আসন্ন শীতকাল এবং একটি মিস্টি নামের ভয়ংকর ব্যধি

লেখকঃ Selim Shahed

দক্ষিন আফ্রিকা জুড়ে ইবোলা ভাইরাসের এপিডেমিকস আর দুনিয়া জুড়ে চলছে ‘এপিডেমিকস অফ ফিয়ার’।এই বৈশ্বিক গ্রামের যুগে ভয়ের প্রাদুর্ভাব অমূ্লক নয়।অন্ধকার আফ্রিকা আর অন্ধকার নয়।গহীন জংগলের বুশ-মিট ভাইরাস দাপিয়ে বেড়াচ্ছে আমেরিকার পানশালা,লন্ডনের পাব,বিবিসি,আল-জাজিরার নিউজপ্রেজেন্টারের গোল টেবিল,গ্রাম বাংলার টি-স্টল।এমন কী ফুটবল খেলার মাঠও বাদ যায়নি।ফ্রান্সের এক সময়কার ডাক-সাইটে প্লেয়ার মিশেল প্লাতিনি বাগড়া দিচ্ছেন আফ্রিকাতে যাতে আফ্রিকা নেশন কাপ না হয়।হালের জমানায় ‘রোগ’ এখন আর শুধু ডাক্তার,নার্স আর রোগ-তত্ত্ববিদদের বিষয় না।
এর সাথে আমোদ প্রমোদ,খেলা-ধূলা,অর্থনী্তি,সমাজনীতি,রাজনীতি সব নীতি এবং নীতিবিদ জড়িত।সেনেগালে গিনির আলু রপ্তানী বন্ধ ইবোলার কারনে।

যে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাচ্ছি সেটা আসলে ইবোলা নয়।ওর নাম ‘নিপা’।আমার ধারনা ছিল ভাইরাসটি কারো নামে নাম করা হয়েছে।‘নিপা’ বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত ফ্যামিলিতে খুবই জনপ্রিয় নাম।পাঁচ বোনের এক বোনের নাম ‘নিপা’ মাস্ট।
বাংলাদেশ যত না ইবোলা ভাইরাসের থ্রেটে আছে তারচে কয়েক গুন বেশী রয়েছে ‘নিপাহ’ ভাইরাসের থ্রেটে।
থুক্কু থ্রেটে কী?
ও তো কাছা বেঁধে বাদুড়ের শরীরে যত রকম রস হতে পারে তার প্রত্যেকটাতেই আছে।বাদুড় ঝোলা ঝুলছে গাছে গাছে।
ডুবে ডুবে মানুষ খেয়েই চলছে।
প্রতি বছরই কোন না কোন নতুন জেলায় দেখা যাচ্ছে এ ভাইরাসের সংক্রমন।
নওগাঁ,মেহেরপুর,ফরিদপুর,টাংগাইল,কুস্টিয়া!কোথায় নেই মায়াবী নিপার মরন-জাল!বাংলাদেশে আজতক প্রায় সাতটি আউটব্রেক হয়েছে নিপাহ ভাইরাসের।
ইবোলা আক্রান্ত প্রতি একশো জনে যত জন মারা যায় তারচে কোন অংশে কম মারা যায় না নিপাহ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী।প্রতি একশো জনে মৃত্যুর হার(৬৭-৯২%)।ইবোলাতে (৭০-৯০%) ।
এ ভাইরাসে আক্রান্ত নার্স বেঁচে গেলেও একজন ডাক্তার কিন্তু প্রান হারিয়েছেন।ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজের একজন ইন্টার্ন।ফার্স্ট লাইন ফ্রন্টিয়ার ইন মেডিক্যাল কলেজ।চিকিৎসা দিতে গিয়ে চিকিৎসকের মৃত্যু এখবরের মধ্যে কোন মাদকতা নেই তাই এখবর কোন দিন সংবাদপত্রের হেড লাইনে আসবে না,আসবে ভুল চিকিৎসায় চিকিৎসকের মৃত্যু।

মালেয়শিয়ার একটি গ্রামের নাম ‘নিপাহ’।সেখান থেকেই নামটি এসেছে।ভাইরাসের স্থানিক নাম এভাবেই হয়ে থাকে।সামনে শীত সমাগত।বাংলাদেশ রয়েছে আরেকটি নিপাহ ভাইরাসের আউটব্রেকের ঝুঁকিতে।আক্রান্ত হতে পারেন যে কেউই।আর চিকিৎসক নার্সরা থাকবেন সবচাইতে ঝুঁকিতে।তাই ইবোলা ভাইরাস চিন্তা করার আগে আমাদের দশবার চিন্তা করা উচিৎ নিপাহ ভাইরাসের কথা।কারন এ ভাইরাস মহোদয় বর্তমানে বাংলাদেশেই অবস্থান করছেন।হাতের কাছে থাকতে মানিক রইলা যে কাংগাল…

কাঁচা খেজুরের রস খাওয়া যাবে না।পাকাটা খাওয়া যাবে!মানে খেজুরের রসে রান্না করা পায়েস খাওয়া যাবে।মাইনাস ৫০ ডিগ্রীর নীচে ভাইরাস বাঁচতে পারলেও প্লাস ৭০ ডিগ্রী সেলসিয়াসের বেশী তাপমাত্রায় বাচঁতে পারে না।আর আমরা যারা কাঁচা খেজুরের রস খাইনা তারা কী সম্পূর্ন ঝুঁকি মুক্ত? কোনো ভাবেই না।অধূ্মপায়ীরাও ধূ্মপায়ী।প্যাসিভ।তাইতো বলে সৎ সংগে স্বর্গবাস অসৎ সংগে সর্বনাশ।নিপাহ আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে এ রোগ হতে পারে।

-কীরে কী হইছে?
-সকাল থেইক্কা জ্বর,মাথাব্যথা।
-নাপা খাইছস?
-হুম!সারতাছে না।
-দুইডা কইরা খা।কাইল দেখবি বালা অইয়া যাইবো!
সকালেদরজায় ঠক ঠক…
-কুদ্দুস অই কুদ্দুস,দরজা খোল।খাওজুরের রস খাবি না?
দরজা আর খোলে না।বিছানায় কুদ্দুসের অজ্ঞান,অচেতন দেহ পরে আছে।
-কই গেলা সব!দেহ, আমারার কুদ্দুসের শইল ক্যামনে ঝিক মারতাছে!
জ্বরে শইল পুইড়া যাইতাছে।

10368238_971231239557545_2218070865004904232_n 10606280_971228076224528_2301499584532092103_n

ট্রিটমেন্ট
মৃত্যুর জন্য অপেক্ষা করা
সম্ভাবনা (মৃতুর ৭০-৯০ ভাগ)
বেঁচে উঠার?
হিসেব করে নেন!
সিম্পটমেটিক চিকিৎসা তো দিতেই হবে।
সবাই ভালো থাকুন

ডক্টরস ডেস্ক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

একটি প্রফ এবং I Quit বনাম I Fight এর গল্প

Tue Oct 28 , 2014
লেখকঃ Rubaiya Haque Ruba ফাইনাল প্রফের রেজাল্টের পরে আমার সব বন্ধুরা যখন স্টার্টেড ওয়ার্কিং এজ এ ইন্টার্নি ডক্টর স্ট্যাটাস দিচ্ছে আমি তখন সাপ্লি খেয়ে ফেসবুক,হোয়াটস্যাপ এমনকি মোবাইলটাও অফ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে কাদতেছি।কিন্তু বেশীক্ষন না,খুব তাড়াতাড়ি সাপ্লির ডেট দিয়ে দিলো।তাই চোখ মুছে বই খাতা নিয়ে বসে গেলাম।অন্য কোনো দিকে তাকাইনি।দিন […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo