বুধবার, ২৮ মে ২০২৫।
১১ দিনের কন্যা শিশু বিনিতা। বিনিতা যেদিন পৃথিবীতে এলো সেইদিনই মা ছেড়ে গেছে বিনিতাকে।শুধু গত ১১ দিনে নয়,বিনিতার জীবনে মায়ের আদর মিলবে না আর কোনো কালেই!মা হীন কঠিন পৃথিবীতেই এখন ছোট্ট মেয়েটির কঠিন বাস্তবতা। আর ওদিকে বিনিতার বাবা ইমরানের জীবনে নতুন বাবা হবার আনন্দের সঙ্গে চিরজীবনের জন্য যুক্ত হয়েছে সঙ্গী হারানোর ট্রাজেডি, সেই সঙ্গে মা হারা ছোট্ট বিনিতাকে কিভাবে বড় করবেন রয়েছে সেই দুশ্চিন্তাও।
মা হওয়ার পথটা কখনোই সহজ নয়! থাকে শারীরিক, মানসিক নানা সমস্যা সহ সন্তান প্রসব এর ঝুঁকি। সুস্থ সন্তান প্রসব এর পাশাপাশি সন্তান এর মুখটা দেখতে পারবেন কিনা মায়েদের থাকে সেই দুশ্চিন্তাও। পার্শ্ববর্তী দেশ নেপাল ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে মাতৃ মৃত্যুহার বেশি।
ইউনিসেফ ও ডাব্লিউএইচওর পরিসংখ্যান বলছে সারাদেশে প্রতিদিন প্রায় ১০ জন মায়ের মৃত্যু ঘটে সন্তান প্রসব এর সময়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর তথ্য মতে সন্তান প্রসব এর সময় যে কারণ গুলোতে মায়ের মৃত্যু হয়, তার অধিকাংশই প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণ এর কারণে।
এবিষয়ে ডা.সুচিত্রা শাহা (জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ, মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার) বলেন,”যে মেডিসিন গুলো আমরা দিচ্ছি সেগুলো হয়তো ঠিক মতো খাচ্ছে না,অনেক কিছু একটা প্রেগনেন্সিতে সমস্যা হতে পারে সেগুলো যদি আরলি ডিটেকশন হয় তাহলে আমরা যদি চিকিৎসা করি মহিলা টা ভালো হয়ে যেতে পারে। আমাদের দেশে হোম ডেলিভারি এখনো অনেক বেশি,আমরা চাইবো যে হোম ডেলিভারিটাকে রিডিউস করে হাসপাতাল ডেলিভারিটা যাতে বাড়ানো যায়।”
মাতৃমৃত্যু নিয়ে ডা.শাহিদা আক্তার ( বিশেষজ্ঞ ও সার্জন মোহাম্মদপুর ফার্টিলিটি সার্ভিসেস এন্ড ট্রেনিং সেন্টার) বলেন,” পুষ্টি টাকে নিশ্চিত করা,তার খাওয়া দাওয়া বিশ্রাম এসব বিষয়ে অবশ্যই পরিবারের সাপোর্ট থাকতে হবে। তাদেরকে কাউন্সিলিং এর মাধ্যমে আমরা এটা সমাধান করতে পারি।”
নিরাপদ মাতৃত্ব চান সবাই, তাই আর যেনো কোনো বিনিতাকে মা হারাতে না হয়, বাংলাদেশে নারীদের সন্তান প্রসব যেনো ঝুঁকিহীন হয় সেজন্য সরকারকে নিতে হবে কার্যকরী পদক্ষেপ। পাশাপাশি পরিবারকেও সচেতন হওয়ার আহ্বান সংশ্লিষ্টদের।
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদক : মেহরুবা আক্তার