সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
চট্টগ্রাম এর অসহায় বেলাল। ছোটবেলায় টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হলে অর্থের অভাবে করাতে পারেননি সঠিক চিকিৎসা। ফলে ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায় তার শরীরের মাংসপেশি, বেরিয়ে আসে কেবল হাড়! শরীরের এমন দুরবস্থায় কোনো কাজও করতে পারেন না তিনি। শৈশবেই বাবা ছেড়ে চলে যাওয়ায় আপন বলতে পাশে আছেন শুধু অসুস্থ, বৃদ্ধ মা। তবে মা ছেলে দুজনেই বর্তমানে অসুস্থ। উপার্জনের সামর্থ নেই কারো। তাই অনাহারে, অর্ধাহারে, কষ্ট আর অবহেলায় চলছে তাদের মানবেতর জীবনযাপন।
এ বিষয়ে ডিবিসি নিউজের বরাতে অসহায় বেলাল জানায়,” আমি আজকে বহুদিন যাবৎ অসুস্থ। হাঁটাচলা করতে পারিনা,ঠিক মতো কাজকাম ও করতে পারি না! আমার শরীরটা অনেক দূর্বল, আর আমার পরিবার এর জন্য ইনকাম করা আমার পক্ষে সম্ভব না! মা ও অসুস্থ এখন। আগে যা-ও মানুষের বাড়ি থেকে কাজকাম করে এনে দুজনে চলেছি এখন ঐ চলারও গতি আর নাই,মা ও পড়ে গেছি এখন,মাও ভালো না! আমার অবস্থাটা আপনারা নিজেরাই দেখেন! ”
জানা যায়, বেলাল এর বাবা রুহুল আমিন যুদ্ধ পরবর্তীতে পরিবার রেখে চলে যান পাকিস্তানে, প্রথম দিকে কিছুূদিন খোঁজ খবর নিলেও পরবর্তীতে স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন তিনি। অসুস্থ ছেলের ভবিষ্যতের কথা ভেবে আর দ্বিতীয় বার বিয়েও করেননি মা সলিমা বেগম! নিজেদের কোনো জমি বা বসতভিটা না থাকায় আশ্রয় নিয়েছেন বেলাল এর মা সলিমা বেগম এর বোন ময়ূরা বেগম এর বাড়ির ছোট একটি ঘরে,তবে তবে এই ঘরের ভিতর নেই প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র, নেই নিয়মিত খাবার এর ব্যবস্থাও।
চট্টগ্রাম এর মীরসরাই উপজেলার সলিমা বেগম এবং রুহুল আমিন এর একমাত্র সন্তান বেলাল হোসেন, জন্মের ৭ বছর বয়সে টাইফয়েড জ্বরে আক্রান্ত হন তিনি, দীর্ঘদিন চিকিৎসা করেও পুরোপুরি সুস্থ হতে পারেননি কখনো! অসুস্থ শরীর নিয়েই ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত লেখাপড়া চালিয়ে যান বেলাল, কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে শরীর এর মাংসপেশী শুকিয়ে যেতে শুরু করে তার,একসময় হাঁটাচলা ও করা সম্ভব হয়নি বেলাল এর পক্ষে, ছেলের চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করার আশায় অন্যের বাড়িতে ঝি এর কাজ ও করেছেন বেলাল এর মা সলিমা বেগম, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এখন তিনি নিজেও গুরুতর অসুস্থ! ফলে চরম দুর্দশায় দিন কাটছে অসহায় মা ছেলের।
বেলাল হোসেন সাহায্য চেয়ে বলেন,” আপনারা আমাকে মাসিক যদি কিছু বাজার চেষ্টা ও করে দেন বা বিকাশ এর মাধ্যমে বা এরকম কিছু তাহলে জীবনটা কোনো রকম আল্লাহর রহমতে চলে যেতে পারে আর-কি।”
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক : মেহরুবা আক্তার