কোভিড ১৯: চট্টগ্রামে হাসপাতালে রোগী কমছে

প্ল্যাটফর্ম নিউজ, ১৬ আগস্ট, ২০২০, রবিবার
পবিত্র ইদ উল আজহা পরবর্তী সময়ে চট্টগ্রামের জনগণের মাঝে কমে গেছে করোনা নিয়ে দুশ্চিন্তা। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে উদাসীনতা বেড়েছে। একই সাথে ইদ পরবর্তী সময়ে বেড়েছে আক্রান্তের সংখ্যা।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রিপোর্ট অনুযায়ী, গত ২ আগস্ট থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত চট্টগ্রামে কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়েছেন ১২৯৫ জন এবং মৃতের সংখ্যা ১৮।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম জেলার সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন,

“স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার উপর করোনা পরিস্থিতি নির্ভর করছে। পবিত্র ইদ উল আজহার সময় মানুষ বাড়িতে গেছে, আত্মীয় স্বজনের সাথে ইদ পালন করেছে। সেই হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে রোগী বাড়তে পারে। ইদের সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পরবর্তী ১৪ দিনে রোগী বাড়ার আশঙ্কা করছিলাম আগেই। এ কয়দিনের স্বস্তির ভাব আর থাকবে না। এছাড়াও দ্বিতীয় ওয়েভ আসবে – কেউ বলছেন সেপ্টেম্বরে, কেউ বা আরো পরে। মনে রাখতে হবে, চিকিৎসার চেয়ে সচেতনতা বেশি জরুরি। আমাদের বর্তমান চিকিৎসা কাঠামোতে সেবা দেওয়া নাহয় কঠিন হবে। স্বাস্থ্য বিভাগ শুরু থেকেই জনসচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ করে যাচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে জনসচেতনতা নিশ্চিত করতে হবে জনপ্রতিনিধি, পুলিশ, গণমাধ্যমকর্মী সবাইকে মিলেই। সবাই কাজ করছে, এখন করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।”

আগস্টের প্রথম সপ্তাহে হাসপাতালে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সম্পর্কে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কর্মরত চিকিৎসক ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদি প্ল্যাটফর্ম নিউজকে জানান,

“রোগী তেমন বাড়ে নি, তবে কিছু বলার আগে আমরা দুই সপ্তাহ পর পর্যন্ত অপেক্ষা করবো। ইদের আগে দিনে চার/পাঁচ জন পজিটিভ রোগী ভর্তি হতো, কখনও তার চেয়ে কম। গত কয়দিন প্রায় একই রকম ছিল। কিন্তু গত ৯ আগস্ট আট জন পজিটিভ আর কয়েকজন সাস্পেক্টেড রোগী ভর্তি হয়েছিল। আরো এক সপ্তাহ গেলে ভাল বোঝা যাবে অবস্থা। জুন মাসে সবচেয়ে বেশি ছিল রোগী, এরপর থেকে কমছে।”

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের গত ১৫ তারিখ (শনিবার) ইয়েলো জোনে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল ৫৮ জন। সেদিন সকালে ভর্তি হয়েছেন ১২ জন, মারা যান ৩ জন। মৃতরা আগে থেকে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। একই দিনে রেড জোনে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ৩৬। রেড জোনের দায়িত্বরত একজন চিকিৎসক বলেন,

“ইদের পর থেকে ১০ তারিখ পর্যন্ত রেড জোনে ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা ছিল ৫০ থেকে ৫৫ জন, যা বর্তমানে কমে গিয়ে ৩০-৩৬ জনে এসে দাঁড়িয়েছে।”

এদিকে গত জুন মাসের তুলনায় রোগীর সংখ্যা খুব বেশি না কমলেও কিছুটা কমেছে বলে জানান চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আজমাইন মাহতাব
চট্টগ্রাম মা-শিশু ও জেনারেল হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে রোগীর সংখ্যা গত ১০ আগস্ট প্রি আইসোলেশন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে ছিল মোট ৩৯ জন, কেবিন ব্লকে ২০ জন। ১৫ আগস্ট রোগীর সংখ্যা প্রি আইসোলেশন ও আইসোলেশন ওয়ার্ডে মোট ৩৭, কেবিন ব্লকে ২০।

বিআইটিআইডি তে কর্মরত একজন চিকিৎসক জানান,

“আমার কর্মস্থলে রোগী বাড়েনি। এখন সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে আসছে, তাই মানুষের চলাচল, হাসপাতালে আসাও বেড়েছে, যার মাঝে নন কোভিড বেশি।”

টেস্টের পরিমাণ সম্পর্কে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,

“টেস্টসংখ্যা কমেছে। তবে সংক্রমণ এখনও ততটা (গত জুন মাসের তুলনায়) বাড়ে নি।”

চট্টগ্রামে টেস্টের পরিমাণ কমলেও, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে ইদ পরবর্তী সময়ে বেড়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। চিকিৎসা সচেতনতার কারণে আগের মত কোভিড পজিটিভ হলেই হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা কমেছে। বাসায় আইসোলেশনে সুস্থ হচ্ছেন বেশিরভাগ রোগী। একই সাথে, নমুনা পরীক্ষা হয়নি কিন্তু কোভিড-১৯ উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে প্রতিদিন। শুধুমাত্র কোভিড উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুবরণ করা মানুষের সংখ্যা নিয়ে নির্দিষ্ট কোনো কর্তৃপক্ষের পরিসংখ্যান নেই। সমাজ সচেতন, চিকিৎসা সংশ্লিষ্ট অনেকেই মনে করেন সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এখন সময়ের দাবি।

Subha Jamil Subah

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: আরো ৩২ জনের মৃত্যু, নতুন শনাক্ত ২০২৪ জন

Sun Aug 16 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০২০ গত ২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এ নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন ২,০২৪ জন, মৃত্যুবরণ করেছেন আরো ৩২ জন এবং আরোগ্য লাভ করেছেন ১,৩১৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত রোগী ২,৭৬,৫৪৯ জন, মোট মৃতের সংখ্যা ৩,৬৫৭ জন এবং সুস্থ হয়েছেন মোট ১,৫৮,৯৫০ জন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের […]

ব্রেকিং নিউজ

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo