বুধবার, ১৪ মে, ২০২৫
সহকারী অধ্যাপক পদে সুপারনিউমারারি পদোন্নতির হালনাগাদ তালিকায় অন্তর্ভুক্তির পরেও ৩৩তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারের প্রায় ৫শ চিকিৎসককে বাদ দেওয়ার অভিযোগ একাংশের। ঘোষিত সুপারনিউমারারি পদোন্নতিতে তাদের অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে পদোন্নতির ফিটলিস্টে থাকা ৩৩তম বিসিএসের স্বাস্থ্য ক্যাডারের একাংশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে চক্ষুরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. তানজিন হুদা বলেন, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী গত বছর ২৭ অক্টোবরের মধ্যে পদোন্নতি যোগ্য চিকিৎসকদের অনলাইনে হিউম্যান রিসোর্স ইনফরমেশন সিস্টেমে (এইচআরআইএস) তথ্য হালনাগাদ করতে বলা হয়। পরবর্তীতে এইচআরআইএসের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ডিসেম্বরে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের ফিটলিস্ট প্রকাশ করা হয়। যোগ্য চিকিৎসকদের মোট সংখ্যার উপর ভিত্তি করে সাড়ে ৭ হাজার সুপারনিউমারারি পদ সৃজনের মাধ্যমে পদোন্নতির আশ্বাস দেয়া হয়। ৩টি ধাপে ফিটলিস্টে অন্তর্ভুক্ত ৩৩ বিসিএস পর্যন্ত পদোন্নতি যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নাম সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানোও হয়। কিন্তু ফিটলিস্ট থেকে ৩৩ বিসিএসের পদোন্নতি যোগ্য প্রায় ৫শ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত করা হচ্ছে। অথচ যোগ্যদের সংখ্যা বিবেচনা করেই সুপার নিউমারারির সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন বৈষম্যের স্বীকার করা হচ্ছে ৩৩ বিসিএসের কিছু চিকিৎসক। অন্যান্য ক্যাডারে সুপারনিউমারারি পদোন্নতি হয়ে থাকে ব্যাচ ভিত্তিক। চাকুরির এগারো বছর প্রান্তিক পর্যায়ে সেবা দেওয়ার পরও ৩৩ তম বিসিএসের একাংশ পদোন্নতি না পাওয়ায় হতাশ ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। ৩৩ বিসিএসের সবাইকে পদোন্নতি দিলে সরকারের আর্থিক কোনো ক্ষতি হচ্ছেনা বরং জনগণ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসাসেবার সুযোগ পাবেন এবং শিক্ষক হিসেবে ভবিষ্যৎ চিকিৎসক গড়ার কারিগর হিসেবে ভূমিকা রাখতে পারবেন।’
তিনি বলেন, ‘একদিকে যেমন আমাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, অন্যদিকে তথ্য হালনাগাদের আবেদনের সবশেষ সময় গত ২৭ অক্টোবর শেষ হলেও অনেকে অনিয়ম করে চলতি বছরের জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি এমনকি মার্চ মাসেও তথ্য হালনাগাদ করে পদোন্নতির জন্য সুপারিশকৃত হয়েছে। অথচ আবেদনের সময়ে তারা যোগ্য ছিলেন না। এছাড়া ২ ধাপে সহযোগী অধ্যাপক পদে এক হাজার ৩৯৮ জনকে সুপার নিউমারারি পদোন্নতির সুপারিশ করা হয়েছে। ফলে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে ৩৩ বিসিএসের মাত্র ৫০০ জনকে পদোন্নতি দিলে শূন্য পদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি হয়।’
ডা. তানজিন হুদা আরও বলেন, ‘দেশের ২৬টি বিসিএস ক্যাডারে কর্মরত সরকারি কর্মকর্তাদের কাজের দক্ষতা ও চাকুরির বয়সসীমা বৃদ্ধির সাথে পদোন্নতি প্রদান করা হয়। তবে পদোন্নতি যোগ্য কর্মকর্তার তুলনায় যদি শূন্যপদ কম থাকে তবে বিভিন্ন ক্যাডারে সুপারনিউমারারী পদ সৃজন করা হয়। কিন্তু স্বাস্থ্য ক্যাডারে পদোন্নতির সকল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকগণের অনেকেরই মেডিকেল অফিসার হিসেবে কেটে যায় চাকুরীজীবন।দীর্ঘদিন পদোন্নতি বঞ্চিত ও সহকারী অধ্যাপকের ফিটলিস্টে যোগ্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে প্রথমবারের মতো হতে যাওয়া সুপারনিউমারারি পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত করে বৈষম্যের শিকার না করার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ৩৩ বিসিএসে পদোন্নতি বঞ্চিত ডা. আহমেদ হোসাইন সিদ্দিকী, ডা. আল মামুন ও ডা. মশিউর রহমান ও প্রান্তিক পর্যায় থেকে আগত ৩৩ তম বিসিএস এর সহকারী অধ্যাপক পদোন্নতিতে বৈষম্যের শিকার বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকবৃন্দ।
প্ল্যাটফর্ম/এমইউএএস