কোভিড-১৯ঃ মৃত্যু ঝুঁকি কমাতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩১ আগস্ট, ২০২০, সোমবার

ডা. আনিসুর রহমান 
ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার (গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজি),
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

বর্তমানে সবার মধ্যে কোভিড নিয়ে কেমন যেন একটা গা ছাড়া ভাব চলে এসেছে। সবাই আপন মনে ধারণা তৈরি করেছে যে, করোনা ভাইরাস বুঝি শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। ব্যাপারটা যদি ভেবে থাকেন তাহলে মনে রাখবেন, নিজেরাই নিজেদের সান্ত্বনা দিচ্ছি কেবল।

এই ভাইরাসের মতন ক্রমাগত জিনোমিক পরিবর্তনের ঘটনা খুব কম ভাইরাসই ঘটাতে পেরেছে। অতএব আমরা এখন আক্রান্তের পিক এ, অথবা পিক এর কাছাকাছি বা পিক থেকে নেমে যাচ্ছি, এসব কথা শুধুই নিছক সান্ত্বনা। এখন আমরা আক্রান্তের চূড়ায় আছি বা যাচ্ছি অথবা নেমে যাচ্ছি নির্ধারণ করতে পারবেন কী? পারবেন না। যেমন ঘুণ কিন্তু একদিনে আপনার একটি কাঠের দরজা পুরো খেয়ে ফেলেনা। এবার কাঠের দরজাটিকে ভাবুন আমাদের দেশ আর ঘুণ পোকা হলো করোনা ভাইরাস। উত্তরটি সহজ হয়ে গেল।

আমরা কী পারছি প্রতিদিনের ৫০-৬০ জন মানুষের মৃত্যুর মিছিল থামাতে? তাহলে কি বছরের বাকি ৪ মাসে (৫০*৩০)*৪ = ৬০০০+ মানুষকে হারাতে যাচ্ছি আমরা? উত্তর খুবই সহজ। নিজেদের সচেতনতা যদি এভাবে হারিয়ে যায় আমাদের ভেতর থেকে, তাহলে সংখ্যা আরো বাড়বেই কমবে না। একমাত্র আশার আলো হল ভ্যাক্সিন। যা এখনো ইউকে/ রাশিয়া/ চায়না ফলাও করে শুরু করতে পারেনি, আমরা পেতে কতোদিন সেটা তো অজানাই!

অতএব, বাইরে যান, দোকানে যান, বাজারে যান, পাব্লিক ট্রান্সপোর্ট এ চড়েন কোন আপত্তি নেই। শুধু মাস্ক টা দিয়ে নাক, মুখ ঢেকে রাখুন। চোখে একটা গ্লাস ব্যবহার করুন। বাসায় ফিরে হাত ভাল ভাবে সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। খুব কঠিন কাজ না এইসব।

যে সব রোগী এখন হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে, এদের বেশিরভাগই শরীর হঠাৎ খারাপ হয়ে যাচ্ছে। দ্রুত অক্সিজেন কমে যাচ্ছে এবং আইসিইউ’র শরণাপন্ন হতে হচ্ছে। এমন কি ফুসফুস জোড়াও পুরোটা খেয়ে ফেলেছে কোভিড, অথচ রোগীর উপসর্গ তখনো সিটি ফাইন্ডিংসের সাথে মিল পাওয়া যায় নি।

তবে এই মৃদু উপসর্গ যুক্ত রোগীর সংখ্যা এখনো ৮০% এর উপরে, যাদের হাসপাতালে দেখা পাওয়া যায়নি। কিন্তু এদের সংস্পর্শ থেকেই হয়তো বাকি ২০% এর কেউ খারাপ হয়ে ভর্তি হচ্ছে হাসপাতালে। অতএব সাবধানতার কোনো বিকল্প নেই। তাই আসুন সবাই মাস্ক পরিধান করি এবং বাসায় ফিরে হাত ধোয়াকে আমরা অভ্যাসে পরিণত করি। তাহলে করোনাকে আপনি আপনার পাশে বসিয়ে রেখে নিশ্চিন্তে যেতে পারবেন বহুদূর। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ঝুঁকি থেকে বাংলাদেশ রেহাই পাবে এ আশা করাই যায়।

Nusrat Jahan Kheyam

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কাউন্সেলিং টেবিলের গল্প || পর্ব-৭

Mon Aug 31 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ৩১ শে আগস্ট, ২০২০, সোমবার অধ্যাপক ডা. সানজিদা শাহরিয়া চিকিৎসক, কাউন্সিলর ফিনিক্স ওয়েলনেস সেন্টার বাংলাদেশ “জানেন আমার নিজের মা বলে আমারই দোষ, আমি ওকে বেঁধে রাখতে পারি নাই। মেয়েদের বেঁধে রাখতে পারাটা নাকি শিখতে হয়, আমার সেই শিক্ষা নাই।” মেয়েটি একটা প্রথম শ্রেণীর বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছে- যার আন্তর্জাতিক […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo