করোনা যুদ্ধের একদল বীর নারী যোদ্ধাদের গল্প

প্ল্যাটফর্ম নিউজ,
বুধবার, ২২শে এপ্রিল, ২০২০ খ্রিস্টাব্দ

লেখা:ডা. তাবলু আবদুল হানিফ
অধ্যাপক, পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগ
ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল

ভাইরোলজি ডিপার্টমেন্ট, ঢাকা মেডিকেল কলেজ।

করোনা যুদ্ধে এই বীর নারী করোনা যোদ্ধাদের সম্মান জানাই ও পরিচিত হই। তারা খাল কেটে কুমির না এনে মানুষের জীবন বাঁচানোর উদ্দেশ্যে সংক্রমণ রোধ করা অথবা কমানোর জন্য সহকর্মী চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্হ্য কর্মীরা সেবা দিতে গিয়ে যাতে ঝুঁকিতে না পরে সেজন্য ছুটি বা আরাম বাদ দিয়ে শুধু কাজ করে যাচ্ছেন।

সেদিন আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নারায়গঞ্জের ব্রিফিং এ দেখলাম করোনা ভাইরাস শণাক্তকরণের জন্য পিসিআর ল্যাব স্হাপনের জটিলতা।

এই জটিল কাজটিকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করে সহজ করে এপ্রিল মাসের ২ তারিখ থেকে শত শত রুগীর সেবা দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা মেডিকেল কলেজের ছোট্ট এই বিভাগটি – মাত্র একজন অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক, ৪ জন সহকারী অধ্যাপক, ৪ জন লেকচারার আর ২ জন ল্যাব টেকনিশিয়ান নিয়ে।

প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত কাজ করে যাচ্ছেন এনারা। সবার বাসায়ই ছোট বাচ্চা, বয়স্ক মা বাবা আছেন।

যখন থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্হা বলা শুরু করেছে করোনা ভাইরাস শনাক্তে টেস্ট, আইসোলেশন, কন্ট্রোল এবং মিনিমাইজ স্প্রেড। মেডিসিন সোসাইটিও ঢাকা মেডিকেলে টেস্ট দাবী করলো তারও আগে থেকে গত আগস্টে পাওয়া পিসিআর মেশিনটি চালানোর জন্য সারাদেশ থেকে আসা রুগীদের সংক্রমণ যাতে দ্রত শনাক্ত করা যায় এবং আইসোলেশনের মাধ্যমে যাতে সেবাদানকারী ও অন্য রুগীরা নিরাপদ থাকে সেজন্য আমাদের একাদশ ব্যাচের সহযোগী অধ্যাপক ডা.মনিরা পারভিন তাঁর বিভাগের অধ্যাপক সুলতানা শাহানা বানুসহ সবাইকে নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিলেন।

এক সামান্য অটোক্লেভ মেশিনের জন্যই নাকি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ১০ বার চিঠি দিয়েছেন।
পরবর্তীতে মাননীয় অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. খান আবুল কালাম আজাদ, উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. শফিকুল চৌধুরী শামিম ও সর্বাপরি পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নাসির উদ্দীনের সহযোগিতায় ও বিভাগের সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টায় দেশের ৩য় ল্যাব হিসাবে তারা দেশবাসীকে এই সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এবং সারাদেশ থেকে বিভিন্ন জটিলতায় আগত রুগীদের মধ্যে এবং সেবাদানকারীদের মধ্যে যাতে না ছড়ায় তার জন্য নিজেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে স্যাম্পল সংগ্রহ করে দ্রুত ফলাফল দিচ্ছেন। যা আইসোলেটেড রুগীদেরও সঠিক চিকিৎসা প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
আমাদের ভাইরোলজির অধ্যাপক ডা. বানু, একাদশ ব্যাচের সহকর্মী ছোটবোন ডা. মুনিরা, ডা. শারমিন, ডা. আফরোজা, ডা. তানিমা, প্রতিবাদীকন্ঠ ডিএমসির কে৫১ ছাত্রী ডা. লীমাসহ সকলকে অনেক অভিনন্দন।

একই সাথে মেডিসিন বিভাগ, আইসিইউ, এমার্জেন্সি, ওপিডি, সার্জারী, গাইনীসহ সারাদেশে যারা সেবা দিচ্ছে তাদের জন্যও অনেক ভালোবাসা, যে ছাত্রী টেকনাফে সেবা দিচ্ছে, যে ছাত্র পঞ্চগড়ে, গোপালগঞ্জে সেবা দিচ্ছে তাদের জন্য যেমন ভালবাসা, একই সাথে সেবাদানকারী সকল সংস্হা আর্মি, পুলিশ, আনসার, ওয়াসা, বিদ্যুৎ, সিটি কর্পোরেশন, ব্যাংকসহ সকলের জন্য ভালবাসা, কৃতজ্ঞতা।
পরম করুণাময় সবার মঙ্গল করুন, সুস্থ রাখুন।

অনুলিখন: তাসনিম সানজানা কবির খান

হৃদিতা রোশনী

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

কোভিড-১৯: সবচেয়ে বেশি করোনায় আক্রান্ত রোগী ঢাকা শহরে, শনাক্ত হয়েছে হাজারেরও বেশি

Wed Apr 22 , 2020
প্ল্যাটফর্ম নিউজ, মঙ্গলবার, ২১ এপ্রিল, ২০২০­ দিনদিন দেশের বিভিন্ন জেলায় করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। নতুন নতুন জেলায় মিলছে করোনা রোগীর সন্ধান। করোনার ছোবলে আক্রান্ত সমগ্র বাংলাদেশ! দেশে সবচেয়ে বেশি করোনা শনাক্ত হয়েছে ঢাকা মহানগরীতে। জাতীয় রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের (IEDCR) তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সোমবার (২০ এপ্রিল) […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo