ইন্টার্ন এর সময়ে যা করা উচিত

নতুন যারা পাশ করে ইন্টার্ণ শুরু করতে যাচ্ছো তাদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা:
১।যে যে সাবজেক্টেই ক্যারিয়ার করতে চাওনা কেনো ইন্টার্ণ এর সময় সব কটা বিভাগই তোমার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।ব্যাপারটা মাথায় গেথে নাও।কারণ তুমি স্পেশালিস্ট হবে খুব কম করে হলেও ১০ বছর পর।এই ১০ বছর কিন্তু তুমি এমবিবিএস।তোমাকে যেকোন রোগী প্রাইমারী ম্যানেজমেন্ট দেয়ার স্কিল থাকা আবশ্যিক।সরকারী চাকরী করো আর বেসরকারী, এই মিনিমাম স্কিল তোমার থাকতেই হবে।
২।মেডিসিন বিভাগে ইন্টার্ণ করার সময় চেষ্টা করো তোমার লেভেলের রোগগুলো ডায়াগনোসিস করতে।সিএ এর সাথে লেগে থাকো,এক্সামিনেশনগুলো মাঝে মাঝে করো।জটিল রোগগুলো না পারলেও এজমা আর হার্ট ফেইলিউর এর পার্থক্য বুঝতে না পারলে সেটা হবে খুবই দু:খ জনক।
সম্ভব হলে দু পাচটা প্লুরাল,পেরিটোনিয়াল ফ্লুইড এসপিরেশন,দু চারটা লাম্বার পাংচার,টেনশন নিউমোথোরাক্সে ওয়াইড বোর নিডল প্রবেশ করানো অবশ্যই শিখে নেয়ার চেষ্টা করবে।থানা লেভেলে যখন কাজ করবে তখন এই সামান্য স্কিলগুলো তোমাদের কত সাহায্য করবে এবং এগুলো দিয়ে কত ম্যাজিক দেখাতে পারবে সেটা তখনি বুঝতে পারবে।

Using modern wireless technology to their advantage
Using modern wireless technology to their advantage

৩।সিসিইউ তে প্লেসমেন্টের সময় সারাক্ষণ ইসিজি দেখে ইনারপ্রিট করার চেষ্টা করবে।সিএ এর সাহায্য নিবে,তাকে কে বলবে ইসিজির ক্লাশ নিতে।শিখতে চাইলে সসবাই তোমাকে হেল্প করবে।দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য ৮০ ভাগের বেশী ডাক্তার ইসিজি খুব ভালো বোঝেনা।অন্য প্লেসমেন্টের সময় সন্ধার পর বা অবসর সময়ে সিসিইউ তে ঘুরাঘুরি করবে।হ্যামপ্টন ও আব্দুল্লাহ স্যারের বইটা বার বার দেখবে ও ওয়ার্ডের ইসিজির সাথে মিলাবে।কতটা উপকৃত হবে পরে বুঝবে।
৩।সার্জারি ওয়ার্ড চলাকালীন মিডিসিনে যারা ক্যারিয়ার করতে চাও তারা আরো বেশী মনোযোগী থাকবে।কারণ ইন্টার্ণ এর পর সার্জারী তোমাকে আর কেউ শেখাবেনা কোনদিন,অথচ খ্যাপ বা চাকরী যাই বলো সার্জারীর কাজ জানাটাই তোমার আয়ের উৎস হিসেবে সাহায্য করবে।ওটি এসিস্ট্যান্সি করতে যেয়ে নিজের ও মেডিকেলের মানসম্মান নিয়ে টানাটানিতে পড়তে দেখেছি অনেককে।সো যতটা সম্ভব বেসিক এসিস্ট্যান্সি টুকু শেখার চেষ্টা করবে।নিজের ডিউটি সময়ের বাইরের সময়েও ওটিতে সিএ এর সাথে থাকার চেষ্টা করবে।সুতরাং মেডিসিনে ক্যারিয়ার করবে বলে সার্জারিকে অবহেলা করার কোন অবকাশ নেই।
৪।গাইনী ওয়ার্ড নিয়ে ছেলেরা খুব অনীহা দেখায়।মনে রেখ যখন উপজেলায় কাজ করবে বা জিপি করবে তোমাকে গাইনী রোগীই বেশী ম্যানেজ করতে হবে।সিজার এসিস্ট,নরমাল ডেলিভারী করা জানা থাকাটা ডাক্তার হিসিবে তোমার অবশ্য কর্তব্য।এছাড়া পিপিএইচ,একলামশিয়া এগুলো ম্যানেজ করা জানাটাও জরুরী।
৫।সম্ভব হলে ইন্ট্রা আর্টিকুলার ইঞ্জেকশন দেয়া,ব্যাক স্লাব,কিছু প্লাস্টার করা,আল্ট্রাসনোগ্রাম এগুলো নিজ ইচ্ছায় যদি শিখতে পারো তোমার জিপি প্রাকটিসের সময় সেটা তোমাকে অনেক সাহায্য করবে।
ইন্টার্ণ শেষ করার পর যে বিষয়ে ক্যারিয়ার করতে চাও সে সেটাতে বা সেটার মাদার সাবজেক্টে ১ বছর (তার বেশী নয়।প্রথম ছয় মাস নিজ মেডিকেলে হকে ভালো হয়)অনারারী ট্রেনিং করে রাখবে।পার্ট ওয়ান জরুরী কিন্তু ট্রেনিং টাও জরুরী।কারণ বিসিএস হয়ে গেলে তুমি যখন গ্রামে যাবে তখন নিজের ডিসিপ্লিনের রোগী ম্যানেজে সাধারণ একজনের বা অন্য ডিসিপ্লিনের একজনের চেয়ে দক্ষতার পরিচয় দিতে না পারলে হীনমন্যতায় ভুগবে।তাছাড়া পার্ট ওয়ান আজ বা কাল তোমার হবে,কিন্তু সময় বসে থাকবেনা।সেক্ষেত্রে পার্ট ওয়ান তিন বা চার বারে পাশ করলেও যে প্রথম বারে পাশ করবে তার থেকে তুমি পিছিয়ে পড়বেনা।
এসময় যে বিভাগে ইন্টার্ন করবে সে বিষয়ের বইটা একটু উল্টে দেখবে।যে রোগটা ম্যানেজ করলে ওয়ার্ডে সেটা রাতে ঘুমানোর আগে একটু দেখে নিলে।ইন্টার্ণের সময় অনেকে পোস্ট গ্রাজুয়েশনের পড়াশোনা করে থাকে।সেটা করতে পারো,কিন্তু সেটা এই সময়ে খুব জরুরী নয়।এই এক বছর স্কিল ডেভেলপমেন্টে বেশী নজর দেয়াই উচিৎ।এরপর তুমি পারলে পোস্ট গ্রাজুয়েশনের জন্য পড়তে পারো।
সবশেষে সবাই ভালো ক্লিনিশিয়ান হিসেবে ইন্টার্ণ শেষ করবে,এই প্রত্যাশা করছি।ইন্টার্ণ লাইফে এক বছর শেখা ও মজা করার সময়।শেখা,আড্ডার কেন্দ্রবিন্দু করে তোল নিজের ইউনিটকে।ভালো থেকো সবাই।
লিখেছেন –
Mahadi Hassan Biplob
পরিমার্জনায় – মারেফুল ইসলাম মাহী

Ishrat Jahan Mouri

Institution : University dental college Working as feature writer bdnews24.com Memeber at DOridro charity foundation

Next Post

ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজ ক্রিকেট প্রিমিয়ার লীগ (UDCCPL)

Thu May 21 , 2015
এলজিনেটের সেটিং টাইম আর এনাটমির হাড্ডি-ভিসেরা যখন পড়তে পড়তে ফার্স্ট ইয়ার ক্লান্ত, পাবলিক হেলথের সংজ্ঞা আর ফার্মার ড্রাগগুলোর নাম মুখস্থ করতে করতে যখন নিজের নামটাই ভোলার দশা, আইটেম দিতে গিয়ে cyst এর সংজ্ঞার উত্তর ভুলে গিয়ে fistula এর সংজ্ঞা বলে যখন পেণ্ডিং খেয়ে অস্থির জীবন, R.C.T এর স্টেপ মুখস্থ করতে […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo