মাইগ্রেশনের দাবি কেয়ার মেডিকেল শিক্ষার্থীদের

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৮ই আগস্ট, ২০২২, সোমবার

মাইগ্রেশনের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করেছে কেয়ার মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী। শনিবার (৬ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে কলেজ ও হাসপাতাল ভবনের সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মাইগ্রেশনের যৌক্তিকতা তুলে ধরে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘বিএমডিসি’র বেসরকারি মেডিকেল কলেজ স্থাপনা ও পরিচালনা নীতিমালা ২০১১ (সংশোধিত) অনুসারে আমাদের মেডিকেল কলেজ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।’

এ সময় কলেজের নানা অসঙ্গতিও তুলে ধরেন তারা। এগুলো হলো:

‘আমাদের কলেজের ২০১৭-২০১৮ সেশন হতে ২০২১-২০২২ সেশন পর্যন্ত কোনো ছাত্র-ছাত্রীর বিএমডিসি’র অনুমোদন নেই। ২০১৬-২০১৭ সেশনের ভর্তির পরে ২০১৭-২০১৮ সেশন হতে ভর্তি কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে হাইকোর্টের রিটের ওপর ভিত্তি করে মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে ২০১৭-১৮, ২০১৯-২০, ২০২০-২১ সেশন ছাত্র-ছাত্রী ভর্তি করা হয়। বিগত বছরগুলোতে রিটের ওপর ভিত্তি করে ভর্তি নেওয়া হলেও এ বছর ২০২১-২০২২ সেশনে ভর্তি কার্যক্রম পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের সাথে বিএমডিসি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত কথা বললে তারা আমাদের বরাবরের মতোই রেজিস্ট্রেশন পাওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দেয়।’

শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৫-২০১৬ শিক্ষাবর্ষের ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীর আগস্ট ২০২১ এ চূড়ান্ত পেশাগত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। পরবর্তীতে নভেম্বর ২০২১ থেকে তাদের ইন্টার্নশিপ শুরু করার কথা থাকলেও বিএমডিসি’র রেজিস্ট্রেশন না থাকায় বিগত নয় মাসেও তারা ইন্টার্নশিপ শুরু করতে পারেনি।

‘ভর্তির পর থেকে বিভিন্ন ধরনের নাজুক ও চিকিৎসা শিক্ষার অনুসারে আমাদের কলেজ পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। একাডেমিক ও ক্লিনিক্যালের প্রতি বিষয়ে পর্যাপ্ত শিক্ষক নেই। একাডেমিক ও ক্লিনিক্যালের প্রতি বিষয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যক বিভাগীয় প্রধান, লেকচারার, সিএ ও রেজিস্ট্রার নেই’, যোগ করেন তারা।

কেয়ার মেডিকেল শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ‘নীতিমালা অনুযায়ী আমাদের হাসপাতালে পর্যাপ্ত বেড নেই। অধিকাংশ সময় সকল ওয়ার্ড রোগীশূন্য থাকে। আমাদের পূর্ণাঙ্গ অপারেশন থিয়েটার ও আইসিও নেই এবং সিসিও ও এনআইসিও থাকলেও সেখানে অপারেশন ও ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা নগণ্য।’

মেডিকেলে কোনো রোগী নেই উল্লেখ করে তারা আরও বলেন, ‘আমাদের কোনো ক্লিনিক্যাল ক্লাস হয় না। প্রফেশনাল পরীক্ষার জন্য রোগী ভাড়া করে নিয়ে আসা হয়। কলেজ ভিজিটের সময় কর্তৃপক্ষ রোগী ভাড়া করে আনে এবং কেয়ার নার্সিং কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের রোগী সাজিয়ে দেখানো হয়। কক্ষ স্বল্পতার জন্য মেডিকেল ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাস, আইটেম (পরীক্ষা) লাইব্রেরি ও কনফারেন্স রুমে নেওয়া হয়ে থাকে।’

তারা বলেন, ‘নীতিমালা অনুসারে আমাদের পর্যাপ্ত ফ্লোর স্পেস, গ্যালারি রুম এবং অবকাঠামো নেই। যেগুলো রয়েছে সেগুলো একই সাথে মেডিকেল কলেজ ও নার্সিং কলেজ হিসেবে ব্যবহৃত হয়।’


হাসপাতালের ইনডোরে পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক ও রোগী নেই জানিয়ে তারা বলেন, ‘আউটডোরে কোনো চিকিৎসক থাকেন না, এতে আমাদের হাতে-কলমে শিক্ষা ব্যবস্থা ব্যাহত হয়।’

হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা সামগ্রী, যেমন: অ্যাম্বুলেন্স, উন্নত অপারেশন থিয়েটার, ল্যাপারোস্কপি, এনডোস্কোপি, সিটি স্ক্যান, এমআরআই ইত্যাদি নেই। এ বিষয়ে কলেজ কর্তৃক্ষকে বারবার অবগত করলেও তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।

শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু একাডেমিক কার্যক্রম চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী: যেমন- আলাদা রিডিং রুম, ল্যাব ফ্যাসিলিটি, ল্যাব পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ মাইক্রোস্কোপ, এনাটমিক্যাল, প্যাথলজিক্যাল, ল্যাবরেটরি সামগ্রী ও পূর্ণাঙ্গ ডিসেকশন রুম নেই।

স্থায়ী ল্যাব টেকনিশিয়ান নেই। প্রফেশানাল পরীক্ষার সময় ভাড়া করে লোক আনা হয়।

আমাদের ওয়ার্ডে কোনো রোগী নেই, আমাদের হাতে-কলমে শিক্ষার ব্যবস্থা নেই। এই ব্যাপারে কর্তৃপক্ষকে বারবার অবগত করার পর তারা আমাদের ইউটিউব থেকে শিখে নিতে বলে।

ভর্তির সময় আবাসিক ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য হোস্টেলের ব্যবস্থা আছে বললেও পরবর্তীতে এতগুলো বছরেও তা দৃশ্যমান হয়নি এবং বিভিন্ন সময় আবাসন সংক্রান্ত ব্যাপারে ছাত্র-ছাত্রীদের অনেক হয়রানির সম্মুখীন হতে হয়েছে।

এমতাবস্থায় আমাদের সকল ছাত্র-ছাত্রীর ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত এবং হুমকির মুখে। আমার প্রায় সকলেই মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। তাই আমাদের বিষয় সদয় বিবেচনা করে সুনিশ্চিত ভবিষ্যতের জন্য আমাদের মাইগ্রেশন করার জন্য সবিনয় অনুরোধ জ্ঞাপন করেছি।

 

নিজস্ব প্রতিবেদক// সিলভিয়া মিম

Sadia Kabir

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

ঢামেকের ইন্টার্ন চিকিৎসক বর্বরোচিত হামলার শিকার

Tue Aug 9 , 2022
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৯ আগস্ট, ২০২২, মঙ্গলবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কতিপয় ছাত্র কর্তৃক ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালের শিক্ষানবিশ চিকিৎসক ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন বর্বরোচিত হামলার শিকার হয়েছেন। ডা. মো. সাজ্জাদ হোসেন এর বক্তব্য অনুযায়ী, গত ৮ আগস্ট (সোমবার) রাত ৯.৩০ টার দিকে তিনি শহীদ মিনার সংলগ্ন মূল বেদির পাশে রেলিং এ বসে থাকাকালীন […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo