রিসার্চের হাতেখড়ি ও পিএইচডি এর পথে যাত্রা (পর্ব ২)

[১ম পর্ব পড়ুন এখানে – https://www.platform-med.org/রিসার্চের-হাতেখড়ি-ও-পিএ/amp/ ]

● বিদেশে মাস্টার্স:
বিদেশে বিভিন্ন বায়োমেডিক্যাল সাব্জেক্টে মাস্টার্স করা যায়, যার বেশির ভাগই সেলফ ফান্ডেড। ইউরোপের বিভিন্ন দেশে ৬ লাখ থেকে ২০ লাখ পর্যন্ত টিউশন ফি দিয়ে মাস্টার্স করা যায়। জিআরই দিয়ে আমেরিকা ও কানাডায় মাস্টার্স করা সম্ভব। স্কলারশিপ মাস্টার্সের ক্ষেত্রে খুব কমই হয়ে থাকে। তবে বিদেশে মাস্টার্স করলে ভালো পিএইচডি ল্যাব ম্যানেজ করা যায় অনায়াশেই।

● আর্টিকেল লেখার উপকারিতা:
দেখা যায় বেশির ভাগ পিএইচডি কিংবা মাস্টার্সের এডমিশন ফর্মে লেখা থাকে রিসার্চ আর্টিকেলের নাম দিতে। পিএইচডির ক্ষেত্রে প্রফেসর খুঁজে পেতেও রিসার্চ আর্টিকেল পূর্বশর্ত। বলা যায় পূর্বেকার রিসার্চ আর্টিকেল না থাকলে পিএইচডির পথ অনেকটাই দুরূহ হয়ে উঠে।

আর্টিকেল নিয়ে পড়াশোনা:
আগের পর্বেও বলা হয়েছে, বাছাইকৃত টপিক নিয়ে প্রথমেই বিস্তর পড়াশুনা করতে হবে। একই বিষয় নিয়ে আগে করা কমপক্ষে ২০/২৫ টা আর্টিকেল পড়তে হবে। এগুলো থেকে প্রাপ্ত আইডিয়াই নতুন রিভিউ পেপার এর মূল উপাত্ত।
পাবমেড (https://www.ncbi.nlm.nih.gov/pubmed/) হলো দুনিয়ার সেরা সাইট যেকোন মানসম্পন্ন আর্টিকেল পড়ার জন্য। এছাড়াও সাইন্স ডিরেক্ট (https://sciencedirect.com) খুবই মানসম্পন্ন সাইট। পেইড আর্টিকেলও বিনে পয়সায় পড়তে পারেন এ ঠিকানায় http://sci-hub.tw । এ সাইটে গিয়ে DOI নাম্বার দিলেই পাওয়া যাবে কাঙ্ক্ষিত আর্টিকেল। প্রতিটা আর্টিকেল এর মধ্যেই তার DOI (Digital Object Identifier) নাম্বার লেখা থাকে।

● আর্টিকেল লেখা:
প্রথমেই এ বিশাল কর্মযজ্ঞে একা নামা যাবে না। সমমনা ৩/৪ জনের একটা টিম করতে হবে।
রিভিউ আর্টিকেল গুলোর প্যাটার্ন ফলো করে নিজের রিভিউ আর্টিকেল লিখতে হয়।

পেপার সাবমিশন:
কাঙ্ক্ষিত জার্নালের সাইটে গিয়ে ফর্ম পূরণ করে পেপার সাবমিট করতে হবে। পেপার যদি রিভিউয়ার এর ভালো লাগে, তাহলে তারা এর নানা দুর্বলতা তুলে ধরবে এবং সেগুলো কাটিয়ে উঠার পরামর্শ দিবে এবং আরেকবার সাবমিট করতে বলবে। যদি পছন্দ না হয়, রিজেক্ট। মোটামুটি ১০/১২ জায়গা থেকে রিজেক্টেড হওয়াটা খুবই সাধারণ বিষয়।
পেপার সাবমিশনের পরে যদি এক্সেপ্টেড হয়, তাহলে বেশ বড় একটা এমাউন্ট জমা দিতে হবে। এ ফি ১০ হাজার থেকে ৫ লাখ পর্যন্ত হতে পারে।

আর্টিকেল পাবলিকেশন:
এটা একদিন দুদিনের কাজ নয়। প্রথম রিভিউ পাবলিশ হতে ৬ মাস থেকে ১ বছর সময় লেগে যেতে পারে। কিন্তু কোনোভাবেই ধৈর্য্য কিংবা আশা হারানো যাবে না। প্রথম পাবলিকেশনের জন্য মোটামুটি মানের জার্নাল টার্গেট করাই ভালো।

ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর:
কোন পেপারের ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর হলো সে পেপার কতটা মূল্যবান তা। এটি আসে সাইটেশন এর উপর ভিত্তি করে। কোনো পেপারকে রেফারেন্স হিসাবে ব্যবহার করার নামই সাইটেশন। যার সাইটেশন যত বেশি, তার ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর তত বেশি। যেমন নিউ ইংল্যান্ড জার্নালের ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর ৭০ এর মত। তবে ২ ইম্প্যাক্ট ফ্যাক্টর এর উপরের সব জার্নালই মানসম্পন্ন বলা যায়।

প্রফেসর, ফান্ডিং ইত্যাদি সম্পর্কে জানতে সঙ্গে থাকুন। ফিরে আসবো ৩য় পর্বে।

লেখক:

 

Sharif Qadri
PHD Research Fellow
Aichi Medical University

প্ল্যাটফর্ম ফিচার রাইটার:
সামিউন ফাতীহা
শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ
সেশন: ২০১৬-১৭

One thought on “রিসার্চের হাতেখড়ি ও পিএইচডি এর পথে যাত্রা (পর্ব ২)

  1. তৃতীয় পর্ব কেন প্রকাশ হল না ? 🙁
    খুবই আগ্রহউদ্দীপক লেখা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

'একজন প্রকৃত চিকিৎসকের উচিৎ রোগ নয়, রোগীর চিকিৎসা করা' - হিপোক্রেটস

Sat Jul 28 , 2018
চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্র হয়ে আমাদের সবার জানা আছে যে চিকিৎসা বিজ্ঞানের জনক বলা হয়ে থাকে হিপোক্রেটসকে। যে সময়ে তাঁর জন্ম হয়েছিলো (৪৬০ খ্রিষ্টপূর্ব) সে সময় চিকিৎসা বিজ্ঞান কুহেলিকায় ঢাকা ছিলো। শুধুমাত্র কুসংস্কার আর বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের মধ্যেই চিকিৎসকদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ ছিলো। প্রাচীন গ্রীসে চিকিৎসার দেবতা ছিলেন অ্যাপোলো। তার হাতে একটি দন্ড […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo