ডায়াবেটিক রোগীদের হজ পালনের সময় করণীয়

প্রতি বছর অনেক ডায়াবেটিস রোগীরা হজের এর সময় ঠিক বুঝতে পারে না কিভাবে চলবেন, সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখবেন, তাদের অনেক প্রশ্ন থাকে।
মসজিদ যেহেতু তাদের বাসস্থান থেকে দুরে থাকে তাই জামাতে নামাজ পড়তে বেশ হেঁটে আসতে হয় ।পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ে, অতিরিক্ত হেঁটে আসাতে, আবার তাওয়াফে বেশ ব্যায়াম হয়। তাই কিছু রোগীর সুগার কমে যেতে পারে ।
১। ইনসুলিন বিভিন্ন সময় কাজ করে। আপনি যখন premixed insulin (mixtard 30/70, Humulin 70/30 ) দুইবেলা নিচ্ছেন, তার মানে দুপুরে খাওয়ার ইনসুলিন আপনি সকালে পেয়ে গেছেন, আর তাই দুপুরে খেতে দেরী হলে সুগার কমে যাবে। so be careful about this , have extra food before johur prayer. সুগার যাতে না কমে দুপুরে নামাজের আগে তাই কিছু খেয়ে নিবেন।
মিনায় অবস্থান কালে খাবার একটু সমস্যা হয়, তাই ইনসুলিন বুঝে শুনে , দরকারে ডোজে একটু কমিয়ে নিতে হবে।
২। সাথে খেজুর রাখবেন, প্রচুর পানি খাবেন, জমজম পানি খাবেন, but no juice or any sweet drinks. কোনো মিষ্টি পানি, শরবত খাওয়া যাবে না ।
৩। অবশ্যই সাথে glucometer নিয়ে যাবেন ।
অনেকে ভাবেন, আল্লাহর ঘরে আসছি , বেশি খাই কিছু হবে না। এটা ভুল ধারণা। সব মানুষ যেমন দেখতে এক না , সেরকম সবার শরীরে সমান ইনসুলিন থাকে না । একজনের কম ইনসুলিন ডোজে , অথবা অল্প মুখের ঔষধে যদি সুগার নিয়ন্ত্রণে থাকে, তার মানে এই না যে আপনার ও থাকবে। it depends on your insulin reserve. আপনার ইনসুলিন তৈরী করার ক্ষমতা কমে গেলে অল্প খাবারেই সুগার বেড়ে যাবে । আপনি কত ডোজে ইনসুলিন নিচ্ছেন, সেটা ব্যাপার না , সুগার সকাল, দুপুর, রাতে খাওয়ার আগে 6/7 mmol /l আর সকাল, দুপুর, রাতে খাওয়ার 2 ঘন্টা পর 9/10 mmol/l আছে কিনা ?
কোনো কোনো রোগীরা হজের আগে , আবার ইনসুলিন বন্ধ করে দেন , মুখে ঔষধ শুরু করেন , মনে রাখতে হবে , কোনো ঔষধ ইনসুলিন তৈরী করে না , যদি জমা থাকে তাহলে বের করে, অনেক টা লেবু চেপে রস বের করার মত।
আর তাই অনেক বছরের ডায়াবেটিস , ইনসুলিন ও নিচ্ছেন, কিন্তু এখন ইনসুলিন বন্ধ করে দিয়েছেন , দেখা যায় তারা এত অসুস্থ হয়, হাসপাতালে ভর্তি না করে উপায় থাকে না, এবাদাত আর হয় না।
অনেকে ভাবে যেহেতু freeze নাই, তার মানে ইনসুলিন নষ্ট হয়ে যাবে, so better not to use insulin. ধারনাটা বিরাট ভুল । যে ইনসুলিন ব্যবহার করছেন, তা সরাসরি রোদ , অথবা গরম পরিবেশে না রাখলেই হয়, কিন্তু একমাস পর ইনসুলিন শিশিতে বাকী থাকলে ও , পুরানো টা ফেলে নতুন ইনসুলিন ব্যবহার করতে হবে । কিন্তু freeze এ থাকলে আপনি একমাস পর ও use করতে পারবেন । হজের সময় অতিরিক্ত ইনসুলিন নিয়ে যাবেন।
আরেকটা যেটা খেয়াল রাখতে হবে, খুব important, পায়ের যত্ন। অনেকের পায়ের অনুভূতি কমে যায়, ঘা অথবা ফোসকা পড়ে যায়, তাই মানুষের ভিড় থেকে দুরে থাকার চেষ্টা করবেন। এমন সময়, এমন ভাবে তাওয়াফে যাবেন, যাতে পায়ে চাপা না পড়ে, গরমে খালি পায়ে সাবধান ।
সবশেষে আপনার physician এর সাথে কথা বলে , emergency কিছু medicine নিয়ে যাবেন ।
আল্লাহ আমাদের হজ কবুল করুন, ক্ষমা করুন। সুস্থ ,নিরাপদ, সুখী জীবন দান করুন। আমীন ।
লিখেছেন:
ডা. ফিরোজ আমিন
সহযোগী অধ্যাপক, বারডেম।

ফয়সাল আবদুল্লাহ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

নামমাত্র খরচে, শতভাগ সফলতার সাথে, দেশেই হচ্ছে বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট

Thu Jul 12 , 2018
বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট – ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ২০১৪ সালের ১০ ই মার্চ বাংলাদেশের চিকিৎসা সেবায় এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়। দেশের প্রথম, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চালু হয় বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন। এ পর্যন্ত ৩৫ জনের সফল অটোলোগাস বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হয়েছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন চিকিৎসা […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo