হয়ে গেলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সহায়তায় তাকে চিকিৎসা দিতে বলা হয়েছে। করোনাকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিচালনা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, ইউনিসেফ, সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি) এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া স্বাস্থ্যবিধিগুলো অনুসরণ করে এসব নির্দেশনা তৈরি করা হয়েছে।

সিনিয়র সচিব আকরাম আরও জানান,

‘বিদ্যালয়ের জন্য তৈরি দিকনির্দেশনাগুলো সবার কাছে পৌঁছে দিতে ফেসবুক, অনলাইন, ওয়েবসাইট, গণমাধ্যমসহ সকল মাধ্যমে ব্যাপক প্রচারণা চালানো হবে। এতে অভিভাবকরা তাদের সন্তানকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে আগ্রহী হবেন। করোনাকালীন এ সময় ব্যয় নির্বাহের জন্য প্রতিটি স্কুলকে বার্ষিক যে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়, সেখান থেকে ব্যয় করতে হবে।’

উল্লেখ্য, মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারছে না বলে পড়ালেখা থেকে যেন একদম দূরে না ছিটকে যায়, তাই সরকারের পক্ষ থেকে টেলিভিশন এবং রেডিওতে ক্লাস পরিচালনা করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

Sadia Kabir

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনা ।। ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম শামীম

Thu Aug 20 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ২০ আগস্ট ২০২০, বৃহস্পতিবার  ডা. মো. রিজওয়ানুল করিম শামীম সহযোগী অধ্যাপক, ইপিডেমিওলজি প্রোগ্রাম ম্যানেজার, অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী (এনসিডিসি), স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তর বিশ্বব্যাপী মোট ১৬৫ টি ভ্যাকসিন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং এর মধ্যে ৩১ টি ভ্যাকসিন মানব শরীরে পরীক্ষার বিভিন্ন পর্যায়ে আছে। মানুষের কাছে পৌঁছানোর পূর্বে ভ্যাকসিন গুলোকে বিভিন্ন […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo