রবিবার, ১১ মে, ২০২৫
নিজে কোনো এমবিবিএস চিকিৎসক নন, অথচ দিব্যি চোখের ছানিপড়া থেকে শুরু করে চোখের জটিল রোগের চিকিৎসা দেয়ার পাশাপাশি করতেন সব ধরনের চোখের অপারেশন। এমনকি ব্যবহার করছিলেন অন্য এক চিকিৎসকের বিএমডিসির নিবন্ধন। এভাবেই বহু বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিলেন এই প্রতারক।
সবশেষ শনিবার (১০ মে) দুপুরে মেহেরপুরের মুজিবনগরের যতারপুর গ্রামে চক্ষু চিকিৎসা ক্যাম্প করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা পড়েন তাফহিমুল হুছাইন নামের এই প্রতারক।
পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে তিন মাসের কারাদণ্ড দেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল। আর তার সহযোগী সাগর আলীকে (২৩) এক মাসের কারাদণ্ড ও গাড়িচালক ইমনকে (২৫) ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আটক তাফহিমুল ঠাকুরগাঁওয়ের বহরমপুর গ্রামের মনিরুজ্জামানের ছেলে। তার সহকারী সাগর গাংনী উপজেলার কসবা গ্রামের ইয়ারুল ইসলামের ছেলে। গাড়িচালক ইমন একই উপজেলার বাশবাড়িয়া গ্রামের সামসুল ইসলামের ছেলে।
ঠাকুরগাঁওয়ে তার নিজ এলাকায় প্ল্যাটফর্মের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করে জানা যায়, এলাকার সবাই তাকে ডাক্তার বলেই জানে। গতকাল তার প্রতারণার খবর সামনে এলে এলাকাবাসীর অনেকই বিশ্বাস করতে পারেননি। এমনকি বিভিন্ন সময়ে নিজ এলাকায়ও এভাবে ক্যাম্প করতেন বলে জানা গেছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পলাশ মণ্ডল জানান, তাফহিমুল বেশ কয়েক মাস ধরে গাংনীতে অবস্থান করছিলেন। নিজেকে চক্ষু বিশেষজ্ঞ পরিচয় দিয়ে গাংনীর বিভিন্ন ক্যাম্পে চোখের ছানিপড়া থেকে শুরু করে অপারেশন করে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছিলেন। তার প্রতারণার কাজে ব্যবহার করছিলেন ‘হামিদুল ইসলাম প্রাথমিক চক্ষু চিকিৎসা সেবাকেন্দ্র’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নাম।
জেলার বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে এই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে বিনামূল্যে চক্ষু সেবার ক্যাম্প বসাতেন তিনি। শনিবার দুপুরে মুজিবনগরে একটি হোটেলে চক্ষু চিকিৎসা সেবা নামের একটি ক্যাম্প করছিলেন। এসময় মানুষের সন্দেহ হয়। তাদের আটকে রেখে খবর দেয় পুলিশে।
পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তাফহিমুল হুছাইনের কাছে চিকিৎসকের কাগজপত্র চাইলে কিছুই দেখাতে পারেননি। এমনকি তার বিএমডিসির নিবন্ধন ঘেঁটে দেখা যায়, অন্য একজন চক্ষু বিশেষজ্ঞের নিবন্ধন ব্যবহার করছেন তিনি।
এসময় তাকে ও তার তার সহকারী সাগর আলী ও গাড়িচালককে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাদের জেল-জরিমানা করা হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. সুপ্রিয়া গুপ্তসহ পুলিশের একটি দল।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস