মিটফোর্ডে ডাক্তারদের করোনা সংকট- এগিয়ে এলো শিক্ষক সমিতি ও ইচিপ

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২০

তথ্য গোপন করে ভর্তি হওয়া দুইজন কোভিড-১৯ রোগীর চিকিৎসায় নিয়োজিত হবার কারণে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালের ২৪ জন চিকিৎসক কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে ৯ জন সদ্য যোগদান করা ইন্টার্ন চিকিৎসক।

গত দুইদিন ধরে আক্রান্ত ইন্টার্ন চিকিৎসকরা হাসপাতাল ডিউটি থেকে বিরত আছেন, কিন্তু তাঁদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে আইসোলেশন (অন্য সবার কাছ থেকে আলাদা রেখে চিকিৎসা করা) বা কোয়ারেন্টাইন (সবার থেকে আলাদা করে পর্যবেক্ষণ করা) করার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের ছিল না। ফলে তাঁদের চিকিৎসায় অনিশ্চয়তা এবং ইন্টার্ন চিকিৎসকদের আবাসিক হোস্টেলে অন্যান্যদের মাঝে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশংকা তৈরি হয়।

এমনকি কন্টাক্ট ট্রেসিং এর আওতায় কোন ইন্টার্ন চিকিৎসকদের করোনা টেস্টের উদ্যোগও হাসপাতালের পক্ষ থেকে নেয়া হয়নি। কন্টাক্ট এ আসা চিকিৎসকরা নিজ উদ্যোগে কর্মবিরতিতে গিয়ে কোয়ারান্টাইনে আছেন এবং নিজেদের টেস্ট করাচ্ছেন।

এই প্রেক্ষিতে আক্রান্ত ইন্টার্নদের চিকিৎসা, আইসোলেশনে রাখা এবং তাঁদের সংস্পর্শে আসা অন্যদের কোয়ারান্টাইনে রাখা নিয়ে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের শিক্ষক সমিতি এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (২০১৯-২০) এর তৎপরতায় এবং মিটফোর্ড হাসপাতালের পরিচালকের সহযোগিতায় আজকে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

প্রথমত, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের যারা পজিটিভ এসেছেন (ছেলে মেয়ে উভয়ই) তাদেরকে ইন্টার্ন হলের টপ ফ্লোরে আইসোলেশনে রাখা হবে (ছেলে মেয়ে আলাদা হলে)। যাদের নেগেটিভ আসবে তাদেরকে পর্যায়ক্রমে ইন্টার্ন হলের নীচের ফ্লোর গুলাতে কোয়ারান্টিনে রাখা হবে।

দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক ইন্টার্ন চিকিৎসক এর জন্য ডক্টরস ক্যান্টিন থেকে খাবার পার্সেল করে হলে পৌঁছায়ে দেয়া হবে। এখানে বাজেটের অপ্রতুলতার কারণে খরচ আপাতত ইন্টার্ন চিকিৎসককেই বহন করতে হবে।

সর্বোপরি, ইন্টার্ন চিকিৎসকদের জন্য ২৪ ঘন্টা একটি এম্বুলেন্স স্ট্যান্ডবাই রাখা হবে। কোন ইমারজেন্সি হলে যাতে তাদেরকে করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালগুলোতে ট্রান্সফার করা যায়।

এসব সিদ্ধান্তের ব্যাপারে ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সভাপতি ডা. উৎপল সেন জানান, “দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে মিটফোর্ড হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসকরা রোগীর চিকিৎসায় অংশ নেয়ার জন্য হাসপাতালে যোগদান করেন। কিন্তু একমাস না যেতেই তাঁরা কয়েকজন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত এবং অন্যান্যরা বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে। যোগদানকৃত চিকিৎসকগণ প্রথম থেকেই বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছিলেন। ইচিপের পক্ষ থেকে সবসময়ই চেষ্টা করা হয়েছে সমস্যা সমাধানের। ইতোপূর্বে ডক্টর ক্যান্টিনে খাবারের প্যাকেজ সিস্টেম করা হয়েছে, গ্লাভসের ব্যবস্থা করা হয়েছে।তারই ধারাবাহিকতায় আজকের এই সিদ্ধান্তসমূহ।” এছাড়াও সাধারণ সম্পাদক ডা. মেহেদী হাসান দীপ বলেন, “ইন্টার্নি চিকিৎসকগণ একটি হাসপাতালের প্রাণ। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই ইন্টার্ন চিকিৎসকদের যেকোনো সমস্যায় এবং যুক্তিযুক্ত প্রতিটি দাবির বাস্তবায়নে প্রাণের সংগঠন ইচিপ সবসময় অগ্রবর্তী ভূমিকা রাখবে।”

বর্তমানে কোয়ারান্টাইনে থাকা ইন্টার্ন চিকিৎসক ডা. সজীব কুমার ঘোষ এ বিষয়ে বলেন, “যথাযথ কোয়ারেন্টাইন এবং আইসোলেশন নিশ্চিত করার জন্য আলাদা ঘর এবং সেই সাথে খাবারের ব্যবস্থা করে দেয়া প্রয়োজন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে এভাবে আমাদের নিরাপত্তার ব্যাপারটি সুরক্ষিত হলে কোয়ারেন্টাইন শেষে চিকিৎসা সেবা প্রদানে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না।”

Platform

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

করোনার ঝুঁকির মধ্যেও ঢাকা শিশু হাসপাতালে জটিল রোগের অপারেশন সম্পন্ন

Mon Apr 20 , 2020
প্ল্যাটফর্ম প্রতিবেদন, রবিবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২০ গ্যাস্ট্রোসকাইসিস হলো একটি জন্মগত ত্রুটি যেটাতে শিশুর অন্ত্রের কিছু অংশ, এমনকি যকৃৎও পেটের বাহিরে বেরিয়ে থাকে। উন্নত দেশে এ ধরনের রোগীর অপারেশন পরবর্তী চিকিৎসার পর বেচেঁ থাকার হার প্রায় ৯০ ভাগ। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে এই চিত্রটা ঠিক উল্টো মানে বেঁচে থাকার হার প্রায় ১০ […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo