পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ

Peripheral Vascular Disease:

হাঁটা চলার সময় ষাটোর্ধ্ব  বয়স্ক মানুষদের কিছুজনের ক্ষেত্রে  পায়ে ব্যাথা শুরু হয়ে যায়, আবার অনেকের পায়ের মাংসপেশি সমূহ শক্ত হয়ে যায়, মনে হয়, হাঁটুর নিচের দিকের মাংশপেশি  খুব শক্ত হয়ে আছে,  ঝিমঝিমানি অনুভব হয়,,  আবার অনেকে চলার পথে এই রকম মাংসপেশি শক্ত হবার কারনে হাঁটা বন্দ করে কয়েক মিনিট বিশ্রাম  নিতে হয়,  তারপর ব্যাথা কমে যায়,  এবং  হাঁটতে পারে, আবার অনেকের কিছুক্ষন  শুয়ে থাকলে  এমন সমস্যাগুলি দেখা দেয়,,,   মনে হয় পায়ের গোড়ালি থেকে উপরের দিকে শক্ত হয়ে আসছে,,,  এবং একরকম অস্বাভাবিকতা মনে হয়, এইগুলির কারন কি?

এই সমস্যা গুলির মুলত কয়েকটি কারণ রয়েছে..

১। পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ :

Athersclerotic disorder এর কারনে পায়ের শিরা সমূহে চর্বি কিংবা কোলেস্টেরল  জমে ভেসেল সমূহ কে সংকুচিত করে পেলে,  তাই রক্ত চলাচলে বাঁধা প্রাপ্ত হয়,,  আর যখন রক্ত চলাচলে বাঁধা প্রাপ্ত হয়,  তখন পায়ের মাংসপেশি সমূহ স্বাভাবিক কাজ করার মত নিউট্রিশন পায়না, তাই ঝিমঝিমানি কিংবা ব্যাথা হতে পারে।।।
Atherosclerotc রোগ  এর কারণ:

  ক. ধুমপান।
খ. অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার।
গ.  মদ্যপান।
ঘ. অবেসিটি কিংবা অতিরিক্ত ওজন।
ঙ.ডায়াবেটিস।

৬০ বছর বয়সের ধুমপায়ী পুরুষদের জন্য এইটা এক
ভয়াবহ প্রকট আকার ধারণ করে। কারণ বয়স বাড়ার সাথে সাথে  রক্তনালীর টিস্যু সমূহের ইলাস্টিক কার্যক্রম কিছুটা হ্রাস পায়,

উপরে উল্লেখিত অনুরুপে পায়ে ব্যাথার অন্যান্য   কারণ সমুহ

২.  Deep vain thrombosis :  এই রোগের মধ্যেও ধুমপান ও অতিরিক্ত চর্বি ভক্ষন দায়ী।

৩. peripheral Neurpathy :
যাদের ডায়াবেটিস আছে,  তাদের  ক্ষেত্রে Nerve conducting slow হবার কারণে পায়ে ব্যাথা কিংবা ঝিমঝিমানি হতে পারে।

যখন এইভাবে পায়ে ব্যাথা দেখবেন, তখন এইটাকে সহজ ভাবে না দেখে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।। কারন যদি এই সমস্যা পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজের কারনে হয়ে থাকে, তাহলে যখন আর্টারি পরিপূর্ণ ব্লক হয়ে যাবে,, তখন তা থেকে  পরে Gangrane গ্যাংগ্রেন হয়ে যেতে পারে,  গ্যাংগ্রেন হচ্ছে টিস্যু সমূহে পঁচন ধরা, যা কখনোই কোন চিকিৎসা দিয়ে ভালো করা যায়না।।

অর্থাৎ রক্তনালী সংকুচিত হবার কারণে পায়ের টিস্যু সমূহে প্রথমে রক্ত চলাচল কমে যাবে, এবং ঝিমঝিমানি এবং ব্যাথা অনুভব হবে, যখন রক্তনালী প্রায় ৮০% ব্লক হয়ে যাবে, তখন চলা ফেরা করতে অনেক কষ্ট হবে, পায়ে সারাক্ষন ব্যাথা অনুভব হবে,
পা ফেটে যাচ্ছে ফেটে যাচ্ছে অনুভব হবে,, কোন ব্যাথার ঔষধ কোন কাজ করবেনা,   ৮০% ব্লক হবার পরেও যদি ধুমপান কিংবা চর্বি জাতিয় জিনিষ খেতে থাকে,  তাহলে রক্তনালী ব্লকের পরিমান বাড়তে থাকবে,  এবং পায়ে রক্ত চলাচল না থাকার কারনে পায়ের কালার পরিবর্তন হতে থাকবে,, পা ঠান্ডা হয়ে যাবে, ,  যখন ১০০% ব্লক হয়ে যাবে,  তখন ৬ ঘন্টার মধ্যে পায়ে পঁচন শুরু হবে,   আর পঁচন শুরু হলে আর কোন চিকিৎসা নাই,  একমাত্র amputation তথা পা কাটা ব্যাতীত কোন অপশন তখন থাকেনা।।

যেভাবে বুঝবেন :
১. পা ঠান্ডা থাকবে,
২. কিছুক্ষন হাঁটলে ব্যাথা হবে,
৩. ব্যাথানাশক কোন মেডিসিন  খেলেও ব্যাথা যাবেনা
৪. পায়ের কালার নীল হয়ে যেতে পারে
৫. কিছুক্ষন হাঁটলে ঝিমঝিমানি হতে পারে

সাইন:
Lower limb. এর  pulse সমূহের ভলিউম কমে যাবে,
অথবা পালস পাওয়া যাবেনা।।।

ইনভেস্টিগেশন: লিপিড প্রোফাইল এবং Duplex  scanning of lower limb. CT Angiogram etc.

ম্যানেজমেন্ট :
যদি উপসর্গ শুধুমাত্র   intermittent claudication হয়,  অর্থাৎ হাঁটার সময় যদি পায়ের মাংসপেশি তে
ব্যাথা করে, এবং বিশ্রাম নিলে যদি ব্যাথা চলে যায়, তবে এই অবস্থাকে intermittent claudication বলে।

যাদের শুধু মাত্র হাঁটার সময় ব্যাথা অনুভব হয়,
তারা নিজেদের এই অবস্থা reverse করা সম্ভব,
পরিপূর্ণ Reverse করা না গেলেও মোটামুটি নিয়ন্ত্রনে  রাখা সম্ভব ,  IHD patient কে যেমন নিয়ন্ত্রনে  রাখা যায়, ঠিক তেমন লিম্ব ইশকেমিয়া হলেও তা  কন্ট্রোলে রাখা যায়।।

Reverse করার জন্য কিংবা সুস্থ থাকার জন্য যা করতে হবে।

১। ধুমপান পরিপূর্ণ ভাবে পরিহার:
ধুমপান বন্ধ করলেই ৩০% রিস্ক কমে যাবে,
ব্লকেজের পরিমান ও কমতে থাকবে, Macrophage activated হয়ে অনেক lipid cell engulf করে Atheroma ছোট করবে,  co-lateral circulation improve করবে,  রক্ত চলাচল দ্রুত হবে।
ধীরে ধীরে রিভার্স হবে।।

২। fat কিংবা চর্বি জাতীয়  খাবার পরিহার করবে।

৩। সপ্তাহে ৩ দিন ভালভাবে ব্যায়াম করবে।।

৪। Vasodilator medicine Cilostazol 100 mg
ধারাবাহিক খেতে থাকবে।

৫। যাতে  কখনো plaque rupture হয়ে প্ল্যাটিলেট aggreagation এর মাধ্যমে রক্তা জমাট বেধে আর্টারি ব্লক করতে না পারে,  তাই Anti-Platele clopidogrel  75 mg চলতে থাকবে

৬। LDL  or Cholesterol কমানোর জন্য Statine গ্রুপের মেডিসিন  Atorvastatin ইত্যাদি  চলবে।।।

৭। Vasoconstriction কমাতে ক্যালসিয়াম চ্যানেল
ব্লকার  দিবে।

৮। peripheral Neuropathy prevent করতে
Vit: B1+B6+B12  চলবে।।

৯। আর যতদ্রুত সম্ভব,  Angioplasty করে stent করে নিবে।।।

১০। যদি ক্রিটিক্যাল লিম্ব ইশকেমিয়া দেখা দেয়, তথা
শোয়া  কিংবা বিশ্রাম অবস্থায় ও যদি ব্যাথা করে,
এবং পা সব সময় ঠান্ডা থাকে,  তখন এই অবস্থাকে ক্রিটিক্যাল লিম্ব ইশকেমিয়া বলে, যখন ক্রিটিক্যাল লিম্ব ইশকেমিয়া দেখা দিবে,  তখন যত দ্রুত সম্ভব,, Angioplasty করে  stent কিংবা রিং  লাগিয়ে  নিবে।।

ক্রিটিক্যাল লিম্ব ইশকেমিয়াতে যদি হঠাৎ পায়ের কালার পরিবর্তন হতে থাকে, কিংবা পা নীল রং ধারন করে, এবং যদি পা শুকিয়ে ঠান্ডা হয়ে যায়, তখন বুঝতে হবে যে, অবস্থা গ্যাংগ্রেন  এর দিকে চলে যাচ্ছে,  তখন স্কিনের মধ্যে কোনো ক্ষত দেখা যাক কিংবা না যাক, যত দ্রুত সম্ভব ভাস্কুলার সার্জনের কাছে নিয়ে যাবে,  গ্যাংগ্রেন শুরু হলে ৬ ঘন্টার মধ্যে যদি ভাস্কুলার সার্জনের কাছে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করা না যায়, তাহলে অবশ্যই পা কেটে ফেলতে হবে।।

১১। প্রচুর পরিমান শাকসবজি ও ফলমূল খাবে।

১২। ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশন থাকলে তা
নিয়ন্ত্রনে  রাখবে।।

১৩। চিন্তামুক্ত হাঁসিখুশী থাকার চেষ্টা করবে।।

এতে করে পেরিফেরাল ভাস্কুলার ডিজিজ থেকে সুরক্ষিত থাকবে।

মূল লেখক

Ismail Azhari

DCMC:13-14

plaform feature writer
Sumaiya Nargis
Session :2016/17

Special Correspondent

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Time limit is exhausted. Please reload the CAPTCHA.

Next Post

সাসপেক্টেট ডেঙ্গু সিনড্রোমে প্রাণ হারালেন আরো এক চিকিৎসক

Sat Aug 3 , 2019
ডেঙ্গু সিনড্রোম (সাসপেক্টেট) এ আক্রান্ত হয়ে আজ শনিবার (০৩ আগষ্ট, ২০১৯) মারা গিয়েছেন ডা. মো. রাশেদুজ্জামান রিন্টু। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন । ডা. রাশেদুজ্জামান রিন্টু রাজশাহী মেডিকেল কলেজের ৩৩তম এমবিবিএস এর ছাত্র ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ী পোড়াদহ, থাকতেন কুষ্টিয়া আদ-দ্বীন হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায়। ডা. রাশেদুজ্জামান রিন্টু সিএলডি (ক্রোনিক […]

Platform of Medical & Dental Society

Platform is a non-profit voluntary group of Bangladeshi doctors, medical and dental students, working to preserve doctors right and help them about career and other sectors by bringing out the positives, prospects & opportunities regarding health sector. It is a voluntary effort to build a positive Bangladesh by improving our health sector and motivating the doctors through positive thinking and doing. Platform started its journey on September 26, 2013.

Organization portfolio:
Click here for details
Platform Logo